তৃণমূল নেতাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বয়ে জামুড়িয়া থানা পুলিশের শাসানির অভিযোগ, সিপিএম প্রার্থীর হয়ে প্রচার ‘না’ করার, জাতীয় মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ জেলা কমিটির সদস্যর সদস্য
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১০ জানুয়ারিঃ করোনা আবহের মধ্যে পুরভোটের প্রচারে নানা ঘটনায় বারবার শীরোনামে আসানসোল। কোন ওয়ার্ডে বিরোধী দলের পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কখনও আবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ উপেক্ষা করে করোনা বিধি না মেনে ভোট প্রচারের অভিযোগ। আবার দেখা গেছে প্রার্থী যাচ্ছিলেন বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দিতে মনোনয়ন কেন্দ্রে। কিন্তু হঠাৎই মন পরিবর্তন হওয়ায় দলবদলে চলে গেলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। কিন্তু এবার পুরভোটে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতাকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ অফিসারের শাসানি দেওয়ার অভিযোগ উঠলো জামুরিয়ার এক সিপিএম নেতার বাড়িতে এসে। মনোজ দত্ত নামে জামুড়িয়ার ঐ সিপিএম নেতা জেলা কমিটির সদস্য। এই ঘটনার কথা জানিয়ে মনোজ দত্তর স্ত্রী মমতা দত্ত অভিযোগ দায়ের করেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের কাছে। এর পর এই ঘটনা নিয়ে পুর এলাকায় রাজনৈতিক চাপান উতর শুরু হয়েছে।
আরো অভিযোগ, জামুড়িয়ার মন্ডলপুরের সিপিএমের নেতা ও কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে আসছে আসানসোলের জামুড়িয়া থানার পুলিশ। মমতা দত্তর মতো পুলিশের এই শাসানির কথা জানিয়ে ও নিরাপত্তা চেয়ে জাতীয় মহিলা কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন মন্ডলপুরের দুই সিপিএমের নেতার স্ত্রী। জামুড়িয়ার আখলপুরের বাসিন্দা সিপিএম নেতা মনোজ দত্তর স্ত্রী মমতা দত্ত জাতীয় মহিলা কমিশনে অভিযোগ করে বলেছেন, আসানসোলের পুরভোটে সিপিএমের প্রার্থীর হয়ে প্রচার না করার জন্য বাড়ি বয়ে এসে পুলিশ হুমকি দিয়েছে।
সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকেরা এতদিন এই কাজ করে আসতো। আসানসোলের পুরভোটে এখন পুলিশ সেটা সরাসরি করছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের পাশাপাশি এই নিয়ে আসানসোল দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার, পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক, রাজ্য নির্বাচন কমিশন, রাজ্য মহিলা কমিশনেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে মনোজ দত্ত নামে সিপিএম নেতা বলেন, ৮ জানুয়ারি দুপুরে আমি বাড়িতে ছিলাম না। সেই সময় জামুড়িয়া থানার এক এসআই শিবশঙ্কর দাস, একজন সিভিক পুলিশ ও শাসক দলের এক নেতা পলাশ দাসকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে আসে। কোনও অনুমতি ছাড়া তারা, আমার বাড়িতে ঢোকেন। আমার খোঁজ করেন। তারপর আমার স্ত্রীকে বলেন মনোজ দত্তকে সাবধানে থাকতে বলবেন। আপনি নিজেও সাবধানে থাকবেন। রীতিমত হুমকির সুরে এই কথা বলা হয় এইরকম একটা পরিস্থিতিতে শাসক দল ভোট করতো চাইছে।
৯ জানুয়ারি এই ঘটনা নিয়ে জামুড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্বাভাবিক ভাবেই এইসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেস। জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং বলেন , শুধুমাত্র প্রচারের আলোয় আসতে সিপিএম এইসব মিথ্যা অভিযোগ করছে। এই এলাকায় তাদের আর কোনও অস্তিত্বই নেই।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ এসিপি (সেন্ট্রাল) তথাগত পান্ডে বলেন, এই অভিযোগ ঠিক নয় । পুলিশ হয়তো গেছে এটা ঠিক কথা। তবে হুমকি দিতে নয়। হয়ত কোন কিছু জানার প্রয়োজন ছিলো। সেই কারণে গেছে। তবে হুমকি দেওয়া হয়নি।