ঘটনার পরে ১০ বছর পার, পুনর্বাসন প্রকল্পে বাড়ির চাবি ও চেক পেলেন আসানসোলের জামুড়িয়ার ধস কবলিত ১৫৫টি পরিবার
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ২৭ নভেম্বরঃ প্রায় ১০ বছর পরে আসানসোলের জামুড়িয়ার ছাতিমডাঙ্গায় খনি ধসে বা কেউ কেউ ঘর হারানো, কেউবা পরিবার হারানো মানুষেরা এবার স্থায়ীভাবে মাথার গোঁজার জায়গা পেলেন। শনিবার এমনই ১৬০ টি পরিবারের হাতে ঘরের চাবি ,মালিকানার কাগজ ও দশ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। এই উপলক্ষে এদিন আসানসোলের জেলাশাসকের কার্যালয়ে আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার কনফারেন্স হলে এক অনুষ্ঠান হয়। সেখানে রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটক, আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় সহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন ।
১০ বছর আগে এই এলাকার ধস কবলিত মানুষেরা ইসিএলের এক পরিত্যক্ত হাসপাতাল ও সংলগ্ন এলাকায় আশ্রয় পেয়েছিলেন। ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রানিগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে এসে ঐ এলাকার বাসিন্দা রাকেশ নুনিয়া সহ পাঁচজনকে নতুন বাড়ির চাবি তুলে দিয়েছিলেন।
এদিন ঐ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাকি ১৫৫ পরিবারকে জামুরিয়ার বিজয়নগরে নবনির্মিত আবাসনের মালিকানার চাবি, কাগজ ও দশ হাজার টাকার চেক তুলে দিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক, বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়,, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুভদ্রা বাউরি , জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ ,পুলিশ কমিশনার সুধীর কুমার নীলকান্তম সহ অন্যান্যরা।
এদিন চাবি ও বাড়ির মালিকানার কাগজ হাতে পেয়ে এলাকার বাসিন্দারা বলেন, এতদিন পরে মাথার উপর ছাদ পেয়ে, এবার হয়তো একটু সুখের মুখ দেখবো। এরজন্য মুখ্যমন্ত্রী সহ সবার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।
মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে পুনর্বাসন প্রকল্পে পাঁচজনকে চাবি দিয়েছিলেন। এদিন তাদেরকে কাগজ ও টাকা দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে আরও ১৫৫ জনকে বাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সবসময় অসহায় মানুষদের পাশে আছেন। মলয়বাবু অভিযোগ করে বলেন, যেখানেই পুনর্বাসনের জন্য আবাসন তৈরি করতে যাওয়া হচ্ছে সেই জমির নিচে কয়লা আছে বলে ইসিএল দাবি করে সেই কাজ করতে দিচ্ছেন না।
আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জামুরিয়া, বারাবনি অন্ডালে পুনর্বাসন প্রকল্পে আবাস গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তারমধ্যে প্রায় হাজার চারেক আবাসন আমরা প্রস্তুত করছি । আরো বেশ কিছু আবাসন অসম্পূর্ণ অবস্থায় আছে। কিন্তু ইসিএল বা কয়লা মন্ত্রক এখন পর্যন্ত আমাদের ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে। এরমধ্যে ২৫০ কোটি টাকা দিয়ে আমরা দক্ষিণখন্ড সহ একাধিক জায়গায় জমি কিনে আবাসন করছি। ইসিএল প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। রাজ্য স্তরের সচিব তাদের চিঠি দিলেও ঐ টাকা তারা দিচ্ছে না। এর ফলে এই প্রকল্পে কাজ আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি না ।অথচ এলাকায় একের পর এক খনিতে ধস হচ্ছে ও আগুন লাগছে। খনি এলাকায় মানুষ বিপদে পড়ছেন।