বাংলায় জামতাড়া গ্যাংয়ের সরকার চলছে, নেতৃত্বে মমতা বন্দোপাধ্যায়, আক্রমণ রাজু বন্দোপাধ্যায়ের
পুলিশের করা দুটি থানার মামলায় জামিন নিতে আসানসোল আদালতে আত্মসমর্পণ বিজেপির রাজ্য নেতার
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত , আসানসোল, ১৬ সেপ্টেম্বরঃ আগষ্ট ও চলতি সেপ্টেম্বর মাসে জামুড়িয়া ও আসানসোলের দুটি দলীয় সভা থেকে পুলিশকে দেখে নেওয়া ও রাজ্যে ক্ষমতায় এলে জুতো চাটানোর হুঁশিয়ারী দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক তথা রাঢ় বঙ্গের পর্যবেক্ষক রাজু বন্দোপাধ্যায়।
তার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জামুড়িয়া ও আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আলাদা আলাদা ভাবে রাজু বন্দোপাধ্যায়ের নামে ভারতীয় দন্ডবিধির একাধিক ধারায় সুয়োমুটো বা স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে।
বুধবার সেই দুটি মামলায় জামিন নিতে আসানসোল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বিজেপির ঐ রাজ্য নেতা। এদিন তার হয়ে আদালতের বিচারকের কাছে সওয়াল করেন আইনজীবী শেখর কুন্ড।
তবে বিজেপির এই নেতা যে পুলিশের মামলা করার জন্য একটুও দমে যাননি, এদিন আবারও তার প্রমান পাওয়া গেছে। এদিন তিনি সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বলেন, এই বাংলায় এখন জামতাড়া গ্যাংয়ের ( সাইবার অপরাধের জন্য সারাদেশে কুখ্যাত ঝাড়খণ্ডের এই গ্যাং) শাসন চলছে। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।
বাংলায় এখন তৃনমুল কংগ্রেসের মাফিয়া, গুন্ডা, বড় বড় ক্রিমিনাল ও সিন্ডিকেট রাজের মাস্টারমাইন্ডদের দৌরাত্ব। এরা প্রকাশ্য রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা হলো আসানসোলের জিতেন্দ্র তেওয়ারি, বীরভূমের অনুব্রত মন্ডল, পূর্ব বর্ধমানের স্বপন দেবনাথ ও ববি হাকিম। আর যারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজ্যে আন্দোলন করছে বা সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হচ্ছে, তাদের নামে মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে।
জেলে ভরে দেওয়া হচ্ছে। তাদেরকে আদালতে হাজিরা দিয়ে বেল নিতে হচ্ছে। বাংলায় সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এরপর আর রাজ্যে এইসব চলবে না। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে। তখন তৃনমুল কংগ্রেসের এইসব নেতাদের জেলে পাঠানো হবে। তখন কেউ বেলও পাবেনা। রাজ্যের মানুষের ৪০০ / ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কিশোর বা পিকেকে বাংলায় আনা হয়েছে। তাতেও অবশ্য কিছু হবে না। পিকে তো পেশাদার। সে টাকা পেলেই কাজ করবে। গোটা তৃনমুল কংগ্রেস দলটাই পিকের কাছে বন্ধক হয়ে গেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে এখন বাংলার মানুষেরা আর নেই। তৃনমুল কংগ্রেসকে এখন পুলিশ প্রশাসন ও গুন্ডারা চালাচ্ছে। বিরোধীদের এখানে রাজনীতি করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে বিজেপিকে। বিজেপি কেউ করলে তাকে ভয় দেখানো হচ্ছে।
রাজু বন্দোপাধ্যায় বলেন, আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন। তারজন্য গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশ জুড়ে ” সেবা সপ্তাহ ” পালন করা হচ্ছে। সেই সপ্তাহ পালনের লক্ষ্য হলো গরীব ও দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। তাদের হাতে খাবার তুলে দেওয়া, রক্তদান শিবির করা। এদিন রাজু বন্দোপাধ্যায় বেশ কিছু মানুষের হাতে খাবারের প্যাকেট তুলে দেন।
এদিন রাজু বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই, কাউন্সিলর তথা মহিলা মোর্চার সভানেত্রী আশা শর্মা, সুব্রত মিশ্র সহ অন্যান্যরা। আইনজীবী শেখর কুন্ডু বলেন, দুটি মামলাতেই রাজু বন্দোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা জামিন পেয়েছেন।
আসানসোলে এসে এমন কথা বললে, মেরে পা ভেঙ্গে দেবো
অন্যদিকে, রাজু বন্দোপাধ্যায়কে এদিন পাল্টা আক্রমণ করেন তৃনমুল কংগ্রেসের রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোল শহরের আহ্বায়ক ভি শিবদাসন ওরফে দাসু। তিনি বলেন, ঐ ব্যক্তি যে ভাষায় কথা বলেন, তাতে তার রাজনীতি করার কোন যোগ্যতা নেই। আমরা তার দলের নেতাদের নামে ওর থেকে চারগুণ খারাপ ভাষায় কথা বলতে পারি। কারণ তা আমাদের রুচিতে বাঁধে। আমরা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আদর্শ মেনে চলি। তবে, এবার থেকে এই নেতা আসানসোলে এসে এমন কথা বললে, মেরে পা ভেঙ্গে দেবো। তখন দেখবো কে তাকে বাঁচায়।