বেআইনি কয়লা মামলা : লালা ও রত্নেশের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হবে ! জয়দেবের ঠিকানায় তল্লাশি
বিশেষ সিবিআই আদালতে আবেদন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৮ ফেব্রুয়ারিঃ কয়লা পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালা ও তার সঙ্গী রত্নেশ ভার্মা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে আবেদন করলো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এই আবেদনের বিষয়ে এদিন চূড়ান্ত কোন রায় দেওয়া না হলেও, ঐ মামলার তদন্তকারী অফিসার বা আইওর কাছ থেকে ” ইনভেন্ট্রি লিস্ট ” দুজনের সম্পত্তির যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে। অন্য়দিকে জয়দেবের ঠিকানায় তল্লাশি চলছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের একটি দল পুরুলিয়ার ভামুড়িয়ার বাড়িতে লালার খোঁজে যায়। যদিও, তাকে পাওয়া যায় নি।
প্রসঙ্গতঃ, বারবার নোটিশ দিয়ে ডেকে পাঠানোর পরে হাজিরা না দেওয়ায় বেআইনী কয়লা পাচারের মামলায় মুল চক্রী বা কিং পিন অনুপ মাজি ওরফে লালাকে ” এ্যাবসকন্ড ” বা ” ফেরার ” ঘোষণা করেছিলো আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত।
একই তকমা দেওয়া হয়ে ছিলো লালার অন্যতম সহযোগী রত্নেশ ভার্মাকে। গত ১১ জানুয়ারি ৮২ সেকশান বা ধারায় এই মর্মে একটি নোটিশ জারি করেছিলেন আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক জয়শ্রী বন্দোপাধ্যায়। নোটিশে বলা হয়েছিলো , আগামী ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দুজনকেই আসানসোল সিবিআই আদালতে হাজিরা দিতে হবে। এই সময়ের মধ্যে হাজিরা না দিলে, আইন মোতাবেক তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে।
গত ১৪ জানুয়ারি সেই নোটিশ প্রথমে সিবিআইয়ের ৯ জনের একটি দল পুরুলিয়ার নিতুরিয়ার ভামুরিয়াতে লালার বাড়ির দেওয়ালে লাগিয়া দিয়ে এসেছিলেন। একইভাবে, সেদিন সকালে সিবিআইয়ের ৪ জন অফিসারের একটি দল আসানসোলের কুলটির মিঠানির বড়তোড়িয়ায় রত্নেশ ভার্মার বাড়িতে আসে। সেখানেও সিবিআইয়ের অফিসাররা রত্নেশ ভার্মাকে পায়নি। সিবিআইয়ের অফিসাররা তাদের সঙ্গে কথা বলে রত্নেশের বাড়ির দেওয়ালে নোটিশ লাগিয়ে দিয়েছিলেন।
এই সময়ের মধ্যে সিবিআইয়ের অফিসাররা লালা ও তার সঙ্গীর কোন খোঁজ পায়নি।
কিন্তু, গত ১১ ফেব্রুয়ারি লালা ও রত্নেশ সিবিআই আদালতের জারি করা হুলিয়া ও গ্রেফতারি পরোয়ানাকে চ্যালেঞ্জ করে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে আপিল করে। তাদের হয়ে এদিন সিবিআই আদালতে বিচারক জয়শ্রী বন্দোপাধ্যায়ের সামনে সওয়াল করেন শেখর কুন্ডু, আবদুল রউফ ও কুনাল গাঙ্গুলি।
প্রথমে, আসানসোলের সিবিআই আদালত এই দুজনের নামে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলো। তাদেরকে নোটিশ দিয়ে সিবিআই নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠিয়েছিলো। তাদের বাড়ি ও অফিসেও সিবিআইয়ের অফিসাররা হানা দিয়েছিলো। কিন্তু তাদেরকে পায়নি সিবিআই। এতকিছুর পরেও তারা হাজিরা দেয়নি।
সময়মতো হাজিরা না দেওয়ায় আসানসোল সিবিআই আদালত জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পরে লালা ও তার সহযোগীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নোটিশ জারি করেছিলো।
প্রসঙ্গতঃ, এই মামলায় আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া ও দূর্গাপুরের একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সিবিআই হানা দিয়েছিলো। তার আগে, ইসিএলের আধিকারিকদের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি করেছে সিবিআই। চলতি মাসে আবার হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলায় রাজ্য পুলিশের সিআইডিও তদন্তে নেমেছে।