শিক্ষাদপ্তর মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে অভিভাবকদের পরামর্শ চেয়েছে, আসনসোলর শিক্ষক বিশ্বনাথ মিত্র লিখেছেন চিঠি
মাননীয়
প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারী মহোদয় সমীপেষু,
স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট,
বিকাশ ভবন, কলিকাতা-700091
REF : আপনার পত্র নং 59-SSE/2021 তা. : 06/6/2021
মাননীয় মহাশয়,
সবিনয় নিবেদন এই যে, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাড়িতে বসেই অনলাইনে নেওয়া যাবে— পঃ বঙ্গ সরকার নিযুক্ত বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের সুপারিশ রাজ্য সরকার ( শিক্ষা দপ্তর ) কে দিয়েছেন ৷ কিন্তু আমার মতে এই পদ্ধতি আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় পরীক্ষার্থীদের সঠিক মূল্যায়ণ একেবারে অসম্ভব শুধু নয়, এতে মেধাবী এবং মনোযোগী পরীক্ষার্থীদের পক্ষে চরম অবিচার করা হবে ৷
একটি উদাহরণের মাধ্যমে ধরা যাক, একজন মেধাসম্পন্ন এবং মনোযোগী পরীক্ষার্থী সততার সঙ্গে অনলাইনে পরীক্ষা দিল এবং পরীক্ষার ফলাফলে তার প্রাপ্ত মোট নম্বর অর্জিত হল ৯৪ % নম্বর ৷ পাশাপাশি ধরা যাক অন্য একজন সাধারণ মানের পরীক্ষার্থী অনলাইনে পরীক্ষা দেবার সময় পুরোদস্তুর অসৎ উপায় পদ্ধতি অবলম্বন করল বা সাহায্য নিল অন্য কারোর ৷ এবং মোট নম্বর পেল ৯৫ % ৷
এখানেই শেষ নয়, কোভিডের এই প্যানডামিক পিরিয়ডে নম্বরের ভিত্তিতে উচ্চতর শিক্ষার মাপকাঠি হলে ( এই সম্ভবনাই প্রবল ), সেক্ষেত্রে ভর্তির সুযোগ লাভ করবে উপরিউক্ত অসদুপায়ে বেশি নম্বর পাওয়া পড়ুয়াটি ৷ এ ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত অনেক ভাল ছেলে/মেয়েটি শুধু নিজে অন্ধকারে নিমজ্জিত হল তাই নয়, সমাজও ভবিষতে বঞ্চিত হবে একটি উন্নত মেধার পরিষেবা থেকে ৷
এই পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নলিখিত 15 দফা আমার প্রস্তাব :
- পরীক্ষার নম্বর এবং সময়সীমা ন্যুনতম 50% কম রাখতে হবে ৷
- হোম সেন্টার করার পাশাপাশি পরীক্ষায় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে Invigilators দের অন্য স্কুলে গার্ড দেবার কথা ভাবা যেতে পারে ৷
- যেদিন পরীক্ষা হবে সেদিন যেন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অত্যাবশ্যকীয় ক্ষেত্র ব্যতিত সম্পূর্ণ লকডাউন হয় সর্বত্র ৷
- শুধুমাত্র পরীক্ষার্থীদের জন্যই শুধুমাত্র পর্যাপ্ত বাস বা অন্যান্য যানবাহন চালাতে হবে ৷ দরকারে স্পেশাল ট্রেনও ৷ প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট বাস/যানবাহন এবং ট্রেনগুলিকে সম্পূর্ণ জীবানুমুক্ত করতে হবে ৷
- পরীক্ষার কেন্দ্র যথেষ্ট বাড়াতে হবে ৷
- একটি পরীক্ষার সেন্টারে কেবলমাত্র একটি বিদ্যালয়েরই ছাত্র/ছাত্রীর পরীক্ষা দেবার আয়োজন রাখতে হবে ৷
- পরীক্ষার কেন্দ্রগুলিকে যথাযথভাবে প্রতিদিনই স্যানিটাইজেশন করতে হবে ৷ পরীক্ষার্থীদের স্যানিটাইজেশন এবং মাস্ক সংশ্লিষ্ট বোর্ড থেকে সরবরাহ করতে হবে ৷
- প্রতি পরিক্ষার্থীর জন্য MINERAL WATER Bottle সরবরাহ করতে হবে ৷
- অন্যান্য কোভিড বিধি অবশ্যই কড়াভাবে প্রয়োগ করতে হবে ৷
- এছাড়া যদি কোন কোভিড লক্ষণাযুক্ত বা আক্রান্ত রোগী ( স্টুডেন্ট ) থাকে অথবা সন্দেহভাজন হয়, তাদের জন্য আলাদা আলাদা ঘর বরাদ্দ রাখতে হবে ৷
- প্রতিদিন পরীক্ষা নিতে হবে অথবা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরীক্ষাটি সুসম্পন্ন করা একান্ত প্রয়োজন ৷
- মূল বিষয়গুলিই ওপর পরীক্ষা নেওয়া দরকার ৷
- পরীক্ষার্থীদের কোভিড ভ্যাক্সিন টিকাকরণ করলে সর্বোকৃৃষ্ট পদক্ষেপ হবে ৷
- প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষক বা শিক্ষাদপ্তরের প্রতিনিধি ছাড়াও যথেষ্ট সংখ্যায় আধিকারিকবর্গকে নিযুক্ত করতে হবে ৷
- পরীক্ষাকেন্দ্র চত্বরে অভিভাবক/অভিভাবিকা সহ বহিরাগতদের ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ৷
মনে রাখতে হবে, যারা পরীক্ষা দিতে আসছে, তাদের স্বাস্থ্যরক্ষায় যেন কোনরকম গাফিলতি না হয় ৷
ধন্যবাদান্তে,
বিনীত
বিশ্বনাথ মিত্র
শিক্ষক
পূর্ব রেলওয়ে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আসানসোল ৷
জি. টি. রোড,
আসানসোল-713301
Ph.no. 7908907537/9434678451
সারা বছর প্রচুর ছাত্রছাত্রী ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও পড়াশুনো করতে পারেনি। Internet এর অসুবিধা, মোবাইল ল্যাপটপ না থাকা, আর্থিক অবস্থা, covid এর আক্রমণ, সব কিছু কে অতিক্রম করে বেশীরভাগ ছাত্রছাত্রী পড়তে পারেনি। দয়া করে সবদিক টা ভেবে দেখুন। কিছু সংখ্যক ছেলে মেয়ে কে দেখে পুরো বাংলার সবার অবস্থা বিচার করা সম্ভব নয়। স্কুল এ আপনি আদর্শ ছিলেন আমাদের, আপনি ভাবতেন সবার কথা, তাই এখনও চাই নিরপেক্ষ বিচার করুন। সবার কথা ভেবে উচ্চ মাধ্যমিক বাতিল করা হোক। সিবিএসসি বাতিল করার পর আমাদের বোর্ড ক্যান্সেল নাহ করলে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আমরা পিছিয়ে যাবো, কারণ স্বাভাবিক ভাবেই ওরা অনেক বেশি সময় পাবে আমাদের থেকে। বাংলা সব দিক দিয়ে পিছিয়ে যাবে। যারা পড়াশুনো করতে পারেনি তাদের মূল্যায়ন কিসের পরিপ্রেক্ষিতে হবে? দেশ অনেক ভালো ছাত্রছাত্রী কে হারাবে। তাই চাই, aptitude tests নেওয়া হোক। ব্রেইন পাওয়ার দেখা হোক, ১২ এর সিলেবাস এ যেনো পরীক্ষা না হয়