সাসপেন্ড করা হলো কেজি হাসপাতালের নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট সহ দুজনকে, অবহেলা ও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে
বেঙ্গল মিরর,দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৪ সেপ্টেম্বরঃ চিত্তরঞ্জনের মেধাবী ইঞ্জিনিয়ার ২৩ বছরের স্নেহা সাহা চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কেজি হাসপাতালের বিরুদ্ধে যে চিকিৎসায় অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিলো তার প্রমাণ মিলেছে বলে জানা গেছে। তদন্ত করার পরে চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের নার্সিং সুপারিনটেনডেন্ট বিষ্ণু কে ভি ও অন্য আরো এক নার্সকে সাসপেন্ড করল। সোমবার রাতে এই মর্মে একটি আদেশ জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এদিন থেকেই এই নির্দেশ কার্যকরী হল। রেল কর্তৃপক্ষের এই আদেশে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সাসপেন্ড হওয়ার কর্মীরা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনভাবেই চিত্তরঞ্জনের বাইরে যেতে পারবেন না।
তবে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে স্নেহার মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ একেবারেই প্রাথমিক বলে মনে করা হচ্ছে। সম্ভবত আরও বড় কোন পদক্ষেপ রেল কর্তৃপক্ষ নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ স্নেহার মৃত্যুর ঘটনাকে রেল কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত গম্ভীর ও গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। সেইজন্যই সোমবার চিত্তরঞ্জন রেল প্রশাসনের ৪ উচ্চপদস্থ আধিকারিক স্নেহার বাবা কারখানায় ২৬ নম্বর শপের এসএসই তপন সাহা চৌধুরীর সঙ্গে তার বাড়িতে গিয়ে কথা বলে আসেন। এদিকে আবার মঙ্গলবার কারখানার জেনারেল ম্যানেজার সতীশ কুমার কাশ্যপ স্নেহার বাবা ও মায়ের সঙ্গে নিজে কথা বলবেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠার পরে সোমবার হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে জেনারেল ম্যানেজার একান্তে কথা বলেছিলেন। স্নেহার মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করে সোমবার রেলকর্মীরা কালো ব্যাজ পরে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার একই দাবিতে লেবার ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ প্রতিবাদ করা হয় বলে জানা গেছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর স্নেহার মৃত্যুর পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে সমগ্র চিত্তরঞ্জন । বিশেষ করে ঘটনার দিন রাতে স্নেহা যখন যন্ত্রণায় ছটফট করছিলো হাসপাতালের বেডে শুয়ে, তখন তার মা অসহায়ের মতো ছোটাছুটি করছিলেন চিকিৎসককে ডাকার জন্য। কিন্তু তার কথায় কেউ কর্ণপাত করেন নি। এই বিষয়টি প্রচন্ড রকম ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে। সেই সময় চুক্তিভিত্তিক এক নার্স স্নেহার মায়ের সঙ্গে অমানবিক ব্যবহার করেছিলেন বলে তিনি অভিযোগ তুলেছেন।
দিল্লি থেকে এই হাসপাতালে আসা ঐ নার্স প্রায় আড়াই বছর ধরে এখানে কর্মরত আছেন বলে জানানো হয়েছে। তবে শুধু নার্স বা নার্সিং সুপারিনটেনডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না বলে কর্মীরা মনে করছেন। তারা চাইছেন, হাসপাতালের গয়ংগচ্ছ ভাব দূর করে রোগীর সেবায় এই হাসপাতাল যেন আবার উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে সেই পদক্ষেপ এখান থেকেই গ্রহণ করতে হবে। তা না করা হলে, কর্মীরা আরো বৃহত্তর আন্দোলন করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।