ASANSOL

আইনজীবী শেখর কুণ্ডুর অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য কমিশনের নির্দেশে প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকার নার্সিংহোম বিল নেমে এল প্রায় দেড় লক্ষে

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য / সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : ।সাড়ে সাত লাখ টাকার বিল এক ধাক্কায় নেমে এল দেড় লাখে। তবে স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ না জানালে এমন আশ্চর্য ঘটনা হয়তো ঘটতো না। কারণ অসাধু স্বাস্থ্য ব্যবসায়ী নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রোগীকে ছাড়ার সময় পুরো টাকা মিটিয়ে দিতে বাধ্য করেছিলেন। তবে শেষমেষ সমস্ত দিক তদন্ত করে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা রোগীর পরিবারকে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং সেই নির্দেশ মাথা পেতে নিয়েছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।  আসানসোলের জনপ্রিয় আইনজীবী শেখর কুন্ডু জানান তার বোন স্মৃতিকণা বর্ধন স্বাসকষ্ট নিয়ে গত ১১ মে তে কলকাতার গিরিশ পার্কে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন। ভর্তি হবার দিন থেকেই দিন প্রতিদিন ৭৫ থেকে ৬৫  হাজার টাকা করে জমা দিতে বলা হচ্ছিল। সে সময় অন্য কিছু চিন্তা করার অবসর ছিল না শেখর বাবুদের। তবে তাদের সন্দেহ হচ্ছিল সামান্য শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি রোগীর জন্য এত টাকা ব্যয় হচ্ছে কোন খাতে। শেষ পর্যন্ত ৯ দিনের জন্য ৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকার বিল ধরানো হয় শেখর বাবুদের হাতে।

কিন্তু সেই সময়ই তারা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কাছে বলেন স্মৃতিকণা দেবী ওই নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন মাত্র ৭  দিন। অথচ বিল করা হয়েছে ৯ দিনের। এই কথা শুনে দু’দিনের বিল কমিয়ে দেওয়া হয়। তখনকার মত চুপচাপ থেকে রোগীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনার পর শেখর বাবুরা রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনে সমস্ত বিষয় উল্লেখ করে অভিযোগ জানান। সেখানে তারা বলেন ওই নার্সিংহোমে প্রতিদিন যে খরচ দেখানো হয়েছে তা আদৌ হওয়ার কথা নয়। আবার যেসব পরিষেবার জন্য চার্জ ধার্য করা হয়েছে তাও যথেষ্ট অতিরিক্ত । যেমন ফিজিওথেরাপির চার্জ ধরা হয়েছে ২৮০০০ টাকা। বিশেষ অ্যান্টিবায়োটিকের চার্জ ধরা হয়েছে ৯২ হাজার ৪০০ টাকা। অস্বাভাবিক এই বিষয়গুলি উল্লেখ করে স্বাস্থ্য কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পর কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি অসীম রায় তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই তদন্ত শেষে এই আগস্ট মাসের ৫  তারিখে স্বাস্থ্য কমিশন নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে রায় দেন।

তাতে স্বাস্থ্য কমিশন উল্লেখ করেছেন সাতদিন ভর্তি থাকার জন্য দিন প্রতি কুড়ি হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নার্সিংহোম নেবে এবং অতিরিক্ত যে অর্থ নেওয়া হয়েছে সেই টাকা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ স্মৃতিকণা দেবীর পরিবারকে অবিলম্বে ফেরত দেবে। । ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন, শেখর কুন্ডুর মত একজন দুঁদে আইনজীবী এই বিষয়টিতে মনোনিবেশ করার সুযোগ পাওয়ায় রোগীর পরিবার লুটের হাত থেকে রেহাই পেলেন।কিন্তু যাদের সে সুযোগ নেই, যারা রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনে যাওয়ার মত উপায় পান না  বা পিছিয়ে আসেন তাদের এভাবেই চিকিৎসার নামে সর্বস্ব খোয়াতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *