ASANSOL-BURNPUR

যুব শিল্পী সংসদ পরিচালিত ৩৯ তম আসানসোলে বইমেলার উদ্বোধন হয়ে গেল মেয়রের হাত ধরে ; পোলো ময়দানের নাম আসানসোলে বইমেলা প্রাঙ্গণ করার কথা ঘোষণা

আসানসোল, ১১ ই জানুয়ারি ২০২০, সৌরদীপ্ত  সেনগুপ্ত : যুব শিল্পী সংসদের উদ্যোগে আসানসোলের পোলো ময়দানে গতকাল থেকে শুরু হয়ে গেলো ৩৯ তম আসানসোল বইমেলা। গতকাল দুপুরে  এক অনুষ্ঠানে প্রথমে বইমেলার  প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এবং পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এই বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আসানসোল পুরনিগমের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব শিল্পী সংসদের সভাপতি প্রফেসর মুকুল ঘোষ এবং সম্পাদক ড: নবারুণ গুহঠাকুরতা, আসানসোলে করপোরেশনের মেয়র পারিষদ শ্রীমতি অঞ্জনা শর্মা, কাউন্সিলর অভিজিৎ আচার্য, কাউন্সিলর বেবি খাতুন, আসানসোলে পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক সামন্ত প্রমুখ। 

 উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, পোলো ময়দানের নাম  ” আসানসোল বইমেলা ময়দান ” নামে করার একটা পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। আর সেই কারনে এই ময়দান ঘেরার কাজ শুরু হয়ে গেছে। ঘেরার কাজ  হয়ে গেলে, একটা গেট লাগানো হবে এবং সেই গেটে “আসানসোল বইমেলা ময়দান” লেখা থাকবে।    তিনি বলেন,” উদ্যোক্তাদের কাছে আমার অনুরোধ এই ময়দান আপনারা এই ময়দান বইমেলা করার জন্য স্থায়ীভাবে ব্যবহার করুন। বিভিন্ন সংস্থার কাছে আমার অনুরোধ, তারাও এই ময়দান তাদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করুন”। 

 এরই সঙ্গে মেয়র বলেন, এই বইমেলা প্রত্যেক বছরই আয়োজন করা হয়ে আসছে। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতি খুব ভয়ংকর। যদি এই ভয়ংকর পরিস্থিতি এভাবেই জারি থাকে তাহলে আগামী দিনে যেসব মানুষেরা নিজেদের বিচার ধারা বইয়ের মাধ্যমে লেখেন সেটা তারা লিখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে যথেষ্ঠ সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। ভবিষ্যতে বাক স্বাধীনতাও না থাকতে পারে। তাই এখন থেকেই যদি  এইসবের প্রতিবাদ করা শুরু না হয়, তাহলে বইমেলা যেমন আয়োজন হচ্ছে, তা হয়তো হবে কিন্তু সেই বইমেলায় কি কি বই থাকবে, তা বাইরের শক্তি ঠিক করে দেবে। বিবেক এবং বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের বিচার ধারা প্রয়োগ করার স্বাধীনতা আর থাকবে না। তিনি বলেন, যেসব মানুষেরা এই গৌরবময় ধারাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য চেষ্টা করছেন, আমরা যারা অন্য কাজ করি, তাদের সঙ্গে থাকার দায়িত্ব আমাদের সবাইকে পালন করতে হবে। এটা অন্য কেউ আর দেখবে না। আমাদের সবাইকে এর বিরোধিতা ও প্রতিবাদ করতে হবে। 
তিনি বইমেলার উদ্যোক্তাদের কাছে  অনুরোধ করে বলেন যে চিন্তা ভাবনা নিয়ে বইমেলা তারা শুরু করেছেন, সেই ধারাকে যাতে তারা বজায় রাখেন এবং আগামী দিনে সেই ধারাতেই বইমেলা আয়োজন যাতে করেন। বাকি যা সুযোগ সুবিধা দরকার, তা প্রশাসন এবং করপোরেশন অবশ্যই দেবেন। 
এরই সঙ্গে তার বক্তব্য ছিল, “এত কিছুর পরেও  অভিব্যক্তির স্বাধীনতা থাকবে কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়ে যায় এবং তাতে আমাদের ভূমিকা কি হবে, তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার সময় এসে গেছে এবং তা খুব জরুরি। আসানসোলের মানুষদের কাছে আমার অনুরোধ এই বইমেলায় আসুন। বই কিনুন, আর সেই বই পড়ুন। তার সঙ্গে দেশ, রাজ্য ও নিজের শহরকে ভালোবাসুন। পাশাপাশি নিজের সংস্কৃতিকেও ভালোবাসুন। তার সঙ্গে দেখুন এর মধ্যে, বাইরের কেউ হস্তক্ষেপ করতে না পারে। আর তারপরেও যদি কেউ তা করে, তার বিরোধিতা করার জন্যে তৈরী থাকুন।”
বইমেলার উদ্বোধনের আগে 
 “বইয়ের জন্য হাঁটুন ” স্লোগানকে সামনে রেখে আসানসোলের রবীন্দ্রভবনের সামনে থেকে এই পদযাত্রা হয়। এই পদযাত্রায় আসানসোলের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়া,  শিক্ষক, শিক্ষিকাদের পাশাপাশি বইপ্রেমী মানুষেরা পায়ে পা মেলান। আসানসোল মহকুমা শাসকের কার্যালয়, আদালত চত্বর হয়ে সেই পদযাত্রা বইমেলা ময়দানে এসে শেষ হয়। বিকেলের দিকে মেলা প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করতে আসেন আসানসোলে দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি ওয়েস্ট শ্রী শান্তব্রত চন্দ, হিরাপুর থানার সার্কেল ইন্সপেক্টর শিবনাথ পাল এবং ওসি সৌমেন্দ্র সিংহ ঠাকুর।
১০ দিনের এই বইমেলা চলবে আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এবং কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *