ASANSOL

আসানসোল পুরনিগম সরকারি জমিতে জবরদখল উচ্ছেদ করলো, বেআইনি কাজ বরদাস্ত করা হবে না, সাফ জানালেন পুর প্রশাসক

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ১৫ নভেম্বরঃ শহরের রাস্তাঘাট পরিষ্কার রাখতে বেআইনী জবরদখল সরাতে তৎপর হলো আসানসোল পুরনিগম। সোমবার সকালে পুলিশের উপস্থিতিতে আসানসোলে বেআইনি দখলের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে দেওয়া হয় সরকারি খাস জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা একাধিক দোকান ও গুমটি। পুরনিগম কোন রকম নোটিশ ছাড়াই এই উচ্ছেদ করেছে বলে দোকানীরা অভিযোগ জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সরকারি জমিতে জবরদখল উচ্ছেদ


পুরনিগমের এদিনের অভিযানকে কেন্দ্র করে দেখা দেয় চাঞ্চল্য। আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সাফ জবাব, বেআইনী জবরদখল করে গাড়ি চলাচল ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতে কোন সমস্যা করা চলবে না। আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি অবশ্য এর পেছনে রাজনৈতিক যড়যন্ত্র আছে বলে মনে করেন। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।


সোমবার সকালে আসানসোলের কল্যানপুর হাউজিংয়ের ডাঃ বিসি রায় মূর্তি সংলগ্ন রোড এলাকায় রাস্তায় বেআইনি দখলের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো শুরু হয়। আসানসোল পুরনিগমের কর্মী ও আসানসোল উত্তর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও বোর্ড সদস্য শ্যাম সোরেন। এরপর বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে কেএসটিপি মোড় পর্যন্ত এই অভিযানে একাধিক দোকান ও গুমটি ভেঙে দেওয়া হয়। পুরনিগমের এই অভিযানে দোকানীরা বাধা না দিলেও, তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য, পুরনিগমের তরফে এই অভিযান ও উচ্ছেদ নিয়ে কোন নোটিশ বা প্রচার করা হয় নি। তাই তারা দোকানের জিনিস সরাতে পারেননি। তাদেরকে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।


এই প্রসঙ্গে এদিন অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, গোটা পুর এলাকায় এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধ দখলদারি বরদাস্ত করা হবে না। তিনি আরো বলেন, সরকারি জমিতে কোন বেআইনী কিছু থাকলে তারজন্য কোন নোটিশ দিতে হয়না। আগাম জানানোরও দরকার নেই। তবুও পুরনিগমের তরফে এই এলাকায় প্রচার করা হয়। বলা হয়েছিলো, দোকান ছোট করে নিতে। রাস্তা পরিষ্কার রাখতে। কিন্তু, কেউ তা শোনেননি। আমরা চাই না কেউ বেকার হয়ে যাক। কিন্তু যা করতে হবে, তা আইন মেনে করতে হবে।


অন্যদিকে, পুরনিগমের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি। তিনি বলেন, পুরনিগমের এই অভিযান রাজনৈতিক কারণে করা হয়েছে। দোকানীদের বিকল্প ব্যবস্থা করে এমন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিলো। এছাড়াও ঐ এলাকা আসানসোল পুরনিগমের নয়। রাজ্য সরকারের যে দপ্তরের ঐ এলাকার জমি, তাদের তো এই অভিযান করা উচিত।


প্রসঙ্গত , আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন যে ছট পুজোর পরে পুর এলাকায় বেআইনী দখলদারীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই কুলটির বরাকর বাজার এলাকায় বেআইনী জবরদখলদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। রবিবার রাতের পরে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হলেও, তার আগেই ঐ এলাকায় দখলদারীরা নিজেরাই সব সরিয়ে নেন।
তবে, প্রশ্ন উঠছে, বরাকর ও কল্যানপুর এলাকায় এই কাজ করা হলেও, আসানসোল বাজারের ক্ষেত্রে আসানসোল পুরনিগম কতৃপক্ষ কবে পদক্ষেপ নেবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *