ASANSOL

আসানসোলে সিবিআইয়ের অভিযান, মানব পাচারের অভিযোগে দম্পতি গ্রেফতার, চাঞ্চল্য

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ আসানসোলের রেলপার হাজিনগর এলাকায় সিবিআইয়ের একটি দল রবিবার তল্লাশি অভিযানে আসে। যা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।জানা গেছে, আধিকারিক মুকেশ কুমারের নেতৃত্বে চার সদস্যের সিবিআইয়ের একটি দল, সিআরপিএফ জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে হাজিনগরের একটি বাড়িতে অভিযান চালায়। সেই বাড়ির বাসিন্দা রানি খাতুন ও মহঃ বিলাল নামে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়।

অভিযোগ, এই দম্পতি এলাকার বিভিন্ন অংশে গরিব মেয়েদের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের বিক্রি করে দিত। এর পেছনে বড় একটা চক্র রয়েছে। ঘটনার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালে বর্ধমানে একটি বিয়ে হয়েছিলো। রেলপারের একটি মেয়েকে সেখানে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, বিয়ের মাত্র দু/তিন দিনের মধ্যে তাকে অন্য একজনের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেই মেয়ে কোনোক্রমে পালিয়ে রায়না থানায় আসে ও অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কোন পদক্ষেপ না হওয়ায় তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানান। আদালত বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়।

ঐ মেয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরিকল্পনা করে এই অভিযান সফল হয়।এরপরে রেলপার এলাকার বহু মানুষ আসানসোল উত্তর থানায় জড়ো হন। তাদের হারিয়ে যাওয়া মেয়েদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার আশায়। স্থানীয়দের মধ্যে এই মামলা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলেন, রেলপার এলাকায় মাদক এবং মানব পাচারের ঘটনা দ্রুত বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ধরনের অপরাধীদের খুঁজে বার করার দাবি জানিয়ে। গ্রেফতার দম্পতিকে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করা হশ। এরপরে আদালতের নির্দেশে সিবিআই তাদের হেফাজতে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

সিবিআই মনে করছে , এই চক্রটি বেশ বড়। এখনো পর্যন্ত বহু মেয়েকে বিয়ের নামে বিক্রি করা হয়েছে বলে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা মনে করছেন ।এই প্রসঙ্গে, রেলপারের ফরিদা নাজ নামে এক মহিলা একটি ঘটনার কথা বলেছেন। তার আত্মীয় নুরজাহান খাতুন, যিনি রেলপারের ওকে রোড নুরানি মসজিদ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি গত নয় বছর ধরে নিখোঁজ। অভিযোগ, তারও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এই চক্র তাকে বিক্রি করে দিয়েছে। নুরজাহানের খোঁজে বছরের পর বছর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তার কোনো সন্ধান মেলেনি। জানা গেছে, রেলপারের বালু ময়দান, মকু মুহল্লা, হাজিনগর এবং বাবুতলাও এলাকায় মানব পাচারের একটি সংগঠিত নেটওয়ার্ক বা চক্র সক্রিয় রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *