সব স্কুলে বাংলা ভাষা পড়ানোর দাবি, প্রয়োজনে আদালতে দ্বারস্থ হবে ডব্লুবিএলএমএ জিতেন্দ্র তেওয়ারি
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ ওয়েষ্ট বেঙ্গল ল্যাঙ্গুেস্টিক মাইনোরিটি এ্যাসোসিয়েশনের ( ডব্লুবিএলএমএ) তরফে মঙ্গলবার দুপুরে আসানসোলের জিটি রোডের গোধুলি সংলগ্ন আবাসিক কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে এমন অনেক মানুষ আছেন যাদের মাতৃভাষা বাংলা নয়। কেউ হিন্দিতে, কেউ উর্দুতে, কেউ গুরুমুখীতে এবং কেউ সাঁওতালিতে কথা বলেন। এমন পরিস্থিতিতে, পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষ যদি বাংলা না জানেন, তাহলে তাদের এখানে সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে পারে। গত কয়েকদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে এমন একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে যেখানে বলা হচ্ছে যে বাংলা এবং বাংলা ভাষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।




জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, তাঁর সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনি শুরু থেকেই বলে আসছেন যে পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষাকে প্রথম অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এখানে প্রতিটি ভাষাতেই কথা বলা মানুষ আছেন। কিন্তু যেহেতু এখানে বাংলাভাষী মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই এখানে বাংলা ভাষাকে প্রথম অগ্রাধিকার দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কথা মাথায় রেখে, গত দুই বছর ধরে এই সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দাবি তোলা হচ্ছে যে এই রাজ্যের সমস্ত অবাঙালি ভাষাভাষী স্কুলে প্রাথমিক থেকে কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হোক। বাংলা ভাষায় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হোক। এর ফলে যাদের মাতৃভাষা বাংলা নয়, তারা বাংলা বলতে, লিখতে এবং পড়তে শিখতে পারবেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও ইতিবাচক উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
জিতেন্দ্র তিওয়ারি আরো বলেন, আমি আবারও এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্য সচিবকে একটি চিঠি লিখতে চলেছি। তার কাছে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্ত অবাঙালি মাধ্যম স্কুলে বাংলা ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানাবো। অন্যথায়, ১৫ সেপ্টেম্বরের পরে, এই এ্যাসোসিয়েশন আদালতের দ্বারস্থ হবে। তিনি আরো বলেন, পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১০,০০০ অবাঙালি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। যদি প্রতিটি স্কুলে দুজন করে বাঙালি শিক্ষক নিয়োগ করা হয়, তাহলে ২০,০০০ এমন যুবক চাকরি পাবেন, যাদের মাতৃভাষা বাংলা এবং যারা বাংলায় স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের এই এ্যাসোসিয়েশন ভাষাগত ভাবে সংখ্যালঘুদের সমস্যাগুলি ক্রমাগত তুলে ধরে আসছে। যার মধ্যে হিন্দি, উর্দু, সাঁওতালি, গুরুমুখীর মতো ভাষা রয়েছে। তবে বাংলা ভাষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। আমি এই দাবিকেও সমর্থন করছি। কারণ এখানকার বেশিরভাগ মানুষ বাংলা ভাষা ব্যবহার করেন এবং যারা এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তাদের জন্য বাংলা ভাষার জ্ঞান থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জিতেন্দ্র তেওয়ারি।