পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে যুব তৃণমূল নেতা রিমান্ডে, তৃণমূল নেতার জেল হেফাজত
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। দলীয় অফিসে মীমাংসা করার সময় এক মহিলাকে মারধর করার অভিযোগে সালানপুর থানার কল্যানেশ্বরীর ফাঁড়ির অন্তর্গত দেন্দুয়া মোড়ের মাথায় যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক রাজা খানকে গ্রেফতার করে নিয়ে মুহূর্তে হঠাৎ করে পুলিশের গাড়ি দাঁড় করিয়ে তার বাবা বুড়া খানের নেতৃত্বে কর্মী সমর্থকরা রাজা খানকে গাড়ি থেকে ছিনিয়ে বাইরে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কল্যানেশ্বরী ফাঁড়ির ইনচার্জ অমরনাথ দাস ও আরেক পুলিশকর্মীর সঙ্গে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকের হাতাহাতি হয়।ঘটনায় মাটিতে পড়ে যায় তৃণমূল নেতা রাজা খান ও কল্যানেশ্বরী ফাঁড়ির ইনচার্জ অমর নাথ দাস।অবশেষে সালানপুর থানা থেকে পুলিশ বাহিনী এসে রাজা খানকে গ্রেফতার করে এবং রাজা খানের বাবা তথা সংখ্যালঘু সেলের টি এম সির ব্লক সভাপতি বুড়া খান ও তৃণমূল সমর্থক ভিকি সাউকে পরে পুলিশ গ্রেপ্তার করে । বৃহস্পতিবার এই তিনজনকেই আসানসোল আদালতে তোলা হলে রাজা খানকে তিন দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুড়া খান ও ভিকি সাউ কে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে সহকারী পুলিশ কমিশনার ওমর আলী মোল্লা জানিয়েছেন।
সূত্রে জানা যায় যে ঐ এলাকার রোহিত নুনিয়া নামক এক যুবক তার বন্ধু বাদল সিংহের নামে এক মোটর সাইকেল নেন। কিন্তু গাড়ির মালিকানা নিয়ে অসুবিধার জন্য দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়।কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে সেই ঝামেলার মীমাংসাটি কল্যানেশ্বরী টি এম সি আঞ্চলিক কমিটির দলীয় কার্যালয়ে হওয়ার সময় বাদল সিংহের মা,বাবা ও বোনের উপর হাত তোলেন তৃণমূল নেতা রাজা খান এমনি অভিযোগ করেন বাদল সিংহের বোন কাজল সিং। কিন্তু সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন তৃণমূল নেতা রাজা খান ও বুড়া খান। এরা দুজনেই বলেন তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে চক্রান্ত করা হচ্ছে।
এই অভিযোগ পাওয়ার পরে সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল নেতা রাজা খানকে খুঁজে গ্রেফতার করার পরে তাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই সময় দেন্দুয়ার কাছে তৃণমূল সমর্থক রা বুড়া খানের নেতৃত্বে পুলিশের গাড়ি আটকে রাজা খানকে গাড়ি থেকে বের করে নেয় এবং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতিতে কল্যানেশ্বরী ফাঁড়ির ওসি অমরনাথ দাস নিচে পড়ে যান। প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে এই দৃশ্য ওখানকার বাজার এলাকার বাসিন্দারা দেখেন। ওই এলাকায় যানজট তৈরি হয়ে যায়। এরপর সালানপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী এসে রাজা খানকে গ্রেফতার করে । তখন বুড়া খান সহ অন্যরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আসানসোলের দিকে। সালানপুর পুলিশ বুড়া খান এবং ভিকি সাউ কেও গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় জানিয়েছেন আইন আইনের পথে চলবে । পুলিশকে বলব তার সঠিক দায়িত্ব পালন করতে। অন্যদিকে গতকালের পুলিশের সঙ্গে তৃণমূল নেতা বুড়া খান ও যুব সম্পাদক রাজা খানের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনাকে ঘিরে সালানপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিজয় সিং বলেন তৃণমূল নেতা বা কর্মী যারা পাটির ঊর্ধ্বে গিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস করবে বা প্রশাসনের কাজে বাধা দেবে তাদের আমরা সমর্থন করিনা আর করবো না।তাছাড়া যে অভিযোগ শুনতে পাওয়া গেছে যে তারা মহিলাদের সঙ্গে পুলিশের সাথে হাতাহাতি করেছে তা নিন্দার বিষয়।
আমরা চাই পুলিশ নিজের কাজ করুক এবং দোষীদের উচিত শাস্তি দিক।গতকালের ঘটনাকে আমরা নিন্দা জানাই। আগামী দিনে পার্টি সব আলোচনা করে তাদের প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।