ASANSOLBengali NewsKULTI-BARAKARNewsWest Bengal

সুদখোরদের বিরুদ্ধে বোনাসের টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ, আত্মঘাতি ইসিএলের কর্মী

আসানসোল দক্ষিণ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের স্ত্রীর / অধরা অভিযুক্তরা

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩০ অক্টোবরঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল রানিগঞ্জ কয়লাখনি এলাকায় সুদখোর বা মহাজনদের দৌরাত্ব নতুন কোন ঘটনা নয়। এবার এক সুদখোর ও তার ছেলের বিরুদ্ধে ইসিএলের এক কর্মীর কাছ থেকে বোনাসের টাকা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠলো। ঐ সুদখোরদের হুমকির ভয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ঐ ইসিএল কর্মী বলে অভিযোগ, তার পরিবারের ।


গত ২২ অক্টোবর দূর্গা ষষ্ঠীর দিন এই ঘটনাটি ঘটে আসানসোল দক্ষিণ থানার ইসিএলের সোদপুর এরিয়ার ধেমোমেনের বরাচক এলাকায়। বরাচক কলোনির বাসিন্দা মৃত ইসিএলের কর্মীর নাম শঙ্কর হাড়ি (৪৬)। মৃত শংকর হাড়ি ইসিএলের বরাচক এরিয়া অফিসে সুইপার পদে কাজ করতেন বলে জানা গেছে ।


সেই ঘটনার সাতদিন পরে ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে মৃত শংকর হাড়ির স্ত্রী আরতি হাড়ি আসানসোল দক্ষিণ থানায় মহাজন বা সুদখোর শোশন নুনিয়া ও তার ছেলে রাহুল নুনিয়ার নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত দুজনের বাড়ি আসানসোলের ধেমোমেন সিপি ধাওয়া এলাকায়। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত দুজনকে পুলিশ ধরতে পারেনি৷

সুদে ২ লক্ষ টাকা নেয়


পুলিশ জানায়, অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্তরা ফেরার রয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
আরতি হাড়ি বলেন, স্বামী শংকর হাড়ি ইসিএলের বরাচক এরিয়া অফিসে সুইপার পদে চাকরি করেন৷ ২০০৯ সালে স্বামী নিজের বোনের বিয়ের জন্য এলাকায় সুদখোর বা মানিলন্ডার বলে পরিচিত শ্মশান নুনিয়ার কাছ থেকে সুদে ২ লক্ষ টাকা নেয়।

সেই সময় শোশন নুনিয়া আমার স্বামীর কাছ থেকে ব্যাঙ্কের পাশ বই ( স্যালারি একাউন্ট) , প্যান কার্ড, ইসিএলের পরিচয় পত্র সহ চাকরি সংক্রান্ত সব কিছু কেড়ে নিয়েছিলো। তারপর থেকে প্রতিমাসে বেতন ব্যাঙ্ক থেকে তোলার পরে সুদ হিসাবে সব টাকা ঐ সুদখোর নিয়ে নিতো।

স্বামীর হাতে মাত্র কয়েক হাজার টাকা দিতো। গত ২২ অক্টোবর স্বামী পুজোর বোনাস হিসাবে ৬৮,৫০০ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তোলে৷ সেই টাকা শ্মশান নুনিয়ার ছেলে রাহুল নুনিয়া জোর কেড়ে নেয়। আমি সেই কথা জানার পরে শ্মশান নুনিয়াকে ফোন করি। সে আমাকে সুদে টাকা নেওয়ার কথা বলে। এরপর আমার স্বামী ও ছেলে শ্মশানের বাড়িতে গেলে ৬৮, ৫০০ টাকার মধ্যে মাত্র ২৮ হাজার টাকা সে দেয়।

সুদখোর ও তার ছেলের হুমকিতে ভয় পেয়ে আত্মহত্যা করেছে

স্বামীকে সেদিন দুপুরে গলায় দড়ি দেওয়া ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। আরতি হাড়ি আরো বলেন, আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম। প্রতিবেশীরা আমার পাশে দাঁড়ানোয় আমি ঘটনার সাতদিন পরে বৃহস্পতিবার গোটা ঘটনার কথা লিখিত ভাবে পুলিশকে জানিয়েছি। তার দাবি, আমার স্বামী ঐ সুদখোর ও তার ছেলের হুমকিতে ভয় পেয়ে আত্মহত্যা করেছে। দুজনকেই পুলিশ গ্রেফতার করে কড়া শাস্তি দিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *