বুদবুদে স্বর্ন ব্যবসায়ীকে গুলি করে লুটের ঘটনায় গ্রেফতার ৫
সিসিটিভির ফুটেজ দেখে কিনারা
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দূর্গাপুর, ৩ সেপ্টেম্বরঃ সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পশ্চিম বর্ধমান জেলার বুদবুদের স্বর্ন ব্যবসায়ীকে গুলি করে লুটের ঘটনার কিনারা করলো আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ। ঐ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৫ দুষ্কৃতিকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে লুট হওয়া টাকা ও সোনার গয়নার কিছুটা অংশ । ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ একটি পিস্তল, গুলি ও ম্যাগাজিন বাজেয়াপ্ত করেছে বলে জানা গেছে। বৃহঃস্পতিবার ধৃতদের দূর্গাপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জামিন করে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন।
ধৃতদের মধ্যে লোকমান শেখ গলসির পারাজের ও শাহিল মন্ডল বর্ধমানের বাসিন্দা । এই চক্রের মুল পান্ডা সাহিম শেখ, রাকেশ শেখ ও চঞ্চল শেখ মঙ্গলকোটের বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে ।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা এদিন বলেন, ধৃতদের কাছ থেকে একটি দেশী ৯ এমএম পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিন পাওয়া গেছে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লুঠ হওয়া দেড় লক্ষ টাকার মধ্যে ৯ হাজার ৯৬০ টাকা ও কিছু সোনার গহনা উদ্ধার হয়েছে ধৃতদের কাছ থেকে ।
বর্ধমানের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমর সরকার উপরে দূষ্কৃতিরা হামলা চালায়
প্রসঙ্গত, গত ১৪ আগষ্ট সন্ধ্যার সময় বুদবুদ থানার ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে সুকান্ত নগর প্রাইমারি স্কুলের সামনে স্বর্ন ব্যবসায়ীর উপরে আচমকাই সশস্ত্র দুষ্কৃতিরা হামলা হয়। স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমর সরকার বর্ধমানের বাসিন্দা ছিলেন। বুদবুদ মানকর রোডের নিউ মার্কেটে তার একটি গয়নার দোকান আছে। বুদবুদের সুকান্তনগরে সমরবাবুর শ্বশুরবাড়ি। সেদিন সন্ধ্যার সময় তিনি দোকান বন্ধ করে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। সেই সময় তার উপরে দূষ্কৃতিরা হামলা চালায়। জানা যায়, তিন দুষ্কৃতি স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এরপর তার কাছে থাকা টাকা ও গয়না ভর্তি ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিয়েছিলো বলে অভিযোগ। ভর সন্ধ্যায় এই ঘটনার পরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুষ্কৃতিদের ফেলে যাওয়া একটি মোটরবাইক উদ্ধার করে। থানার কাছে এই রকম একটি ঘটনা ঘটায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয় বাসিন্দাদের মধ্যে। বুদবুদ বাজারে ঐ ব্যবসায়ীর দোকানের আশপাশের এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ নিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, বুধবার রাতে একসঙ্গে পারাজ, মঙ্গলকোট ও বর্ধমানের দুই জায়গায় অভিযান চালায় পুলিশের দল। এক এক করে ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের টানা জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার কথা স্বীকার করে। এই ব্যাপারে ডিসিপি (পুর্ব) অভিষেক গুপ্তা আরো বলেন, ঐ ঘটনার পরে এলাকায় পাওয়া মোটরবাইকটি বর্ধমান থেকে চুরি করেছিলো এই দুষ্কৃতিরা। ধৃতদের মধ্যে লোকমান শেখ ঐ স্বর্ন ব্যবসায়ীকে ঘটনার আগে বেশ কয়েকদিন ধরে অনুসরন করছিলে। আগে থেকেই দূষ্কৃতিরা স্বর্ণ ব্যবসায়ীর উপরে হামলার ঘটনা ” রেইকি ” করেছিলো। লোকমানের কথা মতো সহিম শেখ গোটা ঘটনার পরিকল্পনা তৈরী করে। ধৃত শহিল, রাকেশ ও চঞ্চল স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে লুঠ করেছে। ডিসিপি আরো বলেন, ধৃতরা ঘটনার কথা জেরায় স্বীকার করেছে। এর আগে এই ধরনের কোন ঘটনা তারা ঘটিয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এই চক্রের আরো একজন এখনো ফেরার রয়েছে। তার খোঁজ চলছে। ধৃতদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদেরকে আরো জেরা করা হবে।