রানীগঞ্জের রাজারবাধ পুকুর সঠিকভাবে সংস্কার না করায় ব্যাপক দূর্ভোগ
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জি, রানীগঞ্জ : দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ভাইফোঁটা উৎসব অনুষ্ঠানের পরে হিন্দুদের জাগ্রত দেবতা সূর্যদেবের পুজোয় ব্রতী হওয়ার উদ্দেশ্যে ছট পুজো তে মেতে উঠেছেন হিন্দু ধর্ম প্রাণ মানুষেরা। কিন্তু খনি শহর রানীগঞ্জে পুকুর, জলাশয় সঠিকভাবে সংস্কার না করায় ব্যাপক দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ছট ব্রতিদের। এবছরও এমনই বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে রানীগঞ্জের রাজারবাধ এলাকায়। টানা এক দশক সময়কাল জুড়ে রানীগঞ্জের সুপ্রসিদ্ধ, ঐতিহ্যবাহী, রাজার বাধ জলাশয় আবর্জনা, নর্দমার জল ও কচুরিপানায় ভর্তি হয়ে যাওয়ায় বেহাল অবস্থায় রয়েছে জলাশয়টি, নানান আইনি জটিলতায় জলাশয়টিতে মাছ চাষ থেকে শুরু করে ব্যবহার্য জল নেওয়া ও সৌন্দর্যায়নের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। এর ফলে ধীরে ধীরে ওই জলাশয় মজে গিয়ে বর্তমানে প্রায় 42 একর জায়গা জুড়ে থাকা ওই জলাশয়টি চারণ ক্ষেত্রর মত এলাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে চারণ ক্ষেত্র হলেও কোনো কাজের কাজ হতো, বলেই দাবি করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। না চারণ ক্ষেত্র হয়ে ওঠেনি সেই জলাশয়টি, জলাশয় টির ওপরের ভাগে জলা জঙ্গল কচুরিপানা ভর্তি হয়ে পচা দুর্গন্ধযুক্ত জল জমে উঠেছে সমগ্র জলাশয় জুড়ে। এলাকার বিভিন্ন অংশের নর্দমার জল ওই এলাকায় জমতে থাকায় রানীগঞ্জের সবথেকে প্রাচীন, সুপ্রসিদ্ধ রাজারবাধ জলাশয় আজ অবলুপ্তির পথে। পূর্বে এই জলাশয়ে ছট পুজোয় ব্রতীদের ব্যাপক সংখ্যায় আসার বিষয় লক্ষ্য করে, 2009 সালে রানীগঞ্জের এক সমাজসেবী চিকিৎসা জগতে সুনাম অর্জনকারী দেব কুমার সরাফ, ওই জলাশয় এর পাশেই এক সূর্য মন্দির গড়ে তুলেছিলেন, কিন্তু তার কয়েক বছরের মাথায় রাজনৈতিক পালাবদল এরপরই ওই জলাশয়ে মাছ চাষ থেকে শুরু করে সমগ্র ব্যবহার ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যেতে শুরু করে।
আর এরপরই নতুনভাবে জলাশয় সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখায়, জলাশয়টি আজ কচুরিপানায় মোজে গিয়েছে। পৌরসভার এক্ততার ভুক্ত ওই জলাশয়টি সৌন্দর্যায়নের জন্য ইতিমধ্যেই ব্যাপক অর্থ ব্যয় করাও, হয়েছে কিন্তু সে সকল অর্থ ব্যয় আজ বিশবাঁও জলে পড়েছে বলেই মনে করছেন সেখানে স্থানীয় সদস্যরা। এলাকাবাসীদের দাবি প্রতিবছর প্রায় 5 থেকে 7 হাজার ছট ব্রতী এই জলাশয়টিতে ছট পুজো করে আসতেন কিন্তু দীর্ঘ এক দশক ধরে জলাশয় সংস্কার না হওয়ায় আজ চরম বিপাকে পড়েছেন ঐসকল এলাকার হাজারো হিন্দু ধর্মপ্রাণ মানুষ। সকলের একটাই দাবি এ বছর না হয় নাই হলো, আগের বছর যেন ছট ঘাট সংস্কারের কাজ করেন প্রশাসন। আর এই জলাশয় সংস্কার হলে এখানে কয়েকশো পরিবারের কর্মসংস্থান সম্ভব বলেই দাবি এলাকার বাসিন্দাদের, মৎস্যজীবীদের। যদিও এ বিষয়ে পৌর প্রশাসক এর কোন মন্তব্যই উঠে আসেনি কিভাবে এই জলাশয় জঞ্জালমুক্ত হয়ে আবার পুনর্ব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠবে তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা