ASANSOLBARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

দুই মাস ধরে সালানপুর ব্লকের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে কোনও শিশুই খাবার পেল না

বেঙ্গল মিরর, কাজল মিত্র :- সালানপুর ব্লকের কোনও শিশুই খাবার পেল না অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র (আইসিডিএস)থেকে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে রাজ্যে আইসিডিএসে ছুটি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপভোক্তাদের বাড়িতে চাল-আলু পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন। কিন্তু বিগত দুইমাস ধরে কোনও উপভোক্তাই খাবার পায়নি।
ব্লকের সিডিপিও মনদিপা মাজি জানান মেলেনি সরকারি নির্দেশিকা।তাই সরকারি নির্দেশিকা হাতে না পেলে এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।
কেউ কেউ শুকনো খাবার বিলি নিয়ে বিভ্রান্তিতেও রয়েছেন।
“অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি বন্ধ থাকবে, এটা রাজ্যস্তরের নীতি। উপভোক্তাদের খাবার পৌঁছনো সংক্রান্ত নির্দেশিকা খুব শীঘ্রই এসে যাবে।”

রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেক উপভোক্তা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও আইসিডিএস কেন্দ্র গুলিতে খাবার না-মেলায় ক্ষুব্ধ বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উপভোক্তা ।
সালানপুর ব্লকের টাবাডি আদিবাসীপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উপভোক্তা এক শিশুর মা পানু মুর্মু বলেন,
এই স্কুলে লকডাউন এর পর থেকে দুই একমাস শুকনো খাবার মিললেও আর কোন খাবার মেলেনি ।আগে চাল ,ডাল, সোয়াবিন আলু দিত এখন প্রায় ছয় সাত মাস হল তাও পাইনা ।
এমনই মল্লাডি আদিবাসি পাড়ার অঙ্গনবাড়ী শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের ক্লাস ওয়ান এর এক ছাত্রী অর্পিতা টুডু বলে সে আজ প্রায় বহুদিন স্কুলে যায়নি তাছাড়া তাদের যে শুকনো খাবার দেওয়া হত তাও এখন বন্ধ ।
গ্রামের এর ছাত্রের পিতা শ্যামলাল মুর্মু জানান বাচ্চাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এই আইসিডিএস কেন্দ্র যেমন বন্ধ রাখা হল, তেমনই খাবারের নিশ্চয়তার ও শিশুদের পুষ্টির বিকাশের দিকটাও খেয়াল রাখা উচিত ছিল। আমাদের তো এখন নতুন করে পুষ্টিকর খাবার জোগাতে সমস্যা হবে।

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে ০-৫ বছর পর্যন্ত শিশুদের পড়াশোনা করানো হয়। ওই সব শিশু, তাদের মা এবং গর্ভবতী মহিলাদের রান্না করা পুষ্টিকর খাবার (ডিমের ঝোল-ভাত, সয়াবিন দিয়ে খিচুড়ি, পৌষ্টিক লাড্ডু ইত্যাদি) দেওয়া হয়।
সালানপুর ব্লকে মোট 244
টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে যার মধ্যে কয়েক হাজার শিশু, গর্ভবতী এবং প্রসূতি মা রয়েছে ।এর মধ্যে শিশুর সংখ্যাই সাত হাজারের কিছু বেশি। প্রশাসনের একটি সূত্রের হিসেবে, ব্লকপিছু গড়ে ৬-৮টি চরম অপুষ্ট শিশু আছে। মাঝারি অপুষ্ট শিশু আছে গড়ে ১০-১২টি। সেই সংখ্যা শূন্যতে নামিয়ে আনতে জেলা জুড়ে বিশেষ উদ্যোগ চলছিল। কিন্তু করোনার কোপে সেই প্রয়াস ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিকেরা। শিশু এবং মায়েদের ডাক্তারি পরীক্ষার কী হবে, সে প্রশ্নও রয়েছে।

তাছাড়া ‘সেইসব উপভোক্তা ও মায়েরা পুনরায় শুকনো খাবার’ কবে পাবে আদৌ পাবে কিনা সেই আসায় দিন গুনছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *