বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানায় উত্তেজনা, বিদ্যাসাগর থেকে দুই সাইবার অপরাধীকে আনা নিয়ে দুই রাজ্যের পুলিশের মধ্যে বাদানুবাদ
দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১ ডিসেম্বরঃ সাইবার অপরাধের সঙ্গে যুক্ত দুই অপরাধীকে বাংলায় নিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে বাংলা ও ঝাড়খন্ড পুলিশের মধ্যে বচসা থেকে বাদানুবাদ হলো। মঙ্গলবার রাতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ও চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার রুপনারায়নপুর ও মিহিজামের হিল রোড এলাকায়। শেষ পর্যন্ত বুধবার সকালে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া আদালতে মনোজিৎ কুমার মন্ডল ও রিজুয়ান মিয়া নামে ঐ দুই অপরাধীকে তোলা হয়। বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে দুদিনের ট্রানজিট রিমান্ডের নির্দেশ দেন। তারপর বাংলার উত্তর ২৪ পরগণা জেলার সুন্দরবন থানার পুলিশ এদিন দুপুরে জামতাড়া আদালত থেকে দুজনকে নিয়ে রওনা দেয়।
তবে, নিয়ম বা আইন মতো কেন আদালতের নির্দেশে ট্রানজিট রিমান্ডে না নিয়ে দুই অভিযুক্তকে রাতারাতি নিয়ে আসছিলো, তা অবশ্য সুন্দরবন থানার পুলিশ দেয় নি।
জানা গেছে, সাইবার অপরাধের একটি অভিযোগের তদন্তে সূত্র পাওয়ার পরে মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ডের বিদ্যাসাগর বা কার্মাটারের ছাতাটাঁড় গ্রামে সুন্দরবন থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে মনোজিৎ কুমার মন্ডল ও রিজুয়ান মিয়াকে ধরে। তাদের সঙ্গে বিদ্যাসাগর থানার দুই কনস্টেবল ছিলেন। একটি গাড়িতে দুজনকে নিয়ে সুন্দরগড় থানার পুলিশ আসছিলো। সেই গাড়ির পেছনে মোটরসাইকেলে ছিলো বিদ্যাসাগর থানার পুলিশ। কিছুটা রাস্তা আসার পরে মোটরসাইকেলে থাকা দুই কনস্টেবল লক্ষ্য করেন ঐ গাড়িটি মিহিজামের রাস্তা ধরেছে। কিন্তু তা হওয়ার কথা নয়। সঙ্গে সঙ্গে তারা ফোনে উচ্চ মহলের আধিকারিকদের জানানা।
এরপর কার্মাটার থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ সঞ্জয় কুমার মিহিজাম থানার পুলিশকে গাড়িটিকে আটকাতে বলেন। ঝাড়খণ্ড থেকে মিহিজাম থানা এলাকা হয়ে বাংলায় আসার মোট পাঁচটি রাস্তা আছে। কার্মাটার পুলিশের কথা মতো মিহিজাম থানার পুলিশ সেই পাঁচটি রাস্তাতেই নাকা চেকিং শুরু করে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানায় হিল রোডে মিহিজাম থানার পুলিশ ঐ গাড়িটিকে আটকায়। এরপরই শুরু হয় দুই রাজ্যের দুই থানার পুলিশের মধ্যে বাদানুবাদ ও চাপান উতর। অনেক রাত পর্যন্ত তা চলে। শেষ পর্যন্ত ঝাড়খন্ড পুলিশ দুই অভিযুক্তকে আদালতের নির্দেশ ছাড়া বাংলায় ঢুকতে দেয়নি।
ঝাড়খণ্ড পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, কোন বেআইনি কাজ করা হয়নি। সব কিছু আইন মোতাবেক করা হয়েছে। বুধবার আদালতের নির্দেশ মতো বাংলার পুলিশ দুজনকে দুদিনের ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে গেছে।