BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJANBengali News

বাড়ির বাগানে গাছ থেকে বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য, মিললো সুইসাইড নোট, মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে

কাজল মিত্র ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৩ সেপ্টেম্বরঃ বাড়ির বাগানের লিচু গাছ থেকে গলায় ওড়নার ফাঁস দেওয়া এক গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হলো। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে আসানসোলের সালানপুর থানার রূপনারায়নপুরের ( Rupnarayanpur ) পিঠাইকেয়ারির পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন নেতাজী কলোনির ১ নং এলাকায়। মৃত বধূর নাম দূর্বা ওরফে মামন চট্টোপাধ্যায় (৩৬)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বছর ১৭ আগে আসানসোলের হিরাপুর থানার হিরাপুর ঠাকুরবাড়ি এলাকার বাসিন্দা দূর্বা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে রুপনারায়নপুরের সঞ্জয় ওরফে বাবলু চট্টোপাধ্যায়ের বিয়ে হয়েছিলো। তাদের ১৬ বছরের একটি ছেলেও আছে।

গৃহবধূর এই মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। বধুর বাপের বাড়ির লোকজনেরা এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে মেনে নিতে একেবারেই রাজি নন। তারা রূপনারায়নপুর ফাঁড়িতে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়ে প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে বার করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। পুলিশ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু বা ইউডির মামলা করেছে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে বধূর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয় ।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৬ টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় দেখেন বাড়ির বাগানের ছোট লিচু গাছ থেকে তার স্ত্রী দূর্বা চট্টোপাধ্যায় গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে। তার চিৎকারে বাড়ির লোক ও আশপাশের লোকেরা দৌড়ে আসেন। রুপনারায়নপুর ফাঁড়িতে খবর দেওয়া হলে পুলিশ আসে। পুলিশ দেখতে পায় মৃত দুর্বা দেবীর হাতের শিরা ব্লেড দিয়ে কাটা আছে। তার দুটি পা মাটিতে ছুুঁয়ে আছে। পরে, ঘরের ভেতর থেকে লাল কালিতে লেখা একটি সুইসাইড নোটও পুলিশ উদ্ধার করেছে।


সেই নোটে লেখা আছে, “আমি…. মামন, আমার সবকিছু ছিলো। আমি সেইসব হেলায় হারালাম। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়”।
এদিকে খবর পেয়ে বধূর বাপের বাড়ি বার্ণপুরের হিরাপুর ঠাকুরবাড়ি এলাকা থেকে তার বাবা কৃষ্ণদাস বন্দোপাধ্যায় সহ আত্মীয় পরিজনেরা রুপনারায়নপুর পুলিশ ফাঁড়িতে ছুটে আসেন। কৃষ্ণদাসবাবুর অভিযোগ, সুইসাইড নোটের হাতের লেখা আমার মেয়ের নয়। মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারেনা। মেয়ে গত বৃহস্পতিবার আমার কাছে গেছিলো। একদিন বাপের বাড়ি থেকে শনিবার শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসে। মুখে কিছু না বললেও, আমার মনে হয়েছিলো, মেয়ের কিছু একটা হয়েছে। শ্বশুর বাড়িতে কোন কিছু হয়েছিলো কিনা তা আমার জানা নেই। কারণ মেয়েকে এইসব ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলেও, সে কিছু বলতো না। তিনি মেয়ের এই মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন। তবে আমাকে পুলিশ বলেছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে তা যা করার করবে। আমিও সেই রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।


যদিও মৃতার স্বামী সঞ্জয়বাবু বলেন , আমি এই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমাদের ১৬ বছরের এক ছেলে আছে। আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে বাগানে এসে দেখি স্ত্রী গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে ঝুলছে। জানা গেছে, সম্প্রতি মৃত বধুর স্বামী পিঠাইকেয়ারি জলট্যাঙ্ক সংলগ্ন এলাকায় একটি ছোট হোটেল করেছিলেন। অনেক আগে তার একটি মারুতি ভ্যান ছিলো তিনি সেটি বিক্রি করে পরে একটি ছোট গাড়ি কিনেছিলেন। তারপর এই হোটেল। পরিবারে আর্থিক সংকট ছিল বলে জানা গেছে। তাছাড়াও এই পরিবারের এক প্রতিবেশী গেঞ্জি কলের মালিক লক্ষাধিক টাকা তাদের নামে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। সেই ব্যাংকের লোন শোধ করতে হচ্ছিল সঞ্জয়বাবুদেরকে।
পুলিশ জানায়, সবকিছু খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মৃতার বাবার অভিযোগও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পেলে গৃহবধূর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবেনা।

Asansol আবার ধস, রাস্তায় ফাটল, ক্ষতিগ্রস্থ ৬০টিরও বেশী বাড়ি, আতঙ্ক, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকে ঘিরে বিক্ষোভ, “গো ব্যাক ” স্লোগান শাসক দলের কর্মীদের

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *