দুর্গাপুরের ঘটনায় শোরগোল, হোমের শিশু ও মাকে মিনিবাসে উঠতে না দেওয়ার অভিযোগ, ক্ষমা চাইলো প্রশাসন ও মিনিবাস মালিক সংগঠন
বেঙ্গল মিরর, দুর্গাপুর, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ* হোমের বিশেষ ভাবে চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও তার মাকে মিনিবাসে উঠতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠলো। এই ঘটনায় ইস্পাত নগরী দুর্গাপুরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। গোটা বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ায় পরিস্থিতি সামলাতে হোম কতৃপক্ষ ও শিশুর মায়ের কাছে ক্ষমা চাইলো মহকুমা প্রশাসন। একইভাবে ক্ষমা চাইতে হলো ঐ মিনিবাসের মালিক ও দুর্গাপুরের মিনিবাস সংগঠনকে। প্রশাসনের তরফে হোম কতৃপক্ষ ও হোমে আসা শিশুর অভিভাবকদের আশ্বাস দিয়ে বলা হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।




পাশাপাশি, বলা হয়েছে একটা ব্যবস্থা করা হবে।জানা গেছে, দুর্গাপুরের দয়ানন্দ এলাকার একটি বেসরকারি হোমে পড়াশুনা করে পানাগড়ের বিশেষভাবে চাহিদা সম্পন্ন শিশু। সোমবার সেই বিশেষভাবে চাহিদা সম্পন্ন শিশুকে নিয়ে মা পানাগড়ে দাঁড়িয়েছিলেন বাস ধরে হোমে আসার জন্য। তখনই একটি মিনিবাস ঐ মহিলাকে দেখে সেখানে থামে। কিন্তু বিশেষভাবে চাহিদা সম্পন্ন শিশু সহ তার মাকে বাসে উঠতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তারপরেই বিশেষভাবে চাহিদা সম্পন্ন শিশুকে নিয়ে মা সমস্যায় পড়েন।
পরে কোন রকমে অন্য গাড়িতে করে দুর্গাপুরের দয়ানন্দের হোমে আসেন তিনি । গোটা বিষয়টি হোমের আধিকারিকদের জানানো হয়। এই ঘটনা জানাজানি হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় গর্জে উঠেন ইস্পাত নগরীর বুদ্ধিজীবী মহল। অভিযোগ যায় দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের কাছে। গোটা বিষয়টি জানানো হয় রাজ্যের পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে মহকুমা শাসক। ঐ মিনিবাসের কর্মীরা দুর্ব্যবহার করেছেন ঐ বিশেষভাবে চাহিদা সম্পন্ন বা সক্ষম শিশুর মায়ের সঙ্গে বলে প্রশাসনের আধিকারিকরা জানতে পারেন । কেন দুর্ব্যবহার করা হয়েছে ঐ মহিলার সাথে মিনিবাস সংগঠনের কাছে জানতে চায় মহকুমা প্রশাসন ? গোটা ঘটনায় নিজেদের ভুল স্বীকার করে নেয় মিনিবার সংগঠন।
বুধবার দুপুরে দুর্গাপুর আঞ্চলিক পরিবহন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বা এআরটিও দেবাশীষ ঘোষ ও পশ্চিম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় মিনিবাস মালিক এবং সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে হোমে পৌঁছান। বিশেষভাবে সক্ষম শিশুর মা ও হোমের আধিকারিকদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চান তারা।এই প্রসঙ্গে, এআরটিও বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, তা একেবারেই ঠিক হয়নি। যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার দিকে নজর রাখা হবে। মিনিবাস মালিকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, আমরা ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। মন্ত্রী জানার পরে, তিনি লজ্জিত হয়েছেন। যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে তা দেখা হবে। আগামী সাতদিনের মধ্যে একটা স্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে হোমের শিশু ও তাদের অভিভাবকদের জন্য।