ASANSOLFEATUREDHealth

নজির গড়ল ASANSOL জেলা হাসপাতাল

পরিকাঠামো নেই জেলার কোভিড ১৯ হাসপাতালে ঝুঁকি নিয়ে করোনা আক্রান্ত প্রসূতির অস্ত্রোপচার

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল : স্বাস্থ্য দপ্তর স্বীকৃত কোভিড ১৯ (COVID 19) হাসপাতাল (hospital) নয়। তাসত্ত্বেও আসানসোল (ASANSOL) জেলা হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত এক প্রসূতির অস্ত্রোপচার (OPERATION) বা সিজার করা হলো। মঙ্গলবার তা হয়। প্রসূতি এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। অস্ত্রপচার করেন জেলা হাসপাতালের গাইনোকোলজিস্ট ডাঃ তপন বন্দোপাধ্যায়। এ্যানাসথেটিস্ট হিসাবে ছিলেন ডাঃ শ্রীকান্ত গাঙ্গুলি। মা ও সদ্যজাত দুজনেই আপাততঃ সুস্থ আছেন। তাদেরকে জেলা হাসপাতালের আইসোলেশান ওয়ার্ডে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে লালারস বা সোয়াব পরীক্ষা না হওয়ায় এখনো জানা যায়নি, সদ্যজাত করোনা আক্রান্ত কিনা। এক বা দুদিনের মধ্যে জেলা হাসপাতালের প্যাথোলজিস্টের পরামর্শ নিয়ে সদ্যজাতর লালাসর পরীক্ষা করা হতে পারে। জেলা হাসপাতালের এই কাজের প্রশংসা করেন মেয়র পরিষদ অভিজিত ঘটক।

ASANSOL DISTRICT HOSPITAL
ASANSOL DISTRICT HOSPITAL

জন্ম দিলেন শিশুকন্যার


হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বছর ২৫ এর ঐ প্রসূতির বাড়ি আসানসোলের আপার চেলিডাঙ্গায়৷ মঙ্গলবার সকালে বাড়ির লোকেরা তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার আগেই অবশ্য জানানো হয় যে, প্রসূতি করোনা আক্রান্ত। স্বাভাবিকভাবেই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের একটা উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরী হয়। প্রথমে তারা ঐ প্রসূতির অস্ত্রোপচার করতে রাজি হননা। তারা প্রশ্ন তোলেন যে, এই জেলা হাসপাতাল কোভিড১৯ হাসপাতাল হিসাবে স্বীকৃত নয়। এখানে পরিকাঠামো নেই। তাহলে, এই প্রসূতিকে এখানে ভর্তি করা হচ্ছে কেন?

গোটা বিষয়টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অশ্বিনী কুমার মাজিকে জানানো হয়। তিনি হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাসের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা প্রসূতির অস্ত্রোপচার করতে রাজি হন। দুপুরে পুরো স্বাস্থ্য বিধি মেনে ও প্রত্যেকে পিপিই পড়ে প্রসূতির অস্ত্রপচার। সেই অস্ত্রপচার করতে আধঘন্টারও কম সময় লাগে। আগে ও পরে গোটা জায়গা স্যানিটাইজেশন করা হয়।
প্রসঙ্গতঃ, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় একমাত্র কোভিড ১৯ হাসপাতাল আছে দূর্গাপুরে। কিন্তু সেখানে প্রসূতিদের অস্ত্রপচার করার মতো পরিকাঠামো নেই। বিশেষজ্ঞ গাইনেকোলজিস্টও নেই।


সুপার বলেন, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ মতো সবকিছু ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। প্রসূতির একটা ঝুঁকি সব সময়ই থাকে। এক্ষেত্রে প্রসূতি যেহেতু করোনা আক্রান্ত, তাই ঝুঁকিটা আরো বেশি ছিলো।। আর তার শারীরিক অবস্থা যা ছিলো, তাতে তাকে বাইরে রেফার করা যেতোনা। প্রথমে চিকিৎসকরা রাজি হচ্ছিলেন না। আমরা তাদের পরিস্থিতি বোঝানোয় তারা রাজি হন। মা ও সদ্যজাত স্থিতিশীল আছেন। তাদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সেই রকম কিছু হলে, আমরা পরে তাদের কোভিড ১৯ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেবো।


জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অশ্বিনী কুমার মাজি বলেন, দূর্গাপুরের হাসপাতালে পরিকাঠামো নেই। তাই প্রসূতিকে জেলা হাসপাতালে রাখতে হয়েছে। প্রথমে চিকিৎসকরা রাজি হচ্ছিলেন না। পরে বোঝানোয় তারা রাজি হন। করোনা আক্রান্ত জেনেও চিকিৎসক সহ যারা তার অস্ত্রপচারে ছিলেন তাদের ধন্যবাদ। মা ও সদ্যজাত আপাততঃ সুস্থ আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *