RANIGANJ-JAMURIA

জামুড়িয়া শিল্প তালুকে চাঞ্চল্য, বেসরকারি কারখানায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে বাধার মুখে আসানসোল পুরনিগমের দল

বেঙ্গল মিরর, জামুড়িয়া ও আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ আসানসোল পুরনিগমের দল শুক্রবার জামুরিয়া ইকরা শিল্প তালুক এলাকায় একটি বেসরকারি কারখানায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হলো। পুরনিগমের দলকে কারখানায় ঢোকার মুখে বাধা দেওয়া হয়। আসানসোল পুরনিগমের এই দলের সঙ্গে জামুরিয়া থানার পুলিশ এবং দমকল বাহিনীর আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ১ ঘন্টা ধরে কারখানা কতৃপক্ষের সাথে তর্ক-বিতর্ক হয়। তারপরেই পুরনিগমের দল কারখানায় ঢুকতে পারে।

এই প্রসঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের আইনী উপদেষ্টা রবিউল ইসলাম বলেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুসারে, আসানসোল পুরনিগমের কোথাও অবৈধ নির্মাণ বরদাস্ত করা হবে না। বিভিন্ন শিল্প এলাকায় দেখা যাচ্ছে যে আসানসোল পুরনিগমের থেকে কারখানার জন্য নেওয়া নির্মাণ অনুমতির চেয়ে বেশি জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে। অথবা এমন কিছু নির্মাণ করা হচ্ছে যা শ্রমিকদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। পুরনিগম কতৃপক্ষ গত দুই বছর ধরে এই ধরণের কারখানা মালিকদের ক্রমাগত নোটিশ দিয়ে আসছে। এটাও বলা হচ্ছে যে কারখানা কতৃপক্ষ জরিমানা দিলে তাদের নির্মাণ নিয়মিত করা হবে। কিন্তু কারখানা কতৃপক্ষের তরফে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় এখন আসানসোল পুরনিগম এই অভিযান চালাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আসানসোল পুরনিগমের একটি দল, পুলিশ এবং দমকল বিভাগ এই কারখানায় আসে। এখানে কিছু অবৈধ নির্মাণ দেখা যায়। গোটা বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হয়। প্রথমে আমাদেরকে কারখানায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষ ও কর্মীরা তাদের ভুল বুঝতে পেরে আসানসোল পুরনিগমের দলকে কারখানায় ঢুকতে দেয়।

রবিউল ইসলাম আরো বলেন, আসানসোল পুরনিগম চায় না যে কোন কারখানার মালিক কোথাও কোন সমস্যার সম্মুখীন হন। রাজ্য সরকারের মতো আসানসোল পুরনিগম চায় যে এই এলাকায় শিল্পায়ন আরো এগিয়ে যাক। তবে এখানে যে শিল্প স্থাপন করা হচ্ছে তা আসানসোল পুরনিগমের নিয়ম মেনে করতে হবে। বেআইনি নির্মাণের জন্য কারখানার উপর জরিমানা করা হয়েছে। এদিন কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে জরিমানার অর্থ জমা দেওয়া হয়েছে। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে কত টাকা দেওয়া হয়েছে তা প্রকাশ করেননি রবিউল ইসলাম।

তিনি স্পষ্টভাবে বলেন যে আসানসোল পুরনিগম কোনও নির্মাণ ভেঙে ফেলতে চায় না। তবে এটাও সত্যি যে কারখানার মালিকদেরকে পুরনিগমের নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে এই প্রসঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, এটা খুবই আশ্চর্যের বিষয় যে, যেসব কারখানার মালিকদের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা জরিমানা পাওনা ছিল, তাদের কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা নেওয়ার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। জিতেন্দ্র তিওয়ারি আরো বলেন, ১০০ কোটি টাকার উপর এক মাসের সুদ ১০ লক্ষ টাকা। গত দু/তিন বছরের সুদ যোগ করলে তা প্রায় ৩ কোটি টাকা হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে, ১০০ কোটি টাকা জরিমানা পাওনা কারখানার মালিকদের ২০ লক্ষ টাকা নেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ দরিদ্র মানুষদেরকে এক পয়সাও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।

জিতেন্দ্র তিওয়ারি ব্যঙ্গাত্মকভাবে বলেন, আসানসোলের মানুষ বোকা নয়। তারা সবকিছু দেখছে এবং বুঝতে পারছে কেন এটি করা হচ্ছে। তার দাবি, আসানসোলের মানুষও সঠিক সময়ে এর জবাব দেবে। এই নিয়ে ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হক বলেন, আসানসোল পুরনিগম অবশ্যই শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করছে। তবে এটাও জরুরি যে যেসব শিল্প ও কারখানা করা হয়েছে বা হচ্ছে সেগুলোকে আইন মেনে চলতে হবে। যারা তা করছে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আসানসোল পুরনিগম পুরবাসীদেরকে সময় দেওয়ার পক্ষে। এই দেরী কেবল মাত্র সময় দেওয়ার জন্যই হচ্ছে। বিজেপি যেকোন অভিযোগ করতে পারে। কিন্তু বাংলা এবং আসানসোলে বিজেপি শূন্যে পরিণত হয়েছে। তবুও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় গণতন্ত্র আছে বলে তারাও যেকোন কথা বলতে পারছে। অন্যান্য রাজ্যে বিরোধীরা সেই সুযোগও পায় না।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *