সিবিআই এর চাঞ্চল্যকর তথ্যের ভিত্তিতে, তিন জায়গার রেলকর্মী ও আধিকারিককে নোটিশ
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোলঃ রেলের সাইডিংয়ে কয়লা চুরি নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে সিবিআই এর চাঞ্চল্যকর তথ্যের ভিত্তিতে আসানসোল ডিভিশনে বারাবনি সহ তিন জায়গার রেলকর্মী ও আধিকারিককে নোটিশ দিয়ে ডেকে পাঠিয়েছে নিজাম প্লেসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। মঙ্গলবার এই নোটিশ পাঠানো হলেও রেলের তরফেই ওইসব কর্মী ও আধিকারিকদের বিভাগীয় প্রধান রা সকলেই কিছু জানিনা বলে এড়িয়ে গিয়েছেন।
জানা গেছে কয়েক মাস আগে বারাবনি রেলস্টেশনের কাছে চরনপুরে রেল সাইডিং প্রায় ১৮০০ টন কয়লা বুকিং হয়েছিল ওয়াগনে করে পাঠানোর জন্য। কিন্তু তদানীন্তন ইসিএলের শ্রীপুর এরিয়ারয়ার জেনারেল ম্যানেজার জে সি রাইর কাছে পৌঁছে যায় ঐ খবর। তিনি সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটি অফিসার এবং ইসিএলের আধিকারিকদের বারাবনির ঐ রেল সাইডিংয়ে পাঠান । তদন্ত করে জানা যায় যে এই কয়লা ইসিএলের ছিল না ।
এই কয়লার কোন কাগজপত্র সেই ব্যবসায়ী দেখাতে পারেননি যে রেলে বুক করেছিলেন। এরপরই রেল কর্তৃপক্ষের তরফে এবং ইসিএলের তরফে ব্যাপক টানাপোড়েন চলে ওই কয়লা নিয়ে এবং শেষ পর্যন্ত এই সমস্ত কয়লা যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪০থেকে ৫০ লক্ষ টাকা সেগুলি নিয়ে ইসিএল চলে যায় বারাবনি থানার পুলিশের উপস্থিতিতে। সেই সময়ে ই সি এলের ধারণা হয়েছিল শুধু বারাবনিতেই নয় একইভাবেই তাদের অন্যান্য যে রেল সাইডিং গুলি আছে সেখান থেকে হয়তো এই ধরনের অবৈধ কয়লা রেলের সহযোগিতায় পাচার হয়ে যাচ্ছে ভিন রাজ্যে। এই নিয়ে তখনকার সময় বারাবনি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ইসিএলের তরফে। সেই সময় এই সংবাদটি এই সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
সিবিআই কয়লা কেলেঙ্কারি তদন্তে নেমে জানতে পারে অবৈধ প্রচুর পরিমান কয়লা রেলের সাহায্য নিয়ে এভাবেই জাল কাগজ পত্রের মাধ্যমে অন্যত্র পাচার হয় কয়লা মাফিয়াদের সাহায্যে। ট্রাকের তুলনায় রেলওয়ে কয়লা পাঠালে খরচও কম। সেজন্য মাফিয়ারা রেলকেই ব্যবহার করত। তদন্তে নেমে সি বি আই এই কেলেঙ্কারির যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে এবং যারা রেলের এই ধরনের কাজের সাথে যুক্ত তেমন তিনজন আসানসোল ডিভিশনের রেলের কর্মী ও আধিকারিকদের ডেকে পাঠিয়েছেন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ।সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে এদের জিজ্ঞাসাবাদ করে শুধু এই লক্ষ লক্ষ টাকার কেলেঙ্কারি ধরা নয়, অবৈধ কয়লা রেলেরর মাধ্যমে কিভাবে পাচার হতো এবং তাতেই রেল ও কোলিয়ারির আধিকারিকদের কি ভূমিকা আছে সমস্ত তথ্য সামনে আসবে। খোঁজখবর করতে গিয়ে রেলের ওয়াগনের মাধ্যমে রানীগঞ্জ এবং আসানসোলের অন্য একটি সাইডিং থেকে কিভাবে বালি পাচার হতো তা নিয়েও খোঁজখবর শুরু হয়েছে বলে সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে।
লালার কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআই যে অভিযোগ প্রথমেই দায়ের করেছে তার মধ্যেই ইসিএলের দুই জেনারেল ম্যানেজার তিন সিকিউরিটি অফিসার এবং লালার নাম ছিল । প্রথম থেকেই তারা বলেছিল রেলের কর্মী এবং আধিকারিকরা এই কাজে যুক্ত ।এই নোটিশ পাওয়া তিন কর্মী ও আধিকারিকদের এরপর ঐ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই আরো নিশ্চিত হবে এবং তারপর তারা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।