দেড়মাসের মধ্যে দুই বোনের রহস্যজনক মৃত্যুতে বার্ণপুরে চাঞ্চল্য, দাদাকে আটক, তদন্তে পুলিশ
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ২৬ মেঃ দেড়মাসের মধ্যে দুই অবিবাহিত বোনের মৃত্যুর ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসায় বুধবার সকালে আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্ণপুরের সাঁতাডাঙ্গার সারদাপল্লীতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে , এদিন সকালে গাড়িতে করে এক বোনের মৃতদেহ শ্মশানে সৎকারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলো দাদা। সেই সময় প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে হিরাপুর থানার পুলিশ এলাকায় আসে। পরে পুলিশ সেই মৃতদেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। সেইসঙ্গে মৃতার দাদাকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়।




পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মৃতার নাম সোমা ওরফে সীমা পাল (৫২)। সোমা পালের কাকার ছেলে অর্থাৎ মৃতার খুড়তুতো ভাই প্রণব পাল এদিন বলেন, জ্যাঠা প্রভাকর পালের এক ছেলে ও দুই মেয়ে সাঁতাডাঙ্গায় তিনতলা বাড়িতে থাকে। বিধান পাল, শম্পা পাল ও সোমা পাল তিনজনই অবিবাহিত। প্রায় দেড়মাস আগে গত ১৪ এপ্রিল এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানতে পারি বড় মেয়ে শম্পা পাল মারা যায়। বিধান কাউকে কিছু না জানিয়ে গভীর রাতে গাড়ি করে তার মৃতদেহ নিয়ে চলে যায়। খবর শুনে বিধান পালকে জিজ্ঞেস করাতে প্রতিবেশীদের সে জানিয়ছিলো শম্পা নিখোঁজ। তার কোন খবর নেই। আবার পরে বিধান বলেছিল সে মারা গেছে।
বুধবার সকালে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে প্রনব পাল খবর পায় যে, বিধানের বাড়ির সামনে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয় যে, সেই গাড়িতে কোন মৃতদেহ তোলা হবে । খবর পেয়ে আমি আসি ও দেখি সোমা পালের মৃতদেহ গাড়িতে তোলা হচ্ছে। এরপর এলাকার বাসিন্দা ও প্রনব পাল সেই গাড়ি আটকে হিরাপুর থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ আসে। মৃতার দাদা বিধান চন্দ্র পাল তখন বলে বোন অসুস্থ ছিলো ঘরে মারা গেছে। কিন্তু এর চেয়ে বেশি কিছু বলেনি ।
প্রনব পাল বলেন, আসল কথা হলো কোন কাজকর্ম বিধান করে না। সে অনলাইনে জুয়া খেলে। দেড়মাসের মধ্যে আমার দুই দিদির মৃত্যু হতে পারে না । টাকার কারনে বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে দেওয়ার জন্যই তাদেরে মেরে ফেলতে পারে বলে মনে করেন প্রনব পাল। তার দাবি, মৃত্যুর কারণ জানতে দেহর ময়নাতদন্ত করা হোক। তারপর পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। হিরাপুর থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায় ও বিধান পালকে আটক করে নিয়ে যায়।
দেড়মাসের মধ্যে দুই বোনের রহস্যজনক মৃতুতে উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা। জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে জানা গেছে, শ্বাসরোধের কারণে মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তাকে মারা হয়ে থাকতে পারে। যদিও পুলিশের কাছে বিধান পাল দাবি করেন, তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। তার বোনের মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। তার ডেথ সার্টিফিকেটও আছে
হিরাপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, বিধান পালকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। সেই রিপোর্ট হাতে এলেই অভিযোগ মতো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।