BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJANLatestNewsWest Bengal

রুপনারায়নপুরে মর্মান্তিক ঘটনা

জলাশয়ের জলে ডুবে স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যু

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১১ অক্টোবরঃ আসানসোলের রুপনারায়নপুরের বন্ধ হয়ে যাওয়া হিন্দুস্তান কেবলস কারখানা সংলগ্ন জলাশয়ে স্নান করতে নেমে জলে ডুবে মৃত্যু হলো এক স্কুল পড়ুয়ার। রবিবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। সপ্তম শ্রেণীর মৃত পড়ুয়ার নাম বিশ্বদীপ চক্রবর্তী (১২)। মায়ের সঙ্গেই রুপনারায়নপুর কেবলস ওল্ড কলোনিতে থাকতো বিশ্বদীপ চক্রবর্তী। সে আছড়া যজ্ঞেশ্বর ইনস্টিটিউশনের সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকালে নাচ শেখার ক্লাসে যাচ্ছে বলে মাকে জানিয়ে বিশ্বদীপ চক্রবর্তী বাড়ি থেকে বেরোয়। তারপর সে বন্ধুদের সঙ্গে হিন্দুস্তান কেবলস কারখানা সংলগ্ন জলাশয়ের শিব মন্দির ঘাটে স্নান করতে নেমে পড়ে।

কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সে জলাশয়ের জলে তলিয়ে যেতে থাকে। সঙ্গে থাকা তার বন্ধুরা চিৎকার করে আশপাশের লোকেদের সাহায্য চাইতে থাকে। সেই সময় কাছাকাছি ঘাটে স্নান করছিলেন কয়েকজন মহিলা। তাদের মধ্যে একজন মহিলা একটি গাছের ডাল ছেলেটির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টাও করেন। জলাশয়ের উল্টো দিকে উজ্জ্বল তাঁতি, রঞ্জিত তাঁতি, মিঠুন কুমার নামে বেশ কয়েকজন কাজ করছিলেন। তারা চিৎকার শুনে জলাশয়ের দিকে ছুটে আসেন।

পিঠাইকেয়ারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন

জলাশয়ে সেই সময় নিজের গাড়ি ধুচ্ছিলেন রূপনারায়ণপুরের বাসিন্দা স্বপন দাঁ। তিনিও চিৎকার শুনে ছুটে যান। উজ্জ্বলবাবুরা দ্রুত শিব মন্দির ঘাটে ডুবে যাওয়া বিশ্বদীপের খোঁজে জলাশয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণের মধ্যেই মিঠুনের পায়ে লাগে জলে ডুবে যাওয়া বিশ্বদীপের শরীর। তাড়াতাড়ি বিশ্বদীপকে জলাশয় থেকে পাড়ে তুলে এনে তারা পেট থেকে বেশ কিছুটা জল বার করেন। তখনো বিশ্বদীপের শরীরে প্রাণের অস্তিত্ব ছিলো। সঙ্গে সঙ্গে স্বপনবাবুর গাড়িতে করে বিশ্বদীপকে পিঠাইকেয়ারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছে যান বিশ্বদীপের মা দীপা চক্রবর্তী। মর্মান্তিক ঘটনায় একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন দীপা চক্রবর্তী।

বিশ্বদীপের বাবা বিকাশ চক্রবর্তী পরিবারের সঙ্গে থাকেন না। একমাত্র ছেলের এই মৃত্যু একবারেই একা হয়ে গেলেন দীপা দেবী। তাই হাসপাতালে পৌঁছে তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে তার ছেলে আর বেঁচে নেই। হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে পুলিশ আসে। দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পড়য়ার দেহর ময়নাতদন্ত হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, অসাবধানতার জন্য স্নান করার সময় জলাশয়ের জলে ডুবে ঐ কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *