আসানসোল ও বাঁকুড়ায় বেআইনী অত্যাধুনিক টেলিফোন এক্সচেঞ্জের হদিশ, ধৃত ২, রাজ্য এসটিএফ ও পুলিশের যৌথ অভিযান
আন্তর্জাতিক চক্রের যোগসাজশ কিনা, খতিয়ে দেখতে তদন্ত
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল ও বাঁকুড়া, ১৮ নভেম্বরঃ আসানসোলে ভুয়ো বা বেআইনী টেলিফোন এক্সচেঞ্জের হদিশ পেলো রাজ্যের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এসটিএফ। আসানসোল উত্তর থানার কেএসটিপি বা কল্যানপুর স্যাটেলাইট টাউনশিপের ওয়েবেল আইটি পার্কে এই এক্সচেঞ্জ চলছিলো। এর পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়ায় ওয়েবেল আইটি পার্কে এমন একটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের হদিশ পাওয়া গেছে।
বুধবার রাতে রাজ্য এসটিএফের দুটি আলাদা আলাদা দল আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ ও বাঁকুড়ায় বড়জোড়া থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে একযোগে অভিযান চালায়। এসটিএফ ও পুলিশের সঙ্গে এই অভিযানে টেলিফোন বিভাগের আধিকারিকরা ছিলেন বলে জানা গেছে ।
আসানসোল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে একজনকে। ধৃতর নাম জিশাদ এ কে। তার বাড়ি কেরালায়।
অন্যদিকে, বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়া ধৃতের নাম মহঃ রিয়াস। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বাড়ি কেরালাতেই।
ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ ভারতীয় দন্ডবিধির ১২০/বি, ৪১৯ / ৪২০ / ৪৬৫ / ৪৭১ ও ইন্ডিয়ান টেলিগ্রাফ আইনের ৪/২০/২৫ নং ও ইন্ডিয়ান ওয়ারলেস টেলিগ্রাফি আইনের ৩/৬ নং ধারায় মামলা করা হয়েছে। তবে এসটিএফ এই এক্সচেঞ্জ চালানোর মুল মাথা কেরালার বাসিন্দা আবদুল রসিদকে ধরতে পারেনি।
আসানসোলের আইটি পার্কের পাশাপাশি আসানসোল উত্তর থানার সুগম পার্ক ও আসানসোল দক্ষিণ থানার আপকার গার্ডেনের একটি আবাসনের হদিশ পুলিশ পেয়েছে। এর পাশাপাশি আসানসোল উত্তর থানার ধাদকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখা লাগোয়া একটি আবাসনের তিনতলায় একটি ঘরের হদিশ পাওয়া গেছে। সব জায়গাতেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে এই এক্সচেঞ্জের কাজ চলছিলো বলে এসটিএফের অনুমান।
ভাড়া বাড়িতে বসেই এইভাবে বেআইনী টেলিফোন এক্সচেঞ্জ চালাচ্ছিলো অপরাধীরা। এরফলে প্রতি বছর দেশের প্রায় কোটি টাকা লোকসান হচ্ছিল। এসটিএফের ধারণা, দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ চলছে। যদিও ধৃতরা জানায়, তারা মাস তিনেক এখানে কাজ করছে
একটি গোপন সূত্র থেকে খবর পাওয়ার পরে রাজ্য এসটিএফের দল বুধবার রাতে টেলিফোন বিভাগের আধিকারিক ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে আসানসোল ও বড়জোড়ায় অভিযান চালান। হদিশ মেলে অত্যাধুনিক টেলিফোন এক্সচেঞ্জের।
আসানসোলে গ্রেফতার হওয়া জিশাদকে বৃহস্পতিবার ১৪ দিনের রিমান্ডে চেয়ে আসানসোল আদালতে তোলা হয়। বিচারক তার জামিন নাকচ করে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন। একইভাবে বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হলে ধৃতকে পাঁচদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার পুলিশ জানায় ধৃতর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অত্যাধুনিক মেশিনের সাহায্য আন্তর্জাতিক কলকে লোকাল কলে বদল করা হতো। এরফল সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্বের ক্ষতি হতো। পুলিশের দাবি, এর পেছনে আব্দুল রসিদ একা নয়, আরো অনেকেই আছে। তাদের পেছনে আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধীরাও থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের।
এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
আসানসোলে এসবিএসটিসি বাস টার্মিনাস লাগোয়া বেআইনি হোটেল ভাঙ্গলো পুরনিগম