RANIGANJ-JAMURIA

জামুড়িয়ায় অজয় নদীতে নৌকায় আটকে মাঝি সহ ১৬ জন, পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় প্রায় ৭ ঘন্টার চেষ্টায় উদ্ধার

বেঙ্গল মিরর, জামুড়িয়া, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুড়িয়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলো একটি নৌকা। এক মাঝি সহ ১৬ জন সেই নৌকাটি জামুড়িয়ায় অজয় নদীর মাঝখানে আটকে ছিলো। পশ্চিম বর্ধমান জেলা, আসানসোল মহকুমা, জামুড়িয়া ব্লক প্রশাসন, জামুড়িয়া থানার পুলিশ, রাজ্য পুলিশের সপ্তম ব্যাটেলিয়ানের উদ্ধারকারী দল, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের সদস্য ও এলাকার বাসিন্দাদের তৎপরতায় শনিবার ভোররাত তিনটে নাগাদ সেই ১৬ জনকেই মাঝ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রত্যেকেই শারীরিক ভাবে সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে। শুক্রবার রাত বারোটা থেকে এই উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছিলো আসানসোলের মহকুমাশাসক ( সদর) বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য ও জামুুড়িয়া থানার ওসি সৌমেন্দ্রনাথ সিংহ ঠাকুরের নেতৃত্বে।

শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটে। অজয় নদীর ওপারে বীরভূম জেলার নবাশোল ঘাট থেকে একটি নৌকা পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুড়িয়া থানার অন্তর্গত বাগডিয়া সিদ্দপুর এলাকায় ঘাটে আসছিলো। বীরভূম থেকে আসা ঐ যাত্রীবোঝাই নৌকাটি অজয় নদীর মাঝখানে আটকে যায়। নৌকায় ছিলেন মোট ১৫ জন যাত্রী ও ১ জন মাঝি। যাত্রীরা জামুড়িয়ায় কাজে আসছিলেন। কিন্তু যে কোন কারণে সেই নৌকা জামুড়িয়ার বাগডিহা সিদ্দপুর ঘাটে আসার আগে নদীতে আটকে পড়ে। এলাকায় বাসিন্দা প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, নদী বরাবর এগিয়ে আসার সময় নৌকাটি হঠাৎ ভারসাম্য হারায় ও নদীতে ডুবে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়। নৌকাটি নদীর মাঝে আটকে যাওয়ায়, যার ফলে বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

রাত নটা নাগাদ ঘটনার খবর পেয়ে জামুড়িয়া থানার ওসি সৌমেন্দ্রনাথ সিংহ ঠাকুর ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় তৎক্ষণাৎ উদ্ধার কাজ শুরু হয়। খবর দেওয়া হয় জেলা প্রশাসনের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের রেসকিউ টিমকে। রাত বারোটা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছান আসানসোলের মহকুমাশাসক ( সদর) বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। এরপরে নিয়ে আসা হয় রাজ্য পুলিশের সপ্তম ব্যাটেলিয়ানের উদ্ধারকারী দলকে। প্রথমে একটা স্পিড বোটকে উদ্ধারকারী দল দিয়ে মাঝ নদীতে আটকে থাকা নৌকার কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু কোন কারণে সেই বোড বিকল হয়ে যায়। তারপর আরো একটা বোড পাঠানো হয়। এরপরে একে একে মাঝি সহ ১৬ জনকে উদ্ধার করে জামুড়িয়ার দিকে নিয়ে আসা হয়। প্রায় দুঘন্টার ভোর রাত তিনটে নাগাদ নৌকায় থাকা সবাইকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। একইভাবে দাবি উঠে, অজয় নদীতে পাকা সেতু তৈরির।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বৃষ্টির কারণে অজয় নদীর জলস্তর বেড়ে যায়। তাই যে কোন সময় এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যদিন নৌকা ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার জন্য একটি স্থায়ী সেতু তৈরি করা হোক।


এই প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক ( সদর) বলেন, নৌকা থাকা সবাই ভোর রাত তিনটের মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। সবাই সুস্থ আছেন। তাদেরকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা সবাই বীরভূমের বাসিন্দা। কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি সম্পর্কে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন গোটা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *