এসআইআর পশ্চিম বর্ধমানে বিলি ৮৬ শতাংশ ইনুমেরেশন ফর্ম, সর্বদলীয় বৈঠকে ডিএম
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* এসআইআর বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনে ( বিশেষ নিবিড় সংশোধন) প্রথম ১০ দিনে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ৮৬ শতাংশ ইনুমেরেশন ফর্ম বিলি করা হয়েছে। সংখ্যায় তা হলো ২০ লক্ষ ১০ হাজার। এই জেলায় বিএলওদের ২৩ লক্ষ ২৭ হাজার ফর্ম বিলি করতে হবে। এদিন দুপুরে আসানসোলের কল্যানপুরে পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসক কার্যালয়ে জেলাশাসক বা ডিএম এস পোন্নাবলমের সভাপতিত্বে এসআইআর প্রক্রিয়া সম্পর্কিত একটি সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।













এই বৈঠক নির্বাচন কমিশন স্বীকৃত সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ডিএম ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন এডিএম বা অতিরিক্ত জেলাশাসক শুভাষীনি ই, আসানসোলের মহকুমাশাসক বা এসডিও (সদর) বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য সহ অন্য প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।বৈঠকে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা জেলাশাসকের সামনে এই প্রক্রিয়া সম্পর্কিত বেশ কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেন। পাশাপাশি তারা সাধারণ মানুষের কিছু সমস্যার প্রতি তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন।এই বিষয়ে কংগ্রেস নেতা প্রসেনজিৎ পুইটুন্ডি বলেন, কংগ্রেসের তরফে তিনটি বিষয়ের প্রতি জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
প্রথমত, যদি কোনও ব্যক্তি ২০০২ সালে নাবালক হন এবং তার দাদা-ঠাকুমা বা বাবা-মা ইতিমধ্যেই মারা যান, তাহলে ২০০২ সালে তার কোনও আত্মীয়ের নাম ভোটার তালিকায় থাকবে না। এমন পরিস্থিতিতে, তার নাম কার সাথে মিলবে? দ্বিতীয় যে বিষয়টি উত্থাপন করেছে তা হল, ২০০২ সালে যে কর্মচারীরা এক জায়গায় থাকতেন। কিন্তু এখন সেখানে থাকেন না এবং তাদের ঠিকানা পরিবর্তিত হয়েছে তাদের কি হবে? তিনি বলেন, কেউ চিত্তরঞ্জন আগে থাকতেন। এখন তিনি নিউ টাউন বা ডুরান্ড কলোনিতে থাকেন। তাহলে এখন তাদের কি হবে? এইসব এলাকায় বসবাসকারী অনেক লোক আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
এদিনের বৈঠকে তাদের নামের একটি তালিকাও প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, কংগ্রেস জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আরেকটি বিষয়। তা হল, ২০০২ সালে কিছু লোক কোয়ার্টারে থাকতেন। কিন্তু এখন সেই কোয়ার্টার ভেঙে সেখানে নতুন কিছু তৈরি করা হয়েছে। সেই কোয়ার্টারে বসবাসকারী লোকদের নতুন জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই ধরণের লোকেরা কোথায় এই ফর্ম পাবেন? কংগ্রেস প্রশাসনকে পরামর্শ দিয়েছে যে, এই বিষয়ে এলাকায় এলাকায় সর্বসম্মত ঘোষণা করা উচিত। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বুথ লেভেল এজেন্টদের সাথে যোগাযোগ করে এই ধরণের লোকদের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ডেকে আনা উচিত যাতে সবাই গণনার ফর্ম পেতে পারে।
বিজেপি প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, এদিনের বৈঠকে আমি জেলাশাসকের কাছে ২০০২ সালে এক জায়গায় বসবাসকারী কিন্তু এখন অবসর গ্রহণ করে অন্য জায়গায় চলে গেছেন এমন লোকদের সমস্যা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম। এই পরিস্থিতিতে, তারা কিভাবে তাদের ফর্ম পাবে তা উদ্বেগের বিষয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য, আমরা দলের তরফে জেলাশাসককে পদক্ষেপ নিতে বলেছি। তৃনমুল কংগ্রেসের আকাশ মুখোপাধ্যায় বলেন, এদিনের বৈঠকে দলের তরফে অনুরোধ করেছে যে সকল বৈধ ভোটারের নাম ভোটার তালিকায় থাকে, এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, পাশাপাশি আমরা সাধারণ মানুষকে জনগণকে বুথ লেভেল অফিসারদের সঙ্গে অপ্রয়োজনীয়ভাবে ঝামেলা না করে, তাদের সহযোগিতা করার জন্যও অনুরোধ করা হচ্ছে।
এই বৈঠকের পরে জেলাশাসক এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, এখন পর্যন্ত এই জেলায় ৮৬% ফর্ম বিলি করা হয়েছে। জেলার সব বিএলও খুব ভালোভাবে কাজ করছেন। তিনি আরো বলেন, কোথাও কোন সমস্যা হলে তা এইআরও এবং সুপারভাইজারদের দিয়ে সমাধান করা হচ্ছে। ২০০২ এর ভোটার তালিকার ভোটার তালিকায় নাম থাকুক বা না থাকুক তিনি সকলকে এই ফর্ম পূরণ করতে বলেছেন। যাতে তার ড্রাফট তালিকায় থাকে।

