যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনা, গ্রেফতার প্রাক্তন বোরো চেয়ারম্যান সহ দুই
বেঙ্গল মিরর, কুলটি ও আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* আসানসোল পুরনিগমের ৬৭ নং ওয়ার্ডে কুলটি বিধানসভার লখিয়াবাদ উপর পাড়ায় মঙ্গলবার সকালে এলাকার বাসিন্দা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বোরো চেয়ারম্যান বেবি বাউরির বাড়ির বাইরের সিঁড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিলো কার্তিক বাউরির দেহ। মাত্র ৬ মাস আগে এক কোটি টাকার লটারি জিতেছিলো এই কার্তিক বাউরি। এই ঘটনাট নিয়ে সারাদিন ধরে তোলপাড় পড়ে কুলটি এলাকায়। কার্তিক বাউরির পরিবারের সদস্যরা তাকে চিকিৎসার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।













এরপর কার্তিকের পরিবারের সদস্যরা জ্যোৎস্না বাউরি, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বোরো চেয়ারম্যান বেবি বাউরি, অমরদীপ বাউরি, সন্দীপ বাউরির বিরুদ্ধে কার্তিককে খুনের অভিযোগ তোলেন। তারা বরাকর ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন।সেই অভিযোগে পরিবারের তরফে বলা হয়েছে যে কার্তিককে খুনের পেছনে এই চারজন আছে। অভিযোগপত্রে তারা আরও বলেছেন যে ঘটনার দিন কার্তিক বাউরি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলো এই বলে যে অমরদীপ বাউরি তাকে তার বাড়িতে ডেকেছে। সে আরও বলেছিল যে তার সাথে দেখা করে সরাসরি বাড়ি ফিরে আসবে। কিন্তু যখন সে অনেকক্ষণ পরেও ফিরে আসেনি, তখন তারা অমরদীপ বাউরির বাড়ির দিকে যায়।
পরিবারের সদস্যরা তাকে ফোন করার চেষ্টা করেন। তখন তারা কার্তিকের চিৎকারের শব্দ শুনতে পায়। এরপর তারা যখন অমরদীপের বাড়িতে পৌঁছান, তখন কার্তিক তার বাড়ির বাইরে দরজার সামনের সিঁড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। এরপর সেও জোরে চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকারের শব্দ শুনে স্থানীয় প্রচুর লোক ঘটনাস্থলে জড়ো হয়।সেই ভিড় দেখে বেবি বাউরি বাড়ির বাইরে আসেন। তিনি বলেন, কার্তিক চুরি করার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে ঢুকেছিল। তাকে দেখে ফেলেন বাড়ির লোকেরা। তখন সে দৌড়ে গিয়ে দেওয়াল টপকে পালাতে গিয়ে সে উপর সিঁড়িতে পড়ে যায়। এর বাইরে তিনি আর কিছুই জানেন না।মৃত কার্তিকের মা সবিতা বাউরি বলেন, আমার ছেলে মাত্র ৫/৬ মাস আগে এক কোটি টাকার লটারি জিতেছে। তাহলে চুরি করার জন্য তার কেন টাকার প্রয়োজন হবে? তাকে খুন করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বোরো চেয়ারম্যান বেবি বাউরি, অমরদীপ বাউরি, সন্দীপ বাউরি এবং জ্যোৎস্না বাউরি এই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত। আমরা তার খুনের কারণ প্রকাশ্যে আনবো। এর পাশাপাশি কার্তিকের মা ন্যায়বিচারের দাবি করেন।
কার্তিকের মা সবিতা বাউরির দায়ের করা লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে, পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সেই তদন্তে পুলিশ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বোরো চেয়ারম্যান বেবি বাউরি এবং তার ভাই অমরদীপ বাউরিকে গ্রেপ্তার করে। অন্য দুই অভিযুক্ত, সন্দীপ বাউরি এবং জ্যোৎস্না বাউরি এখনও পলাতক। পুলিশ জানায়, গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তারা শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে। বুধবার সকালে ধৃত দুজনকে আসানসোল আদালতে পেশ করা হয়েছে। তাদেরকে হেফাজতে নেওয়া জন্য পুলিশের তরফে আবেদন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।


