পুলিশ হেফাজতে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ, রনক্ষেত্র বরাকর, ফাঁড়িতে ভাঙ্গচুর, গাড়িতে আগুন, ইটবৃষ্টি, দুই এসআই সাসপেন্ড
বেঙ্গল মিরর ,রাজা বন্দোপাধ্যায় ও কাজল মিত্র, আসানসোল ও বরাকর, ৬ জুলাইঃ চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা এক যুবকের পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে রনক্ষেত্র হয়ে উঠলো আসানসোলের কুলটি থানার বরাকর। মৃত যুবকের নাম মহঃ আরমান আনসারি (২৮)। মৃত যুবকের বাড়ি বরাকর এলাকায়। এদিন সকালে আরমানের মৃত্যু খবর ছড়িয়ে পড়তেই পরিবারের সদস্য ও এলাকার বাসিন্দারা বরাকর ফাঁড়ির সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
তাদের অভিযোগ, পুলিশের মারধরে আরমানের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। উত্তেজিত জনতারা ফাঁড়ি লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি করে। একটি গাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। মুহুর্তে গোটা এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠে। গন্ডগোলের খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী বরাকর ফাঁড়িতে আসে। নামানো হয় রেফ ও কমব্যাট ফোর্স। দাবি পূরণ না হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত আরমানের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়নি।
এই ঘটনায় এদিন সকালে আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর জানান, বরাকর ফাঁড়ির ইনচার্জ সহ দুজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।
জানা গেছে, মহঃ আরমান আনসারি সহ দুজনকে একটি চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুলটি থানার বরাকর ফাঁড়ির পুলিশ সোমবার রাত বারোটা নাগাদ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। রাত দুটোর সময় ফাঁড়ি থেকে তাকে কুলটি থানার লকআপে এনে রাখা হয়। মঙ্গলবার সকালে থানার এক সাফাই কর্মী লকআপে এসে দেখে, আরমান অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছে। থানার এক পুলিশ অফিসার সঙ্গে সঙ্গে ঐ যুবককে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন৷
ঐ যুবকের মৃত্যর ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বরাকর এলাকার বাসিন্দারা বরাকর রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। একই সঙ্গে বরাকর ফাড়ির পুলিশের গাড়ি ও ফাঁড়িতে ভাঙচুর করা হয়। একটি গাড়ি ও দুটি মোটরসাইকেলে আগুন লাগানো হয়। ইট ছোঁড়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়।
পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার ঠাকুর বলেন, পুলিসি হেফাজতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় বরাকর ফাঁড়ির আধিকারিক ইনচার্জ অমরনাথ দাস ও কুলটি থানার এসআই প্রশান্ত কুমার পালকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। পরিবার ও এলাকাবাসিন্দাদের অভিযোগ পুলিশ জিজ্ঞসাবাদের নামে বরাকর ফাঁড়িতে নিয়ে এসে পুলিশ মারধর করায় তার মৃত্যু হয়েছে।