ASANSOLBengali News

এটিএম প্রতারণা চক্রের চার পান্ডাকে ধরলো দক্ষিণ থানার পুলিশ, উদ্ধার ২ লক্ষাধিক টাকা, মোবাইল ও পেটিএম কার্ড

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ১ জুলাইঃ আবার আসানসোলে এটিএম প্রতারণা চক্রের হদিশ। একইসঙ্গে প্রকাশ্যে চলে এলো ঝাড়খণ্ডের কুখ্যাত ” জামতাড়া গ্যাং ” র সক্রিয় হওয়ার যোগ। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ এই চক্রের ৪ জনকে গত মঙ্গলবার ২৯ জুন রাতে গ্রেফতার করেছে। ৪ জনের মধ্যে তিনজন ঝাড়খন্ডের দেওঘর ও একজন বিদ্যাসাগরের বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ধৃতদের নাম হলো শাহাবাজ আনসারি, কামরুদ্দিন আনসারি, মহঃ আবিদ আনসারি ও ইসমাইল আনসারি। বুধবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে ৭ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন।

তবে এই চক্রের মুল মাথা বা মাস্টার মাইন্ড জামতাড়ার দেওঘরের বাসিন্দা ফুরকান আনসারিকে পুলিশ ধরতে পারেনি। বর্তমানে আসানসোল দক্ষিণ থানায় থাকা ৪ জনকে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি ( সেন্ট্রাল) ডাঃ কুলদীপ সহ সাইবার ক্রাইম সেলের অফিসাররা জেরা করে ফুরকানের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করছে। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ একটি ব্যাগের মধ্যে থাকা নগদ ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, ৬ টি মোবাইল ফোন, ২০টি বিভিন্ন নম্বরের পেটিএমের ডেবিট কার্ড পেয়েছে।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশের একটি গাড়ি আসানসোলের ডিআরএম অফিস রোডে টহল দিচ্ছিলো। সেই গাড়িতে থাকা পুলিশ কর্মীরা লক্ষ্য করেন ডিআরএম অফিস সংলগ্ন একটি রাষ্ট্রায়ত্ব এটিএমের সামনে ৪ জন যুবক সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করছে। তাদের সঙ্গে একটা ব্যাগ রয়েছে। পুলিশের গাড়িটি তাদের কাছে যেতেই ৪ জন পালাতে শুরু করে। পুলিশ কর্মীরা পিছু ধাওয়া করে ৪ জনকে ধরে ফেলেন। থানায় এনে ৪ জনকে জেরা করা ও তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও পেটিএমের ডেবিট কার্ড পেতেই পুলিশ বুঝতে পারে এরা সাইবার ক্রাইমের অপরাধী। জেরায় পুলিশ বুঝতে পারে, এরা জামতাড়া গ্যায়ের সদস্য।


ধৃতরা জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, এরা মুলতঃ আসানসোল শহরে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন এটিএম থেকে পেটিএমের ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা তুলতো। সকালে জামতাড়া থেকে এসে টাকা তুলে রাতে আবার গাড়ি বা ট্রেনে জামতাড়া ফিরে যেতো। মঙ্গলবার রাতে সেই কারণেই এই ৪ জন ডিআরএম অফিসের রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছিলো। তখনই তারা পুলিশের নজরে পড়ে। এই চক্রের মুল মাথা বা মাস্টার মাইন্ড হলো ফুরকান আনসারি। সেই এদেরকে ফোনে পেটিএমের ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা তোলার জন্য বলতো। পেটিএমের ডেবিট কার্ডে ব্যবহার করা মোবাইলের সিমগুলি এরা কলকাতা থেকে আনতো। ভুয়ো বা জাল কাগজ দিয়ে সেগুলো তারা নিতো। এই ৪ জনের কাজ ছিলো শুধু এটিএম থেকে টাকা তোলা। তারজন্য তারা ৫% কমিশন পেতো। এদের মাথায় ছিলো প্রতারণা চক্রের আসল লোক। তারা ফোন করে বিভিন্ন জনকে নানা অছিলায় ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত তথ্য হাতাতো। তারপর টাকা ট্রান্সফার করতো। সেই টাকা পরের মুহুর্তে এই ৪ জনকে দিয়ে এটিএম থেকে তুলিয়ে নিতো।

রেললাইন থেকে উদ্ধার হল স্বামী ও স্ত্রীর মৃতদেহ 


পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, এই চারজনকে জেরা করে একটা বড় চক্রের হদিশ পাওয়া যাবে। কতদিন ধরে এরা আসানসোলে এসে এই কাজ করছে, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে, পুলিশের অনুমান, লকডাউনের কারণে এদের সক্রিয়তা বেড়েছে।
প্রসঙ্গতঃ, বেশ কিছু দিন আগে সালানপুরের রুপনারায়নপুর ফাঁড়ির পুলিশ এই রকম একটি চক্রের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছিলো। তাদের কাছ থেকেও কয়েক লক্ষ টাকা ও এটিএম কার্ড পুলিশ পেয়েছিলো। পুলিশ তখন তাদের জেরা করে একই গল্প পায়।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *