বিক্রির দাম ও পরিমাণের গরমিল, দুই অক্সিমিটার বিক্রেতাকে বর্ধমানের ড্রাগ কন্ট্রোল দপ্তরে ডেকে পাঠানো হলো
ওষুধের দোকানগুলিতে অভিযানে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও কন্ট্রোলার অফ ড্রাগস দপ্তর
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল: ওষুধ এবং অক্সিজেন সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি,অক্সিমিটার ইত্যাদির কালোবাজারির রুখতে আসানসোল শহরের রাহালেনের কাছে পাইকারি ওষুধ বিক্রেতাদের ওষুধের দোকানগুলিতে অভিযানে নামলো পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও কন্ট্রোলার অফ ড্রাগস দপ্তর। দুই অক্সিমিটার বিক্রেতাকে বর্ধমানের ড্রাগ কন্ট্রোল দপ্তরে ডেকে পাঠানো হলো বিক্রির দাম ও পরিমাণের গরমিল নিয়ে। করোনা আবহে অত্যাবশ্যকীয় ও জীবনদায়ি ওষুধের কৃত্রিম ঘাটতি ও কালোবাজারি আটকাতেই এই পদক্ষেপ জেলা প্রশাসন নিয়েছে বলে জানান হয়েছে ।
আসানসোল , কুলটি, রানীগঞ্জ ,রূপনারায়ণপুর থেকে শুরু করে জেলার সর্বত্রই সাধারণ মানুষ বারবার অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন যে, করোনা পজিটিভ হলে যেসব ওষুধ অত্যন্ত প্রয়োজন সেগুলি ওষুধের দোকানে সময়মতো পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি ভিটামিন সি, ডি ও জিংক বিশেষ ধরনের কাশির ওষুধ প্রয়োজনমতো মিলছে না। তার উপর অক্সিমিটার বা ফ্লোমিটার নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। কোথাও কোথাও মিললেও তা বেশি দামে মিলছে। যাতে কোনওভাবেই এই করোনার সময়ে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ কোন ঘাটতি ও কালোবাজারি না হয় তা খতিয়ে দেখতে আসানসোলের বেশ কয়েকটি পাইকারি ওষুধ বিক্রেতা দোকানে তারা হানা দেন। এরমধ্যে অক্সিমিটার বিক্রি করা দুই দোকানদারকে তারা নোটিশ দিয়ে বর্ধমানের ডেকে পাঠিয়েছেন ।
একজন কাগজে-কলমে ৯০০ টাকায় অক্সিমিটার কিনে বারোশো টাকা করে বিক্রি করছেন। কিভাবে এত লাভ করা হচ্ছে বা লাভের অনুপাত এর হিসেব কি এবং যাদের বিক্রি করা হয়েছে তার বিস্তারিত তালিকাসহ তাদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। অন্য আরেকটি দোকানে দেখা যাচ্ছে দুইশো অক্সিমিটার। তারা কিনেছিলেন। দেড়শ টা বিক্রি করেছেন।বাকি পঞ্চাশটির ক্ষেত্রে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এক্ষেত্রে যাবতীয় তথ্য নিয়ে তাকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে।
ড্রাগ কন্ট্রোলার বলেন আমাদের তদন্ত শুরু হওয়ার পরপরই লক্ষ্য করে দেখেছি বেশ কয়েকটি। ওষুধ মজুদ করা দোকানদার দোকান বন্ধ করে চলে গেছেন ।আমরা মনে করি নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে যথেষ্ট অপরাধপ্রবণতা আছে। তা না হলে তারা এই কাজ করতেন না ।তাই আমরা আবারও পুলিশ নিয়ে আজকের মতোই হানা দেব ওই সব জায়গায়। শুধু আসানসোল নয় পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশ কিছু জায়গায় ওষুধের কারবারিদের ক্ষেত্রে কিছু কিছু অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। সেগুলো আমরা তদন্ত শুরু করব জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে।এর আগে আসানসোলের জেলা হাসপাতাল সংলগ্ন চারটি ওষুধের দোকানেও তার হানা দিচ্ছিলেন।,
জেলা প্রশাসনের নজরদারিতে এই দলে নোডাল অফিসার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের ড্রাগ ইনস্পেক্টর রেজিউল আলম৷ তিনি বলেন, আমরা দুটি সার্জিকাল দোকান সহ মোট আটটি দোকানে এদিন তদন্ত করি। যারা অক্সিমিটার বিক্রি করছেন এমন দুটি দোকানদারকে সঠিক তথ্য সহ ডেকে পাঠানো হয়েছে এবং আমাদের তদন্তের সময় বেশ কিছু দোকান বন্ধ করে দোকানদাররা চলে গিয়েছিলেন। আমরা আবার এসব জায়গায় তদন্ত করব ।বাজারে ওষুধের মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে যে কোনও প্রকার সহযোগিতা ও ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে৷ কোথাও করোনার প্রয়োজনীয় কোনও ওষুধের ঘাটতি আমাদের চোখে পড়েনি।জেলা প্রশাসন সূত্রে আরো জানা গেছে, এই অভিযানে কোন দোকানদারের বিরুদ্ধে কালোবাজারি ও আইন ভঙ্গ করার প্রমান পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।