রূপনারায়ণপুর কে পুরসভা করার দাবি, ডিএম কে চিঠি ভাবনার
বেঙ্গল মিরর,দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল: সালানপুর ব্লকের রূপনারায়ণপুর কে পুরসভা করার দাবি জানিয়ে জেলাশাসকের কাছে কিছুদিন আগেই স্মারকলিপি দিয়েছে এই অঞ্চলের সামাজিক সংগঠন ভাবনা। জেলাশাসক বিষয়টি নিয়ে উচ্চ মহলের জানাবেন বলে জানিয়েছেন।



উল্লেখ করা যেতে পারে সালানপুর ব্লকের এগারোটি পঞ্চায়েত দেড় লাখের বেশি মানুষ বাস করেন। এর সদর দপ্তর রুপনারায়নপুর। এই ব্লকের মধ্যেই আছে এশিয়ার বৃহত্তম রেল ইঞ্জিন কারখানা চিত্তরঞ্জন এবং অতীতে এখানেই দেশের প্রথম টেলিফোন তার তৈরীর কারখানা ছিল হিন্দুস্তান কেবলস ।বর্তমানে অবশ্য সেই কারখানাটি বন্ধ। পাশাপাশি এই এলাকায় দেন্দুয়া পঞ্চায়েত এরমধ্যেই ছোট-বড় মিলিয়ে ৬০ টির বেশি কারখানা তৈরি হয়েছে ।তাছাড়া বিদ্যুৎ দপ্তর এর সূত্র মারফত জানা যায় ছোট এবং মাঝারি শিল্প মিলিয়ে প্রায় ২০০ ইন্ডাস্ট্রিয়াল শিল্প সংক্রান্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া আছে।

অন্যদিকে এখানে দেশবন্ধু মহাবিদ্যালয় কলেজ আছে এবং রাজ্য সরকারের শতাধিক বিদ্যালয় আছে। এই অঞ্চলে অত্যন্ত নামি কাজী নজরুলের নামে পলিটেকনিক আছে। আছে আইটিআই । এর পাশাপাশি রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ একাধিক কয়লাখনি নিয়ে সালানপুর এরিয়া অফিস। এছাড়াও প্রায় তিন হাজারের বেশি দোকান ব্যবসার কাজে যুক্ত আছেন এমন ব্যবসায়ীরা আছেন। আছে একাধিক হাট। এখানে বিদ্যুৎ দপ্তর ২২ থেকে২৫ কোটি টাকার বেশি আয় করে যা কুলটি তুলনায় বেশি। তা সত্ত্বেও কেন এলাকা এতবছর পঞ্চায়েত রাখা হয়েছে ।
এ নিয়ে স্থানীয় সচেতন নাগরিক থেকে বুদ্ধিজীবীরা প্রশ্ন তুলেছেন ।তাদের দাবি এবারের স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নির্বাচনে এটাই অন্যতম ইস্যু হোক। জানা গেছে সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকাকালীন সেই সময় দুই বর্ধমান মিলিয়ে একটি বর্ধমান জেলা ছিল এবং পূর্ব বর্ধমানের সিপিএমের নেতারা সেখান থেকেই ছড়ি ঘোরাতেন। শিল্প এলাকা থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব পূর্ব বর্ধমানের কাজে লাগাতে স্বাভাবিকভাবেই এই এলাকাকে পুরসভা তারা কখনোই হতে দেননি ক্ষমতা হারানোর ভয়ে। এ নিয়ে কখনো দাবি তোলেন নিতারা।
উন্নয়নের পরিমাণ অনেক বাড়লেও পুরসভার যেসব সুযোগ-সুবিধা কিন্তু পাওয়া যায়নি
অন্যদিকে তৃণমূল প্রায় দশ বছর ক্ষমতায় থাকার পর উন্নয়নের পরিমাণ অনেক বাড়লেও পুরসভার যেসব সুযোগ-সুবিধা কিন্তু পাওয়া যায়নি ।তারাও কখনো এ দাবি তোলেন নি ।তবে বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগেই এই স্মারকলিপির কথা জানতে পেরে রুপনারায়নপুরে তাদের রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু প্রকাশ্যে জানান যদি বিজেপি আগামী দিনে ক্ষমতায় আসে তাহলে রুপনারায়নপুর কে নিয়ে তারা পৌরসভা গড়ে তুলবেন এবং পুরসভার সুবিধা দেবে ।পুরসভা হলে সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুবিধে রাজ্য সরকার তাদের থেকে প্রচুর পরিমাণ অর্থ পাঠায়।
এক্ষেত্রে একটি উদাহরণ ই যথেষ্ট স্বাধীনতার পর থেকে কুলটি পুরসভা এই প্রথম ২২৫ কোটি টাকা কেবলমাত্র জল প্রকল্পের জন্য পেয়েছে ।যাতে তারা বাড়ি বাড়ি মানুষকে জল পৌঁছে দিতে পেরেছেন ।উল্টোদিকে সালানপুর ব্লকের মূল সমস্যা কিন্তু জল। বিশেষ করে রুপনারায়নপুর এলাকায় একের পর এক আবাসন তৈরি হলেও জলের সংকট থেকে গিয়েছে।
রূপনারায়ণপুর এলাকা অথবা সালানপুর ব্লক নিয়ে পৃথক পুরসভা গঠনের জন্য দাবি জানানো হয়েছে
ভাবনার সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব মন্ডল এবং সভাপতি বিশ্বদেব ভট্টাচার্য এর পক্ষ থেকে জেলাশাসক কে দেওয়া ওই চিঠিতে এই সব যুক্তিকে সামনে রেখে শুধু রূপনারায়ণপুর এলাকা অথবা সালানপুর ব্লক নিয়ে পৃথক পুরসভা গঠনের জন্য দাবি জানানো হয়েছে । অনুরোধ করা হয়েছে যাতে বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্তর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া যায় ।এর প্রতিলিপি বিডিও কে আগেই দেয়া হয় বলে জানা গেছে। স্মরণ করা যেতে পারে রুপনারায়নপুর এর চেয়েও ছোট এলাকা নিয়ে এরা যে অনেক আগে থেকেই পৌরসভা তৈরি হয়েছে।