ইসিএলের মুগমা এরিয়ার ঘটনা, নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে গুলির লড়াই, তামার কেবল কাটতে খনির ভেতর ঢুকে পড়লো দূষ্কৃতিদের দল বোমায় আহত ১
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য/রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১ নভেম্বরঃ লোডশেডিং হয়ে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে তামার কেবল চুরি করতে দুষ্কৃতিদের হানা দিলো একবারে খনির ভেতর। চুরিতে বাধা পেয়ে খনির ভেতর ঢুকে নিরাপত্তা রক্ষীদের লক্ষ্য করে রীতিমতো বোমা ও গুলি চালায় ২০/২৫ জনের দুষ্কৃতিদের দল। প্রানে বাঁচতে ও আত্মরক্ষায় নিরাপত্তা রক্ষীরাও গুলি চালায়। সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ রাউন্ডের মতো গুলি চলে বলে জানা গেছে। খনির ভেতরে দুষ্কৃতিদের ঢুকে পড়ার ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাত ১১ টা নাগাদ। সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার শেষ খবর খনির ভেতরেই রয়েছে দূষ্কৃতিরা। সোমবার দুপুরে খনি এলাকায় পৌঁছান ধানবাদ জেলার পুলিশ সুপার ( গ্রামীণ) রেশমা রমেসাম। খনির উপরে ঘিরে রেখেছে ধানবাদ জেলা ( গ্রামীণ) পুলিশ ও সিআইএসএফ বাহিনী। পুলিশের তরফে খনির ভেতরে ঢুকে পড়া দূষ্কৃতিদের বাইরে এসে আত্মসমর্পণ করার জন্য ধানবাদ জেলা পুলিশের তরফে খনি মুখে মাইকিং করা হচ্ছে। ইসিএলের মুগমা এরিয়ার কুমারডুবির ভাগ্যলক্ষী ইনক্লাইনে এই ঘটনাটি ঘটেছে । ইসিএলের নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে ছোঁড়া বোমায় খনির নিরাপত্তা অফিসার অবোধ বিহারী মাহতোর দুটি আঙুল নষ্ট হয়ে যায়। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, রবিবার এগারোটা নাগাদ আচমকাই বিদ্যুৎ চলে যায় ইসিএলের মুগমা এরিয়ার ভাগ্যলক্ষী ইনক্লাইন এলাকায়। সেই সময় জনা তিনেক নিরাপত্তা রক্ষী সেখানে পাহারায় ছিলেন। তখনই আচমকাই সেই খনির ভেতরে ঢুকে পড়ে ২০/২৫ জনের একটি সশস্ত্র দূষ্কৃতি দল। তাদের হাতে বন্দুক ও গুলি ছিলো। নিরাপত্তা রক্ষীরা বুঝতে পারেন যে, দূষ্কৃতিরা খনির ভেতরে তামার কেবল চুরি করতে ঢুকেছে। সঙ্গে সঙ্গে তারা দূষ্কৃতিদের বাধা দেম। সেই বাধা পেয়ে দূষ্কৃতিরা নিরাপত্তা রক্ষীদের লক্ষ্য করে পর পর বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ও বোমা ছোঁড়ে। দূষ্কৃতিরা এলাকা থেকে নিরাপত্তা রক্ষীদের চলে যেতে হুমকি দেন। খনিতে দূষ্কৃতি হানার খবর পেয়ে রাত বারোটা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সিআইএসএফ বাহিনী ও ধানবাদ জেলা পুলিশের দল। রাত ১টার পরে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির লড়াই শুরু হয়। দূষ্কৃতিদের পুলিশের তরফে বারবার সতর্ক করা হয় তারা যেন আত্মসমর্পণ করে। নইলে তাদের গুলি করা হবে। কিন্তু আত্মসমর্পন করেনি দুস্কৃতিরা। ২০/ ২৫ জনের দুস্কৃতি দল আত্মসমর্পণ না করায় বাইরে থেকে খনি ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও সিআইএসএফ জওয়ানরা। একই সঙ্গে, দূষ্কৃতিরা উপরে উঠে না এলে কিভাবে খনির ভেতরে যাওয়া যায় , তা নিয়ে খনির ম্যানেজার সহ অন্য অফিসারদের সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকরা আলোচনা করছেেন বলে জানা গেছে।
রাতের এই ঘটনা নিয়ে রামজি যাদব ( কোলিয়ারির নিরাপত্তা রক্ষী) বলেন, রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ আচমকাই বিদ্যুৎ চলে যায়। সেই সময় ২০/২৫ জনের দূষ্কৃতি দল খনির ভেতরে ঢুকে পড়ে। আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা ছোঁড়ে। সেই বোমায় এক নিরাপত্তা রক্ষীর হাতের আঙুল নষ্ট হয়েছে। তার দাবি, কম নিরাপত্তা রক্ষী থাকায় এই ঘটনা এই এরিয়ায় বিভিন্ন খনিতে ঘটছে।
সোমবার বিকেলে ঘটনাস্থলে রেশমা রমেসাম(পুলিশ সুপার ধানবাদ, গ্রামীণ) বলেন, দূষ্কৃতিরা চুরি করতে খনির ভেতরে ঢুকে পড়ে। তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। তারা এখনো বাইরে বেরিয়ে আসেনি। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, ইসিএলের ডিরেক্টর টেকনিক্যাল বি ভিরা রেড্ডি সোমবার এই ঘটনা নিয়ে বলেন, ঐ এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার সহ অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। তাদেরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
বারাবনির নুনি মোড় কালি পুজো এবার নবম বর্ষের, ৩০ ফুট প্রতিমার সঙ্গে থাকছে আকর্ষণীয় প্যান্ডেল