আসানসোলে মহালয়ার দুদিন আগে চাঞ্চল্য,মৃৎশিল্পীর স্টুডিও থেকে দুটি মা দুর্গার মুখ চুরি, অভিযুক্তকে ধরে মার
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* দুদিন পরেই মহালয়া। পিতৃপক্ষের শেষ হয়ে শুরু হবে দেবীপক্ষ। তারপর সপ্তাহ ঘুরলেই বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজো। কিন্তু সেই পুজোর আগেই মৃৎশিল্পীর স্টুডিও থেকে চুরি হয়ে গেল মা দুর্গার মুখ! একটা নয়, দুটি মা দুর্গার মুখ চুরি করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের মহিশীলা কলোনিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।জানা গেছে, দুটি দুর্গা প্রতিমার চক্ষুদান হয়ে গেছিলো।



শুক্রবার মৃৎশিল্পীর স্টুডিও থেকে দুটি প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সেই নিয়ে যাওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার রাতে দুটি মূর্তির কাঠামো থেকে ভেঙে নেওয়া হয়েছে দুটি দুর্গা প্রতিমার মুখ। আসানসোলের মহিশীলা কলোনির পালপাড়ায় মৃৎশিল্পী বাপি পালের স্টুডিও থেকে উধাও হয়েছে দুটি প্রতিমার মুখ । এদিকে চুরি যাওয়া ঐ দুটি মুখ উদ্ধার হয় বাপি পালের স্টুডিও থেকে বেশ কিছুটা দূরে থাকা অন্য এক মৃৎশিল্পী হরিরঞ্জন পালের স্টুডিও থেকে। এই চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এলাকার বাসিন্দারা ভিন রাজ্যের এক যুবককে ধরে রাস্তার পাশে খুঁটিতে বেঁধে মারধর করেন। শুক্রবার সকালে মহিশীলা কলোনির পালপাড়ায় বাপি পালের স্টুডিওর ভেতর গিয়ে দেখা যায় সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে যাওয়া দুটি প্রতিমা থেকে মা দুর্গার মুখ গায়েব। লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ এমনকী মহিষাসুরের মূর্তি এবং মুখ অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।
শুরু হয় গায়েব হয়ে যাওয়া দুটি দুর্গার মুখের খোঁজ। বেশ কিছুক্ষন পরে সেই চুরি যাওয়া মুখ দুটি উদ্ধার হয় হরিরঞ্জন পালের স্টুডিও থেকে। হরিরঞ্জন পালের কাছে কাজ করা ভিন রাজ্যের কর্মী প্রীতম ঠাকুর এই কান্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। এই প্রসঙ্গে হরিররঞ্জন পালের দাবি, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। প্রীতম ঠাকুর নামে ঐ যুবক তার কাছে দুমাস ধরে কাজ করছে। বৃহস্পতিবার সারাদিন সে উধাও ছিল।
হরিরঞ্জনের আরো দাবি, প্রীতমের আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক ধরণের ছিলো। এরপরই প্রীতমকে ধরেন এলাকার বাসিন্দারা। তাকে রাস্তার পাশে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়। তাকে মারধরও করা হয়। খবর পেয়ে এলাকায় আসে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। অভিযুক্তকে পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে যায় থানায়। সে ঝাড়খণ্ডের জসিডির বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। আরো জানা গেছে, পুলিশের কাছে সে দুটি দুর্গা প্রতিমার মুখ চুরির কথা স্বীকার করেছে।
এদিকে, এই ঘটনায় চরম বিপাকে পড়েন বাপি পাল ও তার স্ত্রী সোমা পাল। তারা বলেন, শুক্রবারই এই প্রতিমা ডেলিভারি হওয়ার কথা ছিলো। কি করবো বুঝতে পারছি না। তাদের দাবি, তাদের প্রতিমার এই মুখ কোথায়ও পাওয়া যায় না। তাই মনে হচ্ছে, কেউ বা কারা ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা চাই পুলিশ আসল অভিযুক্তকে খুঁজে বার করুক। এদিকে, পুলিশ জানায়, গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অভিযুক্তকে জেরা করা হচ্ছে।