আসানসোল রেল স্টেশন কে “ইকো ফ্রেন্ডলি” জোন করতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা রেলের
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৩ জানুয়ারিঃ আসানসোল রেল স্টেশনকে ” ইকো ফ্রেন্ডলি ” বা ” পরিবেশ বান্ধব ” এর পাশাপাশি ” গ্রীন বাফার জোন “র তকমা দিতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রেল কতৃপক্ষ। একবারে সবুজ বা সবুজায়নের লক্ষ্যে বাগান তৈরী থেকে পরিবেশের কথা মাথায় দূষণ নিয়ন্ত্রণে মেশিনও বসানো হয়েছে।
আসানসোল রেল স্টেশন এর মধ্যে কি-কি হবে জেনে নিন
আসানসোল স্টেশন ও তার আশপাশের এলাকায় ছোট ও বড় বাগান তৈরী করা হয়েছে। সেই বাগানের পাশাপাশি গোটা স্টেশন এলাকায় গাছ লাগানো বা বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে রেলের তরফে। এরফলে পরিবেশ ও বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা গেছে অনেকটাই।
এছাড়াও আসানসোল স্টেশন চত্বরে বায়ো- গ্যাস প্ল্যান্ট, রেন ওয়াটার হারবেস্টিং বা বৃষ্টির জল ধরে রাখার সিস্টেম, ইনফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট, সোয়ারেজ ট্রিটমেন্ট ম্যানেজমেন্ট, রিসাইক্লিন অফ ওয়েষ্ট মেটেরিয়াল বা বর্জ্য পদার্থ ও সলিড ওয়েষ্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বসানোর কাজ চলছে। আসানসোল স্টেশন চত্বরে ইতিমধ্যে প্লাস্টিক কাটিং মেশিন বসানো হয়েছে।
এছাড়াও, আসানসোল স্টেশনের টিকিট সংরক্ষণ বা রিজার্ভেশন কাউন্টারের পাশে ” ই- ভেহিক্যালস চার্জিং ” পয়েন্ট বসানো হয়েছে। এরফলে স্টেশনে আসা মানুষদের যানবাহন রাখতে অনেক সুবিধা হবে বলে রেল আধিকারিকদের মত।
স্টেশন চত্বরে পার্কিং জোন একবারে নির্দিষ্ট করা আছে, যাতে সাধারণ মানুষের কোন সমস্যায় পড়তে না হয়। আলাদা পার্কিং জোন করা হয়েছে অটো রিক্সা, সাইকেল রিক্সা ও ব্যক্তিগত গাড়ি রাখার জন্য।
আসানসোল স্টেশন ভবনের মাথায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বোর্ড লাগানো হয়েছে। এরফলে স্টেশন চত্বর ও আশপাশের এলাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা সহজেই জানা যাবে। এর পাশাপাশি আসানসোল স্টেশনের রিটার্নিং রুমের ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে গরম জল সরবরাহ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, আসানসোল স্টেশন চত্বরে অক্সিজেন পার্কে সোলার লাইট বসানো হয়েছে। সেই লাইট কাজও করছে।
পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনে ৩ মেগাওয়াটের সোলার প্যানেল বসানোর একটা মেগা প্রজেক্টের অনুমোদন ইতিমধ্যেই রেল মন্ত্রক দিয়েছে। তার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৫১ কিলোওয়াটের সোলার প্যানেল বসানোর কাজ খুব তাড়াতাড়ি আসানসোল স্টেশন ভবনের ছাদে শুরু হবে।
আসানসোল স্টেশনে শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী ও দৃষ্টিহীন মানুষদের যাতে কোন সমস্যা ও অসুবিধার মধ্যে পড়তে না হয়, তার জন্য ব্রেইল পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে। যাতে তারা নিজেদের মতো করে রেলের কাছ থেকে পাওয়া পরিসেবা পেতে পারেন। রেলের এই জোনের মধ্যে আসানসোল স্টেশন চত্বরে ” রেস্টুরেন্ট – অন- হুইলস্ ” করা হয়েছে। যা একটি ইউনিক কনসেপ্ট।
সবমিলিয়ে রেল কতৃপক্ষের দাবি, খুব দ্রুত আসানসোল স্টেশন ” ইকো ফ্রেন্ডলি ” জোন হিসাবে চিহ্নিত হতে চলেছে। ইন্ডিয়ান গ্রীন বিল্ডিং কাউন্সিল সার্টিফিকেশনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই আসানসোল স্টেশন আইএসও ৯০০১, ১৪০০১ ও ৪৫০০১ এর মর্যাদা পেয়েছে। এই প্রসঙ্গে আসানসোলের ডিভিশনাল ম্যানেজার বা ডিআরএম সুমিত সরকার বলেন, আমরা সবাই একজোট হয়ে কাজ করে আসানসোল স্টেশনকে ইকো ফ্রেন্ডলি জোন করতে বদ্ধপরিকর।