ASANSOLBengali News

বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের সংগঠনে গুরুত্ব বাড়ছে মন্ত্রী মলয় ঘটকের

পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের নতুন সভাপতিকে পাশে নিয়ে দাবি চেয়ারম্যানের, জিতবো নয় কেন্দ্রেই

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোলঃ বিধানসভা নির্বাচন কড়া নাড়ছে দরজায়। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রশ্ন দিকেই নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা করতে পারে কমিশন। ঠিক তার আগেই পশ্চিম বর্ধমান জেলায় শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের সংগঠনে গুরুত্ব বাড়ছে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের moloy ghatak


একমাস আগে গত ১৬ ডিসেম্বর দলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের জেলা সভাপতির পদ ছেড়েছিলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি। তার ঠিক একমাস পরে সেই পদে বসানো হলো দূর্গাপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে।

জিতেন্দ্র তেওয়ারির রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে জল্পনা

আপাততঃ কলকাতা থেকে জেলার যে কমিটির নাম পাঠানো হয়েছে, তাতে নাম নেই জিতেন্দ্র তেওয়ারির। স্বাভাবিক ভাবেই জিতেন্দ্র তেওয়ারির রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে জল্পনা নতুন করে শুরু যে হলো তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। এর আগে অপূর্ববাবু জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। দূর্গাপুর পুরনিগমের মেয়র পদে ছিলেন। তৃনমুল কংগ্রেসের দূর্গাপুরের বিধায়কও ছিলেন তিনি।


এবার বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দলের সংগঠন ধরে রাখতে মমতা বন্দোপাধ্যায় তার উপরেই আস্থা রাখলেন। অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বর্তমানে দূর্গাপুর পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র পদে আছেন।
এছাড়াও একইসঙ্গে এদিন পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটি পুর্নগঠন করা হয়েছে। রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক চেয়ারম্যান পদে আছেন। জেলায় দলের কো-অর্ডিনেটরের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এরআগে জেলায় দুজন কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। দূর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিম বিধানসভার কো-অর্ডিনেটর হয়েছেন বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ার কো-অর্ডিনেটর করা হয়েছে দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা হরেরাম সিংকে।

আসানসোল উত্তর ও দক্ষিণ বিধান সভার কো-অর্ডিনেটর হয়েছেন ভি শিবদাসন ওরফে দাসু। কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে কুলটি ও বারাবনি বিধানসভার জেলা কো-অর্ডিনেটর করা হয়েছে। একইভাবে জেলার দুই মুখপাত্র হয়েছেন বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায় ও সদ্য আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ড থেকে বাদ পড়া অশোক রুদ্র। তাপস বন্দোপাধ্যায় ও অশোক রুদ্র আগে থেকেই জেলার মুখপাত্র আছেন।


তবে, জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে দলের জেলার কোন পদে রাখা হয়নি। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। এখন দেখার জিতেন্দ্র তেওয়ারি কি করেন তাই দেখার।
গত ১৬ ডিসেম্বর পশ্চিম বর্ধমান জেলার দলের জেলা সভাপতি পদের পাশাপাশি আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক পদ একইসঙ্গে ছেড়েছিলেন তিনি। তার ঠিক দুদিন পরে কলকাতায় রাজ্যের মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের সঙ্গে এক বৈঠকের পরে তিনি অবশ্য নিজের ভুল স্বীকার করে তৃনমুল কংগ্রেসে ফিরে আসেন। দিন কয়েক চুপ থাকার পরে নিজের বিধান সভা এলাকা পান্ডবেশ্বরে দলের কাজ শুরু করেন।

কিন্তু, দলের জেলা নেতাদের সঙ্গে তাকে আর দেখা যায়নি।
রবিবার দুপুরে আসানসোলের জিটি রোডে বাজার সংলগ্ন জেলা কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। নতুন জেলা কমিটির এদিনের ঘোষিত সদস্যদের মধ্যে সেখানে গরহাজির ছিলেন অন্যতম জেলা কো-অর্ডিনেটর দূর্গাপুরের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও জেলার দুই মুখপাত্র। বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। তবে জেলার দুই মুখপাত্র অশোক রুদ্র ও তাপস বন্দোপাধ্যায় বলেন, বাইরে আছি। তাই যেতে পারিনি।


সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, জেলার নয়টি বিধান সভা কেন্দ্রেই আমরা জিতবো। বাংলার মানুষের ভরসা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উপরে এখনো অটুট আছে।


অন্যদিকে, সদস্য জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, ভালো টিম পেয়েছি। এবারের বিধান সভা নির্বাচনে কোন অসম বা কঠিন লড়াই নেই। আগে সিপিএমের সঙ্গে লড়েছি। এখন বিজেপির সঙ্গে লড়াই করছি। মাঝেমধ্যে ঢেউ আসে। তাতে অনেকে চলে যায়। আবার অনেকে ফিরে আসে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে নিয়ে কোন সমস্যা নেই। উনি তো এখনো তৃনমুল কংগ্রেসে আছেন। দলের বিধায়ক তিনি। আশা করি, তিনিও আমাদের পাশে থেকে লড়াই করবেন।


তবে, জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, আমাকে তো পদ থেকে সরানো হয়নি। আমি নিজেই জেলা সভাপতি ও আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক পদ ছেড়েছিলাম। জেলা কমিটিতে না থাকলেও দলে তো আছি। দলের কাজ করছি। দলের বিধায়কও তো আছি। এই কমিটির উপর আমার পুরো আস্থা আছে। আমি তাদেরকে সবরকম সহযোগিতা করবো।
যদিও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা এখনো নিশ্চিত নয় তার ব্যাপারে। তারা জিতেন্দ্র তেওয়ারির পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছেন।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *