ইস্পাত নগরী দূর্গাপুরের ঘটনায় চাঞ্চল্য, দাদা টাকা ফিরিয়ে দিতে না পারায় সুদ কারবারীদের নিত্যদিনের অত্যাচার, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী কলেজ পড়ুয়া
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দূর্গাপুর, ১০ আগষ্টঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার ইস্পাত নগরী দুর্গাপুর সুদ কারবারিদের দৌরাত্ব। দাদার নেওয়া টাকা ফিরিয়ে দিতে না পারায় অত্যাচার। মঙ্গলবার কলেজ পড়ুয়া এক যুবকের গলায় দড়ি দেওয়া ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে । মৃতের নাম রোহান দাস (২০)। সুদ কারবারীদের
অত্যাচারে এমনই ঘটনা বলে অভিযোগ মৃতের পরিবার সহ এলাকার বাসিন্দাদের।
জানা গেছে, দূর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের টেগোর এভিনিউয়ের বাসিন্দা রোহান দাস নামে ঐ যুবকের দাদা রাহুল দাস ব্যবসার জন্য লক্ষাধিক টাকা সুদ কারবারিদের কাছ থেকে ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু চড়া সুদে নেওয়া সেই টাকা মেটাতে পারেননি রাহুল । এরপর থেকে দূর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের টেগোর এভিনিউয়ের বাড়িতে থাকতেন না রাহুল দাস। সেই বাড়িতে কলেজ পড়ুয়া রোহান দাস তার বাবা গৌতম দাস ও মায়ের সঙ্গে থাকতো। অভিযোগ, সুদ কারবারিরা দীর্ঘদিন ধরে ঐ পরিবারের উপর মানসিক ভাবে অত্যাচার করছিলো। সুদ কারবারীরা নানা হুমকিও দিতো মস্তানদের রোহানের বাড়িতে পাঠিয়ে। নানা ভাবে হুমকি সহ মারধরেরও অভিযোগ উঠে সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার গৌতম দাস স্ত্রী আত্মীয়ের বাড়ি গেছিলেন। বাড়িতে রোহান একাই ছিলো। এলাকাবাসী দেখেন ঐ সুদ কারবারিরা কয়েকটি চারচাকা ও দুচাকার গাড়ি করে এসে আবার চড়াও হয় রোহানের বাড়িতে। প্রায় ২০/৩০ জন সহ সুদ কারবারি রোহানকে হেনস্থা ও মারধর করে। প্রতিবেশী প্রতিবাদ করতেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় সুদ কারবারিরা। এরপর রোহান দুর্গাপুর থানায় গিয়ে বিষয়টি জানায়। এই ঘটনার পরে দুপুর বেলায় এলাকাবাসীরা রোহানের গলায় দড়ির ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান ঘরের ভেতর। তারা পুলিশে ও তার বা ও মাকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। রোহানের মৃতদেহ পাওয়া ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ । একইসঙ্গে পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।
এলাকাবাসী ও পরিবারের দাবি, শহরের সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক পুলিশ প্রশাসন। পাশাপাশি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন এলাকার বাসিন্দারা ।মৃত কলেজ পড়ুয়ার বাবা গৌতম দাস বলেন, ঐ সুদ কারবারিরা অযথা আমাদের ওপর অত্যাচার করতো। যার সঙ্গে তারা টাকা লেনদেন করেছে তার সাথে বুঝে নিতে পারতো বিষয়টি। কিন্তু আমার রোহানকে ঐ সুদ কারবারিদের জন্য মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হলো। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছি পুলিশের কাছে ।
পুলিশ জানায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।