West Burdwan : জোন ভিত্তিক এলাকা চিহ্নিত করলো স্বাস্থ্য দপ্তর, চারদিনে আক্রান্ত প্রায় ৭৫০, মৃত ২
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ২ জানুয়ারিঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলায় গত চারদিনে ৭৪৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন নতুন করে। তার মধ্যে শনিবার মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। রবিবার নতুন করে কোন মৃত্যু হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে কি করা দরকার তা আজ সোমবার পর্যালোচনা বৈঠকে বসতে চলেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। আসানসোলে জেলাশাসকের কার্যালয়ে হওয়া এই বৈঠকে জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ, আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার এন সুধীর কুমার নীলকান্তম, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস সহ প্রশাসনের সমস্ত আধিকারিকদের উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, ইতিমধ্যেই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে গত এক সপ্তাহের করোনা আক্রান্তর পরিসংখ্যানের বিচার করে জেলার দুই মহকুমা আসানসোল ও দূর্গাপুরের দুই পুর এলাকা ও ৮ টি ব্লক ভিত্তিক জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। তা জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে জেলাশাসকের কাছে রবিবার পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, জেলার ৮ টি ব্লকের মধ্যে ৫ টি ব্লকের ৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েত করোনা আক্রান্তের বিচারে ” ভানরালেবেল ” বা ” সংবেদনশীল ” এলাকা। তার মধ্যে কাঁকসা ব্লকে রয়েছে দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত। এছাড়া অন্ডাল, পান্ডবেশ্বর, দূর্গাপুর-ফরিদপুর ও সালানপুরের ১ টি করে গ্রাম পঞ্চায়েত। এছাড়াও আসানসোল পুরনিগমের ৫ টি ওয়ার্ড ও দূর্গাপুরের ৩ টি ওয়ার্ডকে ” হাই কেস লোড ” এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি আসানসোল পুরনিগমের ১৮ টি ওয়ার্ড ও দূর্গাপুর পুরনিগমের ৫ টি ওয়ার্ডকে ” ভানরালেবেল ” এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে এদিন জেলার সিএমওএইচ বলেন, স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে করোনা আক্রান্ত হওয়ার একটা পরিসংখ্যান বিচার করে এলাকা চিহ্নিত করে তার তালিকা জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। তা দেখে যা পদক্ষেপ নেওয়া তা এবার জেলা প্রশাসন করবে। অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের এদিন অতিরিক্ত জেলাশাসক ডাঃ অভিজিৎ শেভালে বলেন, আমরা তালিকা পেয়েছি। তা নিয়ে সোমবার একটি বৈঠক করে সবকিছু পর্যালোচনা করা হবে। তারপর রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যেই সরকারের তরফে পর্যটন কেন্দ্র সব করার নির্দেশ দিয়েছে। এই জেলায় মাইথনের মতো কিছু পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে সেই সব জায়গায় কেউ না যায়, তার দিকে নজরদারি করতে পুলিশকে বলা হয়েছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিন মতো গত ২৯ ডিসেম্বর জেলায় করোনা আক্রান্তর সংখ্যা ছিলো ৪৭ জন। পজিটিভিটির হার ছিলো ৮.৮ শতাংশ। শনিবার আক্রান্তর সংখ্যা বেড়ে হয় ২৪১ জন। পজিটিভিটির হার বেড়ে হয় ১১ শতাংশ। রবিবার আক্রান্তর সংখ্যা সামান্য বেড়ে হয় ২৫৭ জন। পজিটিভিটির হার প্রায় একই আছে। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯,৭৮০ জন। জেলায় এ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা এই মুহুর্তে ৭৪৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৬৮ জনের। জেলার রবিবার বিকেল পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে ৩৩, ৩০, ৩৫৯ জনকে। তারমধ্যে প্রথম ডোজের সংখ্যা ১৯, ৯৪, ৫৬১। দ্বিতীয় ডোজের সংখ্যা ১৩, ৫৫, ৭৯৮।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও জেলা প্রশাসনের দাবি, আক্রান্তর সংখ্যা বাড়লেও, চিন্তাজনক পরিস্থিতি এখনো হয়নি। তবুও আগে থেকে সবকিছু করে নেওয়া হচ্ছে।