যারা নিজের এলাকায় যেতে পারেন না তাদের নিজে থেকেই সরে যাওয়া উচিত : বিধান
বেঙ্গল মিরর, কাজল মিত্র:-শুক্রবার সকালে বারাবনি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে জামগ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্দোগে একটি দলীয় কর্মীসভা ও সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয় । এই দলীয় কর্মিসভায় উপস্থিত পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা বারাবনি বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়, জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চ্যাটার্জি, আইএনটিটিইউসি যুব নেতা অভিজিৎ ঘটক সকলে স্বর্গীয় মানিক উপাধ্যায় ও পাপু উপাধ্যায় এর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে প্রদীপ উজ্বলনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ।অনুষ্ঠানের শুরুতেই আদিবাসী নৃত্যের মধ্যদিয়ে আদিবাদীদের সাংস্কৃতিক নৃত্য তুলে ধরে এবং সকল অতিথি দের একে একে সংবর্ধনা করা হয় ।
এদিন এই কর্মী সভায় আইএনটিটি ইউসি যুব সভাপতি অভিজিৎ ঘটক বলেন যে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তিনবারের মুখমন্ত্রী হয়েছেন ঠিক তেমনি বারাবনির লড়াকু নেতা বিধান উপাধ্যায় ও এবারে তিনবারের বিধায়ক আপনারা যেভাবে তার পাশে থেকে তাকে পুনরায় বিধায়ক বানিয়েছেন তাতে আপনাদে দলের প্রতি যে নিষ্ঠা রয়েছে তা প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে তবে এই দলের মধ্যেই এমন কিছু গদ্দার রয়েছও যাদের কে চিহ্নিত করে তুলে ছুড়ে ফেলতে হবে ।তিনি বলেন বারাবনির মাটি তৃণমূলের ঘাঁটি তাই আপনাদের বিধায়ক আপনাদের ঘরের ছেলের মত ।
তিনি যেভাবে আপনাদের পাশে থাকে মানুষের কাজ করে যান ঠিক আপনাদের সকলের উচিত তার পাশে থাকা ।আমাদের দলের কোন গ্রূপ বা গোষ্ঠী চলবেনা যদি থাকে তা মিটিয়ে নিন ।কারন আগামী দিনে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কে ২০২৪ এ বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেখতে চাই ।
তিনি বলেন আগামী দিনে এই পশ্চিম বর্ধমান জেলায় তৃণমূলের বর্তমান জেলা সভাপতি, চেয়ারম্যান সহ নতুন কমিটির নেতৃত্বরা শুধু ব্লকে ব্লকে নয়,গ্রামপঞ্চায়েতে, ওয়ার্ডে এবং এমনকি বুথেও মানুষের কাছে পৌছবে।সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগ শুনবে।যেদিন সেই বুথের মানুষ বলবেন আমরা শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল কে চাই অন্য কোন দল নয়।সেই দিন কিন্তু আমরা প্রকৃত পুরস্কার মানুষের কাছ থেকে পাবো।
জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় বলেন গত বিধানসভা নির্বাচনে আমি অল্প কিছু ভোটে হেরেছি তবে
যারা দলের সাথে বেইমানি করেছিল তাদের অনেককে আজ আমি দেখছি।অন্যান্য ব্লকে বা আসানসোলও ঐ গদ্দারদের দেখেছি।এইসব বেইমানদের চিহ্নিত করা উচিত।এদিন সিপিএম এবং বিজেপির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন সিপিএমের আমল থেকেই কিভাবে আসানসোল শিল্পাঞ্চল জুড়ে একের পর এক কারখানা আন্দোলনের নামে বন্ধ হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেন বিজেপির সরকার একের পর এক শিল্প থেকে কয়লা, মাটি,পাথর,জীবন বীমা,রেল সবই বিক্রি করে দিচ্ছে।আগামী ২৪শের লোকসভা মমতা বন্দ্যো পাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী করতে এখন থেকেই তৃণমূল কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বুথে বুথে পৌঁছে মানুষকে বোঝানোর কথা বলেন।
পশ্চিমবর্ধমান জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায় বক্তব্য দিতে গিয়ে জানান যে জেলা পরিষদের সদস্য,পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি,সদস্য বা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন যারা মানুষের সাথে নেই, নিজের বুথে বা নিজের এলাকায় যেতে পারেন না তাদের নিজে থেকেই সরে যাওয়া উচিত।দল তাদের টিকিট দেবে না।একই সঙ্গে তিনি বলেন আমি অনুরোধ করছি আগামী কাল থেকে আপনারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যান।অন্তত এক ঘণ্টা করে সময় দিন।গত একু শের নির্বাচনে আমি এটা হারে হারে নিজের বিধান সভায় টের পেয়েছিলাম বলেই কারোর উপর নির্ভর না করে আমি বুথে বুথে মানুষের কাছে পৌঁছেছি। তিনি পরিষ্কার করে বলেন আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরোটাই মানুষের ভোটের মাধ্যমে জিততে হবে।সেই জন্য এখনো সময় আছে,কাজ করুন।তিনি বলেন কর্ম বা কাজ মানে লুট করা নয়।
এই সভার বিভিন্ন পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বিধান উপাধ্যায় সহ উজ্জ্বল চ্যাটার্জি ও অভিজিৎ ঘটক কে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।এদিন এই সংবর্ধনা সভায় উপস্থিত ছিলেন মহিলা তৃণমূলের নেত্রী মিনতি হাজরা, বারাবনি ব্লক সভাপতি অসিত সিংহ, হিন্দি প্রকোস্ট এর শিনটু ভূঁইয়া, জেলার কর্মাধ্যক্ষ পূজা মাণ্ডি,পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মালা বাউড়ি, সহ অনেকে । এদিন এই অনুষ্ঠানের বিশেষ ভাবে পরিচালনা করেন জামগ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কেশব রাউৎ ও পানুড়িয়া পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বজিৎ সিংহ ।