BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এর ছাত্র দের স্কুলে ফেরাতে, টেস্ট পরীক্ষায় বসা ও ফর্ম ভরাট করার আহ্বান জানাতে টোটো এবং মাইক হাতে দুয়ারে পৌঁছে গেলেন বারাবনির শিক্ষকরা

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ছাত্র বারাবনির দোমোহানি কেলেজোড়া হাই স্কুল( বয়েজ) এ আসছে না। সেজন্য তাদের স্কুলমুখী করতে এবং টেস্ট পরীক্ষায় বসার জন্য ও কবে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ফর্ম ভরতে হবে সেই আবেদন নিয়ে প্রধান শিক্ষক এবং অন্যান্য শিক্ষকরা তিনজন একসাথে গ্রামে গ্রামে মাইক নিয়ে টোটো তে করে দুয়ারে গিয়ে প্রচার করলেন শুক্রবারও।

ওই বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মৃণাল জ্যোতি গঙ্গোপাধ্যায় এবং আরো দুই শিক্ষক অসিত বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেবাশীষ সাধু একটি টোটো নিয়ে আদিবাসী অধ্যুষিত তারাডাঙ্গা থেকে শুরু করে বিনোদপুর,চরণপুর সহ অন্তত পাঁচটি গ্রামে মাইকে করে বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে ছাত্রদের স্কুলে যাওয়া কত জরুরি তার ব্যাখ্যা দেন বৃহস্পতিবার। শুক্রবারও তারা দোমহনী এবং কেলেজোড়া সংলগ্ন এলাকার একাধিক গ্রামে একইভাবে প্রচার চালান ।

অসিত বাবু বলেন আমাদের নবম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ৫০০র মতো ছাত্র থাকলেও ৩৫থেকে ৪০শতাংশ ছাত্ররা মাত্র হাজিরা দিছে। সেজন্যেই আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে ছাত্রদের অভিভাবকদের এবং ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বোঝানোর চেষ্টা করছি গত ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুল খুলেছে। তারা যেন স্কুলে আসে ।একই সঙ্গে আমরা বলছি আগামী ১৩ ই ডিসেম্বর থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের যে টেস্ট পরীক্ষা তা অবশ্যই দিতে হবে। টেস্ট পরীক্ষায় না বসলে কিন্তু ওই দুই বড় পরীক্ষায় বসা যাবে না এবং এই দুই পরীক্ষাতে ফর্ম ভর্তি করার জন্য ২১ ডিসেম্বর থেকে ২৪ শে ডিসেম্বর স্কুলে আসতে হবে  ছাত্রদের। ৬ ই ডিসেম্বর থেকে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র দের জন্য মিড-ডে-মিল দেয়া হবে , তাও প্রচার করা হয়।

শুধু তাই নয় একই সঙ্গে তারা তাদের এই সব কর্মসূচি সহ বেশ কিছু পোস্টার গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ ডাকঘর বা বিভিন্ন জায়গায় দেওয়ালে দেওয়ালে লাগিয়ে দিচ্ছেন।  কেন ছাত্ররা আসছে না গ্রামের পর গ্রাম গত দুদিন ধরে খোঁজ করতে গিয়ে শিক্ষকরা জানতে পারেন অনেকেই এখন নানান কাজে কর্মের সাথে যুক্ত। কোনও কোনও অভিভাবকরা করোনার ভয়ে স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না-।এমন বেশকিছু অভিভাবকের সাথে  আলাদা করে ঘরে  গিয়ে কথা বলেন তারা।

অসিত বাবু বলেন দুয়ারে শিক্ষক পৌঁছে গিয়ে ছাত্রদের ও  অভিভাবকদের বোঝাচ্ছেন স্কুলে যাওয়া কতটা জরুরী। দীর্ঘদিন পর স্কুল খুলেছে তাই সবাই স্কুলে আসুন। এইসব গ্রামের এক ছাত্র সুবল হেমরম এবং শেখ ইয়াসমিন নামে এক অভিভাবক দুজনেই বলে আমরা মাইকে আওয়াজ শুনে ভেবেছি কোথাও কোনো অনুষ্ঠান সরকারিভাবে হয়ত হবে তার ঘোষণা হচ্ছে। কিন্তু এখানে এসে যখন দেখলাম স্কুলের ছাত্রদের স্কুল মুখী করতে যখন শিক্ষকরাই বাড়িতে এসে গেছেন তখন সত্যিই খুব আনন্দ হচ্ছিল। সোমবার থেকে ওরা স্কুলে যাবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *