একই পরিবারের ৮ জনকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনলো পুলিশ
ঝাড়খণ্ডে আচমকাই খুলে দেওয়া হলো লকগেট / অজয় নদীতে জল বেড়ে বিপত্তি, সাহায্যে এলাকার বাসিন্দারা



বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৩ সেপ্টেম্বরঃ শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে গিয়ে মাঝ নদীতে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে কোনক্রমে প্রাণে বাঁচলেন একই পরিবারের ৮ জন৷ যাদের মধ্যে ১ শিশু ও ৩ মহিলা আছেন। পুলিশের তৎপরতার ও এলাকার বাসিন্দাদের চেষ্টায় জামুড়িয়ার পরিহারপুরের ৪ নং
এলাকার যাদব পরিবারের ৮ সদস্য এদিন অল্পের জন্য রক্ষা পেলো।

বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোলের জামুড়িয়া থানার চুরুলিয়া ফাঁড়ির লোধা গ্রামের অদূরে অজয় নদীর লোধা ঘাটে। ৮ জনের নাম হলো, সত্যনারায়ন যাদব (৪৪), বিজয় যাদব (১৮), আমীর যাদব (৪০), মুনমুন যাদব (১৭), টিনটুন যাদব (২০), কবিতা দেবী (৪০), মান্টি যাদব (১৭) ও শশী যাদব (১০)।
শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে গিয়ে আটকে পড়া জামুড়িয়ার
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আসানসোলের জামুরিয়া থানার পরিহারপুর ৪ নং এলাকার সত্যনারায়ন যাদবের এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য বুধবার দুপুরে পরিবারের কয়েকজন সদস্য লোধা গ্রামের অদূরে অজয় নদীর লোধা ঘাটে আসেন। দুপুর দুটো নাগাদ তারা স্নান করার জন্য অজয় নদীতে নামেন ।সেই সময় নদীতে জল কম থাকায় তারা অজয় নদীর মাঝে গিয়ে স্নান করছিলেন। এদিকে কোন রকম আগাম সর্তকতা ছাড়াই ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার সিকিটা লকগেট খুলে দেওয়া হয়। এর ফলে হঠাৎ করে অজয় নদীতে জল বেড়ে যায়। সত্যনারায়ণ যাদব সহ ৮ জন নদীর বেড়ে যাওয়া সেই জল পার করে আসতে না পেরে নদীর একবারে মাঝে ছোট্ট দ্বীপের মতো বালি ব্যাঙ্কে আটকে পড়েন। দূর থেকে লোধা গ্রামের বাসিন্দারা তা দেখতে পান৷ তারা পুলিশের কাছে খবর পাঠায়।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে দুপুর দুটো নাগাদ চুরুলিয়া ফাঁড়ি ইনচার্জ দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়াররা ছুটে আসেন। তড়িঘড়ি মাজ নদীতে আটকে থাকা যাদব পরিবারের ৮ জনকে উদ্ধারে নামেন তারা । প্রায় ঘন্টা খানেকের চেষ্টায় স্থানীয়দের সাহায্যে ছোট একটা ডিঙি বা নৌকার সাহায্যে আটকে থাকা ৮ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন তারা পুলিশকর্মীরা। সত্যনারায়ণ যাদবরা চুরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ কর্মী, সিভিক ভলেন্টিয়ার ও গ্রামের বাসিন্দাদের এই চেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। তারা বলেন, ভাবিনি বেঁচে আসবো। নতুন জীবন পেলাম আমরা।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি ( সেন্ট্রাল) সায়ক দাস বলেন, ঝাড়খণ্ডের লকগেট আচমকাই খুলে দেওয়ায় অজয় নদীর জল বেড়ে যায়। তাতেই এক পরিবারের ৮ সদস্য মাঝ নদীতে আটকে পড়েন। পুলিশ, সিভিক ভলেন্টিয়ার ও গ্রামের বাসিন্দারা প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। তারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই উদ্ধার কাজ করেছেন। তিনি আরো বলেন, এইভাবে আমাদের না জানিয়ে লকগেট খোলা উচিত হয়নি। আমরা বিষয়টা দেখছি। তবে এই ঘটনায় ঝাড়খণ্ডের পুলিশ বা প্রশাসনের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।