আসানসোলে ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই পাল্টা মিছিল ও সভা, ২৬ নির্বাচনে পশ্চিম বর্ধমানে ৯ – ৯ করার চ্যালেঞ্জ তৃনমুল জেলা নেতৃত্বের
বেঙ্গল মিরর, আহসান, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ* ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ দিবস উপলক্ষে হওয়া আসানসোলে হওয়া রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাল্টা মিছিল ও সভা করা হলো। রবিবার বিকেলে সেই সভা থেকে বিজেপি তথা শুভেন্দু অধিকারীকে তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব ২০২৬ বিধান সভা নির্বাচনে পশ্চিম বর্ধমানে ৯ – ৯ করার চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে এদিন পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃনমুল কংগ্রেস ও যুব কংগ্রেসের ডাকে এদিন এই মিছিল ও সভার ডাক দেওয়া হয়।




শুক্রবার আসানসোল শহরের জিটি রোডের যে রুটে অর্থাৎ পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড় থেকে শুভেন্দু অধিকারী মিছিল করেছিলেন, এদিন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ ঠিক সেখান থেকেই তৃনমুল কংগ্রেসের মিছিল শুরু হয়। আসানসোল বাজার হয়ে গীর্জা মোড়ে সেই মিছিল শেষ হয়। বিজেপির মতো সেখানেই শাসক দলের সভার জন্য মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিলো। মিছিল ও সভায় রাজ্যের দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক ( আইন ও শ্রম) ও প্রদীপ মজুমদারের( সমবায় ও গ্রামোন্নয়ন) পাশাপাশি পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা পান্ডবেশ্বরের নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন ওরফে দাসু, জেলা চেয়ারম্যান তথা জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়, রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র তথা আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি ( আসানসোল) অভিজিৎ ঘটক, পুর চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও সব শাখা সংগঠনের সভাপতি, সভানেত্রী সহ তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শাসক দলের মন্ত্রী ও নেতারা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তোলেন। দুই মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণ সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ যেভাবে এগিয়ে চলেছে, তা বিজেপির জন্য সমস্যা তৈরি করছে। এই কারণেই বিজেপি ক্রমাগত পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে। বাংলার বিজেপি নেতারাও পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে সহায়তা করছেন।
তারা বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টানা তিনবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। ২০২১ সালের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ২১৩টি আসন পেয়েছিল। তারা আত্মবিশ্বাসী যে ২০২৬ সালের নির্বাচনে তৃণমূল ২৯৪টি আসনের মধ্যে কমপক্ষে ২৭০টি আসন পাবে। এর একমাত্র কারণ হলো, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে রাজ্যের উন্নয়ন করেছেন তা সকলের সামনে।সভায় জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, পশ্চিম বর্ধমানের ৯ টি আসনে জিতে ৯-৯ করবো। ৯ এ জয় হবে। দুদিন আগে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলে গেছেন, আমাদের কত টাকা আছে। তাকে বলতে হবে না। আসানসোল ও জেলার মানুষেরা জানেন, আমাদের কি আছে। তার পরামর্শ, আগে, নিজের দলের সংগঠন তৈরি করুন। বুথে এজেন্ট দেওয়ার মতো লোক তৈরি করুন। রাজ্যের মানুষ আবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করবেন।
রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন ওরফে দাসু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে বলেন, এখন যিনি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হয়েছেন, কিন্তু তিনি বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর থেকে, বিজেপি এখানে একটিও নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারেনি। তা সে বিধানসভা হোক বা লোকসভা, এমনকি পঞ্চায়েত এবং পুর নির্বাচনেও, বিজেপিকে পরাজয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তিনি ও তার পরিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লালিত পালিত হয়েছিলেন।