ASANSOL-BURNPUR

করোনা পরিস্থিতিতে ট্রেড লাইসেন্সে ছাড় এবং সাধারণের জন্য “ডক্টর- অন- কল” সুবিধার কথা ঘোষণা করলেন আসানসোল মিউনিসিপাল করপোরেশনের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, ৬ ই মে, ২০২০, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত: করোনা পরিস্থিতিতে সারা দেশ জুড়ে  লক ডাউনের তৃতীয় দফা চলছে। এই লক ডাউনের জেরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার শিল্পশহর আসানসোলের শ্রমজীবী ও বিশেষ করে ব্যবসায়ী মানুষজনের জীবিকায় ভীষণভাবে প্রভাব পড়েছে। 

আর এই কথা মাথায় রেখেই আজ আসানসোল মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি একটি সাংবাদিক বৈঠকে করপোরেশন এলাকার মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স বা বানিজ্য করের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধাপ অনুযায়ী এক গুচ্ছ ছাড়  ঘোষণা করেন। এরই সঙ্গে  ডক্টর অন কল, প্রপার্টি ট্যাক্স বা সম্পত্তি করের ব্যাপারে কিছু নতুন তথ্য দেওয়া হয়। ওই বৈঠকে আসানসোল মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের কমিশনার এবং এ ডি এম  খুরশিদ আলী কাদরী, আই এ এস উপস্থিত ছিলেন।

 মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, ” করোনা ভাইরাস মহামারী পরিস্থিতিতে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তাদের কথা মাথায় রেখে  ট্রেড লাইসেন্সের যে ফিস রয়েছে সেই ব্যাপারে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত ব্যবসায়ীদের ফিস ৫০০ টাকা পর্যন্ত তাদের ৫০ শতাংশ , ৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত ৪০ শতাংশ , ১৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত ৩০ শতাংশ, ৩০০০ টাকা থেকে ৭০০০ টাকা পর্যন্ত ২৫ শতাংশ , ৭০০০ টাকা থেকে ১০০০০ টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ এবং ১০০০০ টাকার উর্ধ্বে যাদের ট্রেড লাইসেন্স ফিস আছে তাদের ১৫ শতাংশ ছাড় দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই বছরের জন্যে।

এর ফলে ট্রেড লাইসেন্সের থেকে যে রেভিনিউ বা রাজস্ব সংগৃহীত হয় তার থেকে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা রিবেট বা ছাড় দেওয়া হল এবং পরোক্ষভাবে ব্যবসায়ীদের সহয়তা করা হল । নতুন যারা ট্রেড লাইসেন্স করবেন তাদের জন্য এবং পুরনো যারা রিনিউ করবেন উভয়ের ক্ষেত্রে এই ছাড় প্রযোজ্য।

এছাড়া মেয়র বলেন বাড়ি থেকে ফোন করে রোগের উপসর্গ বুঝে চিকিৎসার জন্য ‘ ডক্টর- অন- কল ‘ এর ব্যাপারে অনুরোধ আসছিল অনেকদিন ধরেই। সেই মত সাধারণ মানুষের জন্যে একটি ফোন নম্বর দেওয়া হলো। ফোন নম্বরটি হল ০৩৪১-২৩০৯৪৭৬।
এই নম্বরে মঙ্গলবার এবং শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে ৫ টা পর্যন্ত ফোন করে ডাক্তারকে  উপসর্গ বলে প্রাথমিক চিকিৎসা পেতে পারেন সাধারণ মানুষ।

 মেয়র আরো  বলেন প্রপার্টি ট্যাক্স বা সম্পত্তি কর বর্তমানে অনলাইনে দেওয়া যাচ্ছে। কিন্তু যারা বিভিন্ন কারণে অফলাইনে প্রপার্টি ট্যাক্স দিতে চান তাদের প্রত্যেক বরোতে প্রতিদিন সর্বাধিক ৫০ জন করে সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে চলে, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এবং স্যানিটাইজার  ব্যবহার করে ট্যাক্স নেওয়া হবে।  
 এছাড়াও মেয়র বলেন আগামী সোমবার থেকে আবার আসানসোল মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের পক্ষ থেকে বৃহত্তর আকারে প্রতিটি ওয়ার্ড সংলগ্ন অঞ্চলে স্যানিটাইজেশনের কাজ করা হবে।
এদিকে করপোরেশনের কমিশনার খুরশিদ আলী কাদরী বলেন,” গত বছর থেকে ট্রেড লাইসেন্স অনলাইনে আবেদন করা যাচ্ছে। যারা অনলাইনে আবেদন করতে চান তারা বাড়িতে বসেই আসানসোল মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের ওয়েবসাইটের লাইসেন্স মডিউলে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন।
এছাড়া করপোরেশন কমিশনার বলেন অনেক জায়গাতেই শোনা যাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্যানিটাইজেশনের কাজে ব্যবহৃত সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড (১%) কেমিক্যাল সলিউশন লোকজন নিজের শরীরে স্প্রে করতে চাইছেন যা শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক। হাসপাতাল বা কোনো জায়গা স্যানিটাইজেশনের সময় মানুষ যাতে এর থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলেন। সাংবাদিকদের তিনি আরো বলেন, করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং থার্মাল স্ক্রিনিং চালাচ্ছেন। কোনো কিছু সন্দেহ মনে হলে তারা হেলথ অফিসারকে জানাচ্ছেন এবং প্রটোকল অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেন।”
 আসানসোল করপোরেশনের তরফ থেকে এই ট্রেড লাইসেন্স ফিস সংক্রান্ত ছাড় এবং “ডক্টর- অন- কল” এর সুবিধা ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ উভয়কেই করোনা আবহে স্বস্তি দেবে এটি আশা করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *