জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ একাংশ নেতার
দুটি কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই কংগ্রেসের কোন্দল প্রকাশ্যে / দলের
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২১ মার্চঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার কুলটি ও বারাবনি বিধান সভার জন্য কংগ্রেস – বাম – আইএসএফের সংযুক্ত মোর্চার দুই কংগ্রেস প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হয়েছে রবিবার । বারাবনিতে সালানপুর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি রণেন্দ্রনাথ বাগচি ও কুলটিতে শ্রমিক নেতা চন্ডীদাস চট্টোপাধ্যায়কে প্রার্থী করা হয়েছে। প্রার্থী নাম ঘোষণা হতেই আসানসোল মহকুমায় কংগ্রেসের কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসে।



রবিবার বিকেলে কংগ্রেসের জেলা ও রাজ্যস্তরে কয়েকজন নেতা আসানসোলে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দলের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। কংগ্রেসের নেতারা অভিযোগ করে বলেন জেলা সভাপতি টাকার বিনিময়ে দলের প্রার্থীদের নাম সুপারিশ করেছেন।

তবে দলের বর্তমান জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করে বলেন, এর আগেও যখনই কংগ্রেস দলের তরপে টিকিট দেওয়া হয়েছে তখনই এইসব অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে তোলা হয়েছে। এইসব অভিযোগ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। যদি এই রকম অভিযোগ থেকে থাকে তাহলে যারা বলছেন, তারা প্রমান দিন। সেই প্রমাণের ভিত্তিতে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে দল। আসলে এইসব কথা ক্ষোভ ও অভিমান থেকে বলছেন ঐসব নেতারা।
এদিন আসানসোলের কংগ্রেস অফিসে সাংবাদিক সম্মেলনে যে তিন নেতা প্রার্থী নিয়ে অভিযোগ করেছেন তাদের মধ্যে একজন হলেন বারাবনি থেকে প্রার্থী হতে চাওয়া দলের রাজ্য সম্পাদক প্রসেনজিৎ পইতুন্ডি। কুলটি থেকে প্রার্থী হতে চাওয়া প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য জিতু সিং। অন্যজন হলেন প্রবীন নেতাদের প্রার্থী হওয়ার বিরোধিতা করে তার পরিবর্তে মহকুমার দুই কেন্দ্রে যুবদের প্রার্থীর দাবি করা দলের জেলা সম্পাদক শাহিদ পারভেজ।
প্রসেনজিৎবাবু বলেন, আমি প্রার্থী হতে চেয়ে নিজের বায়োডাটা দলের জেলা সভাপতির কাছে জমা দিতে গেছিলাম। সেদিন জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী আমাকে বলেছিলেন প্রার্থী হতে গেলে দলের জন্য এবার টাকা লাগবে। সেই টাকা আমি দিতে পারিনি। অথচ গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শুরু করে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার আন্দোলনে আমি দলের অন্যতম মুখ হয়ে সামনের সারিতে ছিলাম।
অন্যদিকে জিতু সিং বলেন, আমি শিখ ও সংখ্যালঘু তাই কুলটিতে দাঁড়ানোর সুযোগ ল দিতে চায় না দল। সেইনজন্যই এবার এমন একজনকে প্রার্থী করা হয়েছে যার মেয়েকে দল এর আগে একাধিকবার বিধানসভানও লোকসভায় প্রার্থী করেছিলো। প্রতিবারই তিনি হেরেছিলেন। এতে দলের ক্ষতি হয়েছে। আরো হবে।
প্রসেনজিৎবাবু আরো বলেন, আমরা সোমবারই এআইসিসি ও প্রদেশ সভাপতির কাছে এই বিষয়ে সব কিছু জানিয়ে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো। এতে দল যদি কোন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে সেক্ষেত্রে আমরা দলের অন্যদের সঙ্গে কথা বলে নির্দল প্রার্থী দেবো বা অন্য কি করবো সেটা সেটা ঠিক করব।
শাহিদ পরভেজ বলেন, যদি আমাদের কথা দল না শোনে তাহলে আমরা সে ক্ষেত্রে আসানসোল উত্তর বিধান সভা কেন্দ্রে আইএসএফের প্রার্থীকে সমর্থন করবো না। পাশাপাশি বিজেপির বিরোধিতা করতে অন্য যে ভালো তেমন প্রার্থীদেরই আমরা অন্যান্য জায়গায় সমর্থন করবো।
প্রসঙ্গতঃ, জেলা কংগ্রেসের সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীকে দল দূর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে।