শুভেন্দু অধিকারীকে লাগামহীন আক্রমণ দেবাংশু ভট্টাচার্যের, ভোটের পর জগন্নাথ মন্দিরের বাইরে বাটি হাতে বসতে হবে
পান্ডবেশ্বরে বিরোধী দলনেতার মিছিলের জবাবে তৃণমূলের পাল্টা মিছিল
বেঙ্গল মিরর, পান্ডবেশ্বর, সার্থক কুমার দে ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বুধবার বিকেলে পান্ডবেশ্বরে মিছিল করলো তৃণমূল কংগ্রেস। পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা গোগলা অঞ্চলে প্রায় ১২ হাজার মানুষকে নিয়ে পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার পক্ষ থেকে পানসিউলি স্কুল মোড় থেকে মান্দারমনি কোলিয়ারি পর্যন্ত এই মিছিলটি হয়।
মিছিল শেষে একটা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে লাগামহীন আক্রমণ করেন তৃনমুল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য।



তিনি বলেন, দিদি ( মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) রান্না করছিলেন। একটা পচা আলু , একটা কানা বেগুন জানালা দিয়ে ফেলে দিলেন । দিদি তো জানতেনই না , জানালার বাইরে বাটি হাতে নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহ দাঁড়িয়ে আছেন। তারা সেগুলো লুফে নিলেন । বিজেপির দিকে তাকান। দেখবেন সব প্রাক্তন তৃণমুল। তৃণমুলের ফেলে দেওয়া ছাঁট মাল । উপর তলার বিজেপি নেতাদের দিকে তাকান সব প্রাক্তন তৃণমুল আর বিজেপি কর্মীদের দিকে তাকান , দেখবেন সিপিএমের হার্মাদদের। একসময় ওদের বাবারা সব ইনক্লাব জিন্দাবাদ বলতেন এখন জয় শ্রীরাম বলেন ।
পাল্টা সভায় তৃণমুল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য্য এভাবেই কটাক্ষ করে শুভেন্দু অধিকারী থেকে সৌমিত্র খাঁ , নিশিথ প্রামানিক , সজল ঘোষ সহ সব প্রাক্তন তৃণমূলীদের নাম করেন। বলেন, বিজেপির নিজস্ব কোন মুখ নেই। সভায় দেবাংশু নিজের স্টাইলেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে তুলোধনা করেন । বিজেপি ও শুভেন্দু অধিকারীর হিন্দুত্বকেও তিনি একহাত নিয়ে বলেন, রাজনীতির মঞ্চ মন্দির নয়। তাই রাজনীতির মঞ্চে ভগবানকে নিয়ে আসা যায় না । কিন্তু ওরা রামকে নিয়ে এত রাজনীতি করলো যে যেখানে রামমন্দির সেখানেই বিজেপি হেরে গেল ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ।
তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর রামমন্দির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, নরেন্দ্র মোদি রামকে নিয়ে ব্যবসা করেন কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা করেন না । মোদী রামকে দেখিয়ে ভোট চান। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা করেন না
দেবাংশু শুভেন্দুর ‘জয় বাংলা’ শুনলে রেগে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, বিরোধী দলনেতা জয় বাংলা শুনে খেপা ষাঁড়ের মতো তাড়া করে । ২৬ এর নির্বাচনে তৃণমুলকে ভোট দেওয়ার এবং সরকারে আনার আবেদন করে বলেন বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন তো আপনার বাংলার মাটি যাবে। সঙ্গে ঘরও যাবে । এরপরে অসমের এনআর সির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ওরা হিন্দু বোঝে না। তাহলে হিন্দুদের নাম এনআর সির ফলে বাদ যেত না।
তিনি বলেন, আরএসএস ও বিজেপির মধ্যে লড়াই লেগে গেছে । আরএসএসের নিয়ম মতো ৭৫ বছর বয়স হলেই পদে থাকা যাবে না। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পদত্যাগ করতে । তিনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ডিসেম্বরেই পড়ে যাবে বলে ভবিষ্যৎবাণীও করেন । বিহার নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিহারে হারছেন নীতিশ কুমার। ফলে বিজেপি সরকারের থেকে সমর্থন তুলে নেবে নীতিশ কুমার। তিনি এরপরেই শুভেন্দুকে কড়া ভাষায় কটাক্ষ করে বলেন, ২০২৬ সালে বাংলায় তৃণমুল কংগ্রেসের সরকারই আসছে। আর ২৯ এ বিজেপি কেন্দ্রে আসবে না। তখন বিজেপির শুভেন্দু হয়তো আবার দল বদলাবে আর কংগ্রেসে চলে যাবে। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীও রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ করেন
এদিনের মিছিল ও সভায় পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার ২ ব্লকের সভাপতি কিরিটি মুখোপাধ্যায় ও শতদ্বীপ ঘটক সহ পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার সকল নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন ।