জেলাজুড়ে তৃনমূলের বিক্ষোভ, শামিল হন মন্ত্রী থেকে বিধায়ক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ২০২৪ সালে দেশের উন্নয়ন হবে
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : আসানসোল পুরনিগমের সামনে শনিবার আসানসোল উত্তর বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পণ্যগুলির দাম ক্রমাগত বাড়ছে। এর জন্য রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় এদিন ধর্না ও বিক্ষোভ কর্মসূচি হচ্ছে।
আসানসোলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক। তিনি বলেন,” পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম দিন দিন বাড়ছে।এতে সমস্ত জিনিসের দাম বাড়ছে, যা সাধারণ মানুষকে ভীষণ সমস্যায় ফেলেছে। তিনি আরো বলেন, পেট্রোল ও ডিজেলের দাম না কমা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের ভুল নীতির কারণে দাম বাড়ছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে অবিলম্বে দেশ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। মানুষ করোনার মহামারীতে সমস্যায় পড়েছেন। তাই আন্দোলন করতে রাস্তায় না বেরোলেও এই পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ ভীষণ ক্ষুব্ধ। গত ১০ বছরের রাজ্য সরকারের কাজ ও সাফল্য তুলে ধরার সঙ্গেই তিনি সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কেও বলেন। পাশাপাশি বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র সমালোচনা করেন মলয় ঘটক। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের উন্নয়ন করছেন। সেই রকম ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ২০২৪ সালে দেশের উন্নয়ন হবে। সরাসরি না বললেও মলয় ঘটক আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তা আকার ইঙ্গিতে তিনি বুঝিয়ে দেন।
মলয় ঘটক, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। । তিনি বলেন, এই কেন্দ্র সরকার রেল বিক্রি করে দিচ্ছে। সেল বিক্রি করে দিচ্ছে। ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের নামে ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দিচ্ছে। দেশ বাঁচাতে গেলে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। “
এদিনের অবস্থান বিক্ষোভে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য অভিজিৎ ঘটক বলেন, “পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। কিন্তু কেন্দ্র সরকার নির্বিকার। প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন পৃথিবীতে সবচাইতে বেশি পেট্রোলের দাম ভারতবর্ষে। ৫৬ ইঞ্চি ছাতিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী প্রতি লিটার পেট্রোলে ৫৬ টাকা করে ট্যাক্স কেটে নিয়ে যাচ্ছেন এবং মানুষকে সমস্যায় ফেলছেন। অভিজিৎ ঘটক কেন্দ্র সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী গঙ্গা সাফ করবার জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা ধার্য করেছিলেন কিন্তু এত বছর পেরিয়ে গেলেও গঙ্গা সাফ হলো না কিন্তু ২০ হাজার কোটি টাকা সাপ হয়ে গেল।
কেন্দ্র সরকার ঠিকমতো ভ্যাকসিন বন্টন করতে পারছেন না যার জন্য কেন্দ্র সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে ইস্তফা দিতে হয়। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ভারতবর্ষের প্রথম একটি মন্ত্রিসভার ৮০ শতাংশ মন্ত্রী কে বদলে দিতে হল। কিন্তু ভারতবর্ষের মানুষ মূর্খ নয় তারা জানেন এই ব্যর্থতা আসলে কার এই ব্যর্থতা প্রধানমন্ত্রী তাই তাকে সবার আগে ইস্তফা দেওয়া দরকার।”
আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রাও কঠিন হয়ে পড়েছে। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েই চলেছে। পেট্রোল আজ ১০০ টাকার গণ্ডি পেরিয়েছে। মানুষের উন্নয়নের জন্য যদি কোনো দল ভাবে তা একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া আর কেউ নয়।”
এই অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচিতে , আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য পূর্ণশশী রায়, দিব্যেন্দু ভগত, মীর হাসিম, তৃণমূল কংগ্রেস নর্থ ব্লকের ১ সভাপতি গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় , মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী আলপনা বন্দোপাধ্যায় , প্রাক্তন বোরো চেয়ারম্যান অনিমেষ দাস, আকাশ মুখোপাধ্যায় , অশোক বোস, ভানু বোস, শম্পা দাঁ ওরফে কোনার , প্রাক্তন কাউন্সিলর উমা সরাফ ও শিখা ঘটক, রীনা মুখোপাধ্যায় , সৈয়দ আফরোজ, প্রবাল বোস, মনোজ রজক, ফানসবি আলিয়া, সদ্য তৃণমূলে যোগদানকারী বিজেপি নেতা মদন চৌবে, ড: দেবাশীষ সরকার সহ অন্যান্য নেতা ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
একই সময়ে, যুব তৃণমূল কংগ্রেস পেট্রোল পাম্পগুলিতে একটি গনস্বাক্ষর অভিযান চালায়। আশ্রম মোড় পেট্রোল পাম্পে রাজ্য টিএমসির সাধারণ সম্পাদক ববিতা দাস, জেলা সম্পাদক বিশ্বরূপ গাঙ্গুলি, দেবব্রত সরকারের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল।
রাজ্য টিএমসির সেক্রেটারি ভি. শিবদাসন দাসু আসানসোল দক্ষিণের কালীপাহারী ও ডামরায় আন্দোলনে যোগ দিলেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণ জনগণকে নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়। সরকার কেবল কয়েকটি পুঁজিপতিদেরই চিন্তা করে। কালীপাহাড়ি ও ডামরাতে
টিএমসির নেতৃবৃন্দ বাদল মিশ্র, প্রমোদ সিং, মনোজ হাজরা, সমীর চটরাজ, নিতাই নাগ, সঞ্জয় রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
অন্যদিকে, আসানসোলের ২ নং জাতীয় সড়কের জুবিলি মোড়ে এদিন আসানসোল উত্তর বিধানসভা ব্লক ২ এর পক্ষ থেকে
পেট্রল, ডিজেল, ও রান্নার মূল্যবৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় সরকারের জন বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে
বিক্ষোভ দেখানো হয়।
পান্ডেশ্বরে বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।
পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে বারাবনি নিতে তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান-বিক্ষোভ:-
কাজল মিত্র :-বারাবনি বিধানসভার অন্তর্গত গৌড়ান্ড হাট তলায় শনিবার বারাবনি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং দৈনিক জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ একটি অবস্থান বিক্ষোভ আয়োজন করা হয়েছে।এই দিন হাটতলায় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে বারাবনি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা পরিষদের সদস্য অসিত সিংহ বলেন যে সারা দেশে মানুষ এখন হাহাকার করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নিজের খেয়াল-খুশি মত পেট্রোল ডিজেল সহ ভোজ্যতেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যেভাবে মূল্য বৃদ্ধি করছে তাতে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।এবং তিনি এও বলেন যারা এখনো পর্যন্ত বিজেপি বিজেপি নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহ দের গুন গাইছেন এবং বিজেপির পার্টি করছেন।
এই মূল্যবৃদ্ধি তো তাদের ভাতের হাড়িতে ছাপ ফেলেছে এখনো আপনারা বুঝতে পারছেন না কতদূর দিন আসতে চলেছে। তাই এখনো সময় আছে এই অত্যাচারী সরকারকে ২০২৪ সালে এ উৎখাত করে বাইরে ফেলে দিন।তিনি আরো বলেন যখন কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার ছিল তখন বিশ্ববাজারে ডিজেল পেট্রোলের দাম ৭৫ টাকা প্রতি ব্যারেল হিসাবে দাম পরত কিন্তু পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির হয়নি অথচ বর্তমানে শুধু ৭৫ টাকা প্রতি ব্যারেল হওয়া সত্ত্বেও পেট্রোল ডিজেল ১০০ টাকা পার করে গিয়েছে।তাই এখনো সময় আছে নিজেরা চিন্তা করুন কি করবেন।এই বিক্ষোভ সমাবেশে অসিত সিংহের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, জাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কেশব রাউত,পানুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বজিৎ সিংহ,পানুডিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আশিস মণ্ডল,গোলাম মোর্তোজা,আবু তালিব আনসারী,বিশ্বজিৎ রায় সহ আরো অনেকে।