দুর্গাপুর ধর্ষণ কাণ্ড : পুলিশ হেফাজত শেষে জেল হেফাজত, ২৪ শে টিআই প্যারেড
ধৃত চারজনকে আদালতে পেশ, জামিনের আবেদন নাকচ
বেঙ্গল মিরর, দুর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া ধর্ষণ কাণ্ডে তদন্ত চালাচ্ছে নিউটাউন শিপ থানার পুলিশ। দু’দফায় পুলিশ হেফাজত শেষ হওয়ায় বুধবার ধৃত ছজনের চারজনকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়।এদিন শেখ ফিরদৌস, অপু বাউরি, শেখ নাসিরউদ্দিন ও নির্যাতিতার সহপাঠী ওয়াসেফ আলিকে আদালতে হাজির করে পুলিস।প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার অভিযুক্ত শেখ সফিক ও শেখ রিয়াজউদ্দিনকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৮৩ নং ধারা অনুযায়ী গোপন জবানবন্দি বা স্টেটমেন্ট রেকর্ড করার জন্য দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছিল।



সেই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে বিচারক তাদের পাঁচ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।এদিন ধৃত ছ’জনের তরফে তাদের আইনজীবীরা আদালতের কাছে জামিনের আবেদন করেছিলেন। এদিন এজলাসে উপস্থিত থাকা সরকারি বিশেষ আইনজীবী ( স্পেশাল পিপি) বিভাষ দত্ত ও সরকারি আইনজীবী (পিপি) পার্থ ঘোষ আদালতে বিচারকের কাছে ৬ জনের জামিনের বিরোধী করেন। শেষ পর্যন্ত সওয়াল-জবাব শেষে এদিন পেশ করা চারজন সহ মোট ৬ জনের জামিন নাকচ করে বিচারক আগামী ২৭ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অন্য দিকে এদিন পুলিশের তরফে এই মামলার আইও বা তদন্তকারী অফিসার জেলে গিয়ে সহপাঠী ওয়াসিফ আলি বাদ দিয়ে বাকি ৫ জনের টিআই প্যারেড করানোর জন্য বিচারকের কাছে আবেদন করেন। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।
তিনি নির্দেশ দিয়ে বলেন, আগামী ২৪ জুলাই শুক্রবার এই টিআই প্যারেড করাতে হবে। সেই মতো সেদিন পুলিশ নির্যাতিতাকে জেলে নিয়ে গিয়ে ৫ জনের টিআই প্যারেড করাবে। এদিকে, এদিন এই মামলার আইওর তরফে পিপি ধৃতদের মোবাইল ফোনের ওয়াটস্ এ্যাপের চ্যাট পরীক্ষা করানোর জন্য অনুমতি চান। বিচারক, তাও মঞ্জুর করেন। জানা গেছে, আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তা করা হবে। প্রসঙ্গতঃ, ধৃতদের মোবাইল ফোন ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড়ে তদন্তকারী অফিসার ইতিমধ্যেই একাধিক ফরেনসিক ও ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। সেই সবকিছু পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এদিন সওয়াল-জবাব শেষে বিশেষ সরকারি আইনজীবী ও সরকারি আইনজীবী বিভাষ চট্টোপাধ্যায় ও পার্থ ঘোষ বলেন, এদিন চারজনকে আদালতে পেশ করা হলেও, ছজনেরই জামিনের আবেদন করা হয়েছিলো। আমরা তার বিরোধিতা করি। সেই মতো বিচারক তাদের জামিন নাকচ করেছেন।
আগামী ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের জেল হেফাজত হয়েছে। এর পাশাপাশি, টিআই প্যারেডের অনুমতি দিয়েছেন। আগামী ২৪ অক্টোবর জেলে ৫ জনের টিআই প্যারেড। বিশেষ সরকারি আইনজীবী আরো বলেন, এখনো পর্যন্ত সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে, নির্যাতিতার সহপাঠী এই ঘটনার মাস্টার মাইন্ড। যা হয়েছে, তা পূর্ব পরিকল্পিত। এখন তদন্ত চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে আসা ওয়াসিফ আলি আইনজীবী প্রজ্ঞা দীপ্ত রায়, এদিন আমার মক্কেলের জামিনের আবেদন করেছিলাম। তা নাকচ হয়েছে। আমরা আগেই বলেছি, আমার মক্কেলের সঙ্গে ঐ মেয়েটির ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো। তারমধ্যেই সেদিন একটা ঘটনা ঘটে। যাতে সে জড়িয়ে যায়। তদন্ত কি হচ্ছে, পুলিশ আদালতে কি জমা দিচ্ছে, তার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।