বরাকর ও রানিগঞ্জে কয়েক লক্ষ টাকার নিষিদ্ধ বাজি আটক, গ্রেফতার ৪, পুলিশের বিরুদ্ধে বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ, রাস্তা অবরোধ, বিক্ষোভ
বেঙ্গল মিরর,রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ৩ নভেম্বরঃ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তা সত্বেও আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বাজারে বাজারে দেদার বিকোচ্ছে পটকা বাজি। কালি পুজোর আগের দিন বুধবার রানিগঞ্জ ও কুলটি থানার বরাকরে দু’জায়গায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার নিষিদ্ধ বাজি আটক করে। দুই জায়গা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ।
কুলটি থানার বরাকরে এদিন অবশ্য নিষিদ্ধ বাজি আটক করতে অভিযানের সময়ে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির বিধায়ক ডাঃ অজয় পোদ্দারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে বরাকর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের বিরুদ্ধে। এরপর বিধায়কের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে বরাকরের দু জায়গায় আধঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। রাস্তায় দলের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে বসে পড়েন বিধায়ক । খবর পেয়ে উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসাররা এলাকায় এসে পরিস্থিতি সামাল দেন।
জানা গেছে, বুধবার সকালে বরাকরে বেগুনিয়া মোড়ের কাছে একটি দোকানে বাজি বিক্রি হচ্ছিলো বলে পুলিশের কাছে খবর যায়। তারমধ্যে বিপুল পরিমাণ শব্দবাজিও ছিল। খবর পেয়ে বরাকর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি শীতল নাগের নেতৃত্বে সেখানে অভিযান চালানো হয় । দোকান থেকে বিপুল পরিমাণ বাজি উদ্ধার হয়। সেই সময় কাছেই নিজের চেম্বারে ছিলেন কুলটির বিজেপি বিধায়ক ডাঃ অজয় পোদ্দার। খবর পেয়ে তিনিও সেখানে যান।
অজয়বাবু বলেন, আমি খবর পেয়ে সেখানে যাই। আমি পরিচয় দিই বিধায়ক হিসাবে। কিন্তু তারপরেও আমার সঙ্গে ঠিকঠাক ব্যবহার করেননি ঐ পুলিশ অফিসার। অজয়বাবু বলেন, এই ফলের দোকান থেকে ছট পুজো, দুর্গা পুজো, কালীপুজোর সময় প্রতি বছরেই কিছু বাজি বিক্রি হয়। এদিন পুলিশ এসে বলছে গ্রীন বাজির কথা। যা কি আমিও তা জানিনা। আমি সেই জন্য ঐ পুলিশ অফিসারকে বললাম এই নিয়ে মাইকিং করা উচিত। পুলিশ বাজি আটক করেছে। যে দোকান থেকে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে, সেখানে কাউকেও পুলিশ ধরতে পারে। কিন্তু আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর বিজেপির কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে বিধায়ক নিজেই বরাকরের বেগুনিয়া মোড় ও বরাকর পুলিশ ফাঁড়ি রোডে অবরোধ করে বসে পড়েন। যদিও এদিন এটা করা উচিত নয় জেনেও আমি এটা করেছি বলে বিধায়ক বলেন।
খবর পেয়ে কুলটি থানার আইসিকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় আসেন আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এসিপি (পশ্চিম) ওমর আলী মোল্লা। এসিপি বিধায়ককে আশ্বাস দিয়ে বলেন, এই ধরনের ব্যবহার নিয়ে যদি অভিযোগ থাকে তাহলে নিশ্চয়ই তা দেখা হবে। এরপর বিধায়ক অবরোধ তুলে নেন।
অন্যদিকে পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে, বরাকরের ঐ দোকান ছাড়াও বরাকরের আরো একটি দোকান থেকেও প্রচুর পরিমাণ নিষিদ্ধ বাজি এদিন উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজার দর কয়েক লক্ষ টাকা। মোট তিনজনকে দুটি দোকান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়াও এদিন দুপুরে রানিগঞ্জ থানার রামবাগান এলাকায় একটি দোকান থেকে প্রায় ১ লক্ষ টাকা বিভিন্ন নিষিদ্ধ বাজি আটক করেন পাঞ্জাবীমোড় পুলিশ ফাঁড়ির আইসি সৌমেন বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ । মহেশ বার্ণওয়াল নামে একজনকে ঐ দোকান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিন আসানসোল মহকুমার আসানসোল বাজার সহ অন্য এলাকায় তেমনভাবে বাজি বিক্রি চোখে পড়েনি। বিক্রি হতে দেখা যায় সাধারণ ফুলঝুরি, রং রং মসলা ও ছোট পটকা। আসানসোলের বাজি বিক্রির সব বড় দোকান সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। আলাদা করে ভেতর থেকে তারা কোন কিছু বিক্রি করছিলেন কিনা তা বাইরে বোঝা যায়নি। তবে এই এলাকার এক দোকানদার বিকাশ বার্ণওয়াল বলেন, আমরা এখনো জানি না গ্রীন বাজি কি। সেইজন্য এইবার আর আমরা বাজি বিক্রি করছি না।
বিজয়া সম্মেলন পালন করল আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ওয়েস্ট জোন