দুর্গাপুরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভিন রাজ্যের ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণের অভিযোগ, তদন্তে পুলিশ
বেঙ্গল মিরর, দুর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* এবার দুর্গাপুর। একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভিন রাজ্যের দ্বিতীয় বর্ষের এক ডাক্তারি পড়ুয়াকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠলো। শুক্রবার রাতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইস্পাত নগরীকে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ পাওয়ার পরে দুর্গাপুরের নিউটাউন শিপ থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। খবর পেয়ে উড়িষ্যার জলেশ্বর থেকে ঐ পড়ুয়ার বাবা সহ পরিবারের সদস্য দুর্গাপুরে ছুটে আসেন। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি এই ঘটনার সঙ্গে কলকাতার আরজি করের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বাংলার আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলে দাবি করেছে।



জানা গেছে, শুক্রবার রাত প্রায় ন’টা নাগাদ দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় বর্ষের ঐ ডাক্তারি পড়ুয়া তার সহপাঠী এক ছাত্রের সঙ্গে খাবার খেতে ক্যাম্পাসের বাইরে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় পাঁচ যুবক সেখানে আসে। তারা ঐ দুজনকে আটকায়। ডাক্তারি পড়ুয়ার কাছ থেকে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় তার থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। সেই সময় পড়ুয়ার সঙ্গে থাকা তার সহপাঠী চলে যায়। এরপর ঐ পড়ুয়াকে জোর করে রাস্তা থেকে তুলে পাশের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, সেখানেই এক যুবক ধর্ষণ করে ঐ ডাক্তারি পড়ুয়াকে। পরে তরুণীর সহপাঠী সেখানে আসে ও তাকে উদ্ধার করে কলেজে নিয়ে যায়। তাকে ভর্তি করানো হয় ঐ হাসপাতালেই। হাসপাতালের তরফে গোটা ঘটনাটি নিউটাউন শিপ থানায় জানানো হয়।
নির্যাতিতার এক সহপাঠী তার বাড়িতে ফোন করে ঘটনাটি জানান। রাতেই তার পরিবারের সদস্যরা দুর্গাপুরে চলে আসেন। হাসপাতালে গিয়ে তারা মেয়ের সঙ্গে দেখা করেন। তখন পরিবারের সদস্যদের কাছে সবকিছু বলেন।নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের দাবি, যে সহপাঠী ছাত্রের সঙ্গে মেয়ে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে গেছিলো, তার ভূমিকাও খুবই সন্দেহজনক। তাদের আরো দাবি, ঘটনার সময়ে সে সহপাঠীকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে আসে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ। তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। পুলিশ জানায়, অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু করা হয়েছে। যে সহপাঠীর সঙ্গে ঐ ডাক্তারি পড়ুয়া হাসপাতালের বাইরে বেরিয়েছিলো, তাকে পুলিশ জেরা করেছে। অন্যদিকে, এদিন নির্যাতিতা বাবা বলেন, মেয়েকে দুর্গাপুরে ডাক্তারি পড়তে পাঠিয়েছিলাম। তার সঙ্গে নির্যাতনের এমন ঘটনা ঘটবে ভাবতেও পারিনি। যা পরিস্থিতি মেয়েকে আর এখানে আর পড়াবো না।
শনিবার সকালে জানা গেছে , এই ঘটনার কথা জানতে পেরে জাতীয় মহিলা কমিশন দুর্গাপুরে আসছে। তারা নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলবে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় গোটা রাজ্য জুড়ে তোলপাড় পড়েছিল। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছিলো গোটা বাংলার মানুষেরা। দুর্গাপুরের এই ঘটনা আবারও নতুন করে সেই ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।