ASANSOLBengali News

রাজ্যের মধ্যে প্রথম পশ্চিম বর্ধমান জেলার সমস্ত পঞ্চায়েতে গ্রন্থাগার গড়ে তোলার কাজ শুরু

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। রাজ্যের মধ্যে প্রথম পশ্চিম বর্ধমান জেলা সমস্ত পঞ্চায়েতে গ্রন্থাগার গড়ে তোলার কাজ শুরু হলো। এই গ্রন্থাগার গুলিতে যেমন সাধারণ পাঠাগার এর মত বিভিন্ন ধরনের বইপত্র থাকবে তেমনি স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রয়োজনীয় রেফারেন্স বইপত্র থাকবে।  একই সঙ্গে ডিজিটাল বেশ কিছু বই রাখার ব্যবস্থাও করা থাকবে। যেহেতু বর্তমানে দীর্ঘদিন ধরেই করোনা আবহ চলছে এবং স্কুল-কলেজ বন্ধ সেক্ষেত্রে বহু ছাত্র-ছাত্রী তারা এই ধরনের পঞ্চায়েতের নিজের এলাকায় পাঠাগার গুলিতে গিয়ে বইপত্র পড়ার সুযোগ পাবে। শুধু তাই নয় আগামী দিনে এইসব পাঠাগার গুলিতে কয়েকটি করে ট্যাব রাখা হবে যা সেখানে বসেই ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন পাঠকরা।

বুধবার জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়ন দপ্তরের জেলা আধিকারিক তমোজিৎ চক্রবর্তী এই সময় কে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জানান পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ৬২ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে নতুন এই ধরনের গ্রন্থাগার তৈরীর কাজ শুরু হয়ে গেছে।  ইতিমধ্যে ৩৩ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে পাঠাগারের কাজ চলছে । আশা করা যায় খুব অল্পদিনের মধ্যেই পাঠকদের সুবিধার জন্য এগুলি খুলে দেয়া হবে। এজন্য পঞ্চায়েতগুলি অর্থ বরাদ্দ করছে । তিনি জানান উত্তর-পূর্ব ভারতে মিজোরাম ,মনিপুর এসব জায়গায় রাস্তার ধারে ধারে ছোট ছোট গুমটির মতো স্টল করে সেখানে পাঠাগার চালু আছে। আমাদের রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে এই ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। বহু ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা করোনার সময়  স্কুলে বা কলেজে যেতে না পারায় সেখান থেকে সেখানকার লাইব্রেরী বইগুলো সংগ্রহ করতে পারে নি। এই পাঠাগার গুলি চালু হলে সহজেই সেখানে বসেই তারা পড়াশোনা করতে পারবেন। শুধু স্কুল, কলেজ  বা বিশ্ববিদ্যালয় নয়  গ্রামীণ এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের জন্যও নানান ধরনের বইপত্র রাখা থাকবে। যেহেতু এখন ডিজিটাল যুগ তাই ডিজিটাল কিছু বইপত্র রাখার সুযোগ যাতে থাকে তাও আমরা পঞ্চায়েত গুলিকে বলেছি ।আমাদের ধারণা এতে পড়ুয়াদের ও ভালো সাড়া মিলবে।

তিনি বলেন শুধু স্কুল বা কলেজ নয়, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য বা  যারা চাকরির পরীক্ষার জন্য নিজেদের তৈরি করেন তাদেরও প্রয়োজনীয় বইপত্র এইসব পাঠাগারে থাকবে। এখান থেকে তারা উপকৃত হবেন। শুধু গ্রাম পঞ্চায়েত নয় প্রাথমিকভাবে আমরা চারটি পঞ্চায়েত সমিতিতে এই ধরনের পাঠাগার তৈরীর কথা ভেবেছি এবং তারকাজ শুরু করা হয়েছে। এই জেলায় লাইব্রেরিয়ান এর অভাবে  কয়েকটি সরকারি লাইব্রেরি ইতিমধ্যে বন্ধ পড়ে আছে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে লাইব্রেরিয়ান নেওয়া হবে কিনা ? এই প্রশ্নের উত্তরে তমজিত বাবু বলেন এখানে কোন আলাদা লাইব্রেরিয়ান রাখার দরকার নেই ।পঞ্চায়েতের কর্মীরা এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবেন। 

অবসরপ্রাপ্ত উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষক অর্ধেন্দু রায় বলেন করোনাকালে স্কুল- কলেজ বন্ধ ।পড়ুয়াদের এই বইয়ের অভাব অনেক টাই এখান থেকে মিটবে। শুধু তাই নয় গ্রামীণ এলাকাগুলোতে ইতিপূর্বে সব জায়গায় লাইব্রেরী ছিল না। সেক্ষেত্রে গ্রামের মানুষের ছাপা বই পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়বে। পাশাপাশি ডিজিটাল গ্রন্থ এ যুগের ছেলে মেয়েদের অনেকের উপকার হবে।

 কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী বলেন এটা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি ভাবনা। বিশেষ করে যে সময়ে এই পাঠাগার গুলি চালু করার কথা ভাবা হয়েছে সেই সময়টি ও খুব গুরুত্বপূর্ণ ।এতে গ্রামীণ এলাকার ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ অবশ্যই উপকৃত হবেন। আমাদের সাধারন পাঠাগারগুলিতে দেখা যায় মানুষের  পড়ার আগ্রহ তুলনামূলক কমলেও গ্রামীণ এলাকায় পঞ্চায়েত স্তরে এই ধরনের পাঠাগারে আমজনতার পড়ার আগ্রহ যথেষ্ট বাড়বে বলে মনে হয়। সেই সুযোগ এখন তাদের ঘরের দুয়ারে আসছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *